দরদাম: কোচবিহারে আনাজ কেনাকাটা। শুক্রবার। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
কেউ দোষ দিচ্ছেন বৃষ্টিকে। কারও অভিযোগ, আমদানি কম। একাংশের নালিশ, মাঝখানে থাকা ব্যবসায়ীরা বেশি লাভ রাখছেন। কারণ যাই হোক না কেন, জলপাইগুড়ির আনাজের বাজার মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে যেতে বসেছে। দিনের পার্থক্যে তো বটেই, ঘণ্টার ব্যবধানেও দাম বাড়ছে।
বৃহস্পতিবারেও কাঁচা লঙ্কা ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। শুক্রবার জলপাইগুড়ি স্টেশন বাজারে লঙ্কার দর কেজিতে ছিল ১০০ টাকা। ধনেপাতার কেজি বিকিয়েছে ৬০ টাকায়। দশ টাকা দিলে দু’আঁটি ধনেপাতা যে বাজারে তিনদিন আগেও মিলেছে, সেই বাজারে এ দিন দশ টাকায় মাত্র চারটে লিকলিকে ধনেপাতার ডাল হাতে দেওয়া হয়েছে ক্রেতার। পটল থেকে বাঁধাকপি— সব আনাজেরই দাম শুধু বেড়েছে। বিক্রেতারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, আজ এবং আগামীকাল দাম আরও বাড়বে।
লক্ষ্মীপুজোর আগে আনাজের দাম বাড়ার প্রবণতা প্রতি বছরের। নানা কারণে দশমী থেকে ছটপুজো পর্যন্ত মাছ-মাংসের চাহিদা তুলনামূলক কমে যায়। পক্ষান্তরে আনাজের চাহিদা বেড়ে যায় অনেকটাই। লক্ষ্মীপুজোয় ঘরে ঘরে ভোগ রান্না হয়, সব বাড়িতেই আনাজের চাহিদা বাড়ে। সেই সুযোগে একশ্রেণির মধ্যবর্তী কারবারিরা দাম বাড়িয়ে নেয় বলে দাবি অনেকের। ব্যবসায়ীদের অবশ্য দাবি, জলপাইগুড়ির বাজারে মূলত দু’ভাবে আনাজ আসে। বেশিরভাগ আনাজ আসে ভিন রাজ্য থেকে। বাকি অংশ হলদিবাড়ি-সহ আশেপাশের গ্রাম থেকে। যে ভাবেই আনাজ আসুক না কেন, মহাজনের হাত ঘুরে আসে। মহাজনের থেকে সরাসরি খুচরো বিক্রেতার হাতে আনাজ যায় না। তার মাঝে থাকে পাইকার এবং দালাল-ফড়েরা। চাহিদা তুঙ্গে থাকলে হাতবদলের প্রতিভাগেই চরচর করে দাম বাড়তে থাকে। ক্রেতাদের একাংশের অভিযোগ, সুযোগ বুঝে দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়।
যদিও তেমনটা মানতে চাননি আড়তদার পঙ্কজ শাহ। তাঁর যুক্তি, “বৃষ্টির কারণে দাম বাড়ছে। দশমীর দিন সকালে তুমুল বৃষ্টি হল, আজ সকালেও বৃষ্টি হল। প্রচুর ফুলকপি নষ্ট হয়ে গেল। তারজন্য দাম তো বাড়বেই।” জলপাইগুড়ির বাজারে এ দিন ফুলকপি ৮০ টাকা, মুলো ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। একটি ছোট লাউয়ের জন্য ন্যূনতম ৩০ টাকা দিতে হয়েছে ক্রেতাকে। একদিনে পটল কেজি প্রতি ২০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৬০ টাকা। পালং শাক বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজি দরে। বেগুনের দর শুক্রবার দুপুরে ছিল ৬০ টাকা, বিকেলে খোঁজ নিয়ে দেখা গেল ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শহরের স্টেশন বাজারের আনাজ ব্যবসায়ী অপু দাস বলেন, “সব আনাজেরই আমদানি কম। যার জেরে আমাদেরও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এই দামের পিছনে আমাদের কোনও হাত নেই। উল্টে বৃষ্টির জন্য আমাদের ঘরে থাকা মালও বাঁচিয়ে রাখতে হচ্ছে। তার জন্যও খরচ বাড়ছে।”
আনাজেরে দাম বাড়া রুখতে বছরকয়েক আগে জেলায় জেলায় টাস্ক ফোর্স গঠন করেছিল রাজ্য সরকার। তবে সেই ফোর্সের অস্তিত্ব টের পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। সরকারি অফিসও সব বন্ধ। প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, “আমাদের কাছে কোনও নির্দেশ আসেনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy