Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Pregnant Women

অন্তঃসত্ত্বা, ডাক্তার দেখাতে টপকে গেলাম বাধা

আমি জটিয়াখালির এক সাধারণ গৃহবধূ। কাজের জন্যই বেরিয়েছিলাম। আর বেরিয়ে যথেষ্ট শিক্ষা পেলাম। কেউ বলছে, যানজট।

রণক্ষেত্র: ব্যারিকেড ভেঙে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। পুলিশ এলে, ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান অনেকই। চলে পুলিশি টহলদারি। ছবি: স্বরূপ সরকার

রণক্ষেত্র: ব্যারিকেড ভেঙে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। পুলিশ এলে, ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান অনেকই। চলে পুলিশি টহলদারি। ছবি: স্বরূপ সরকার

রিনা পরভিন
শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:৫৯
Share: Save:

একটি রাজনৈতিক দলের আন্দোলন। আর তা আটকাতে পুলিশ এবং প্রশাসনের তৎপরতা। কিন্তু এর মাঝে পড়ে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার ধারের প্রান্তিক মানুষ কী ভাবে সারাটা দিন কাটাবে, কী ভাবে তাদের জরুরি প্রয়োজন মেটাবে, সেটা কি কেউ ভেবেছিলেন? কেউ? তা হলে হয়তো আমার মতো ছ’মাসের অন্তঃসত্ত্বাকে পাঁচ ফুটের ডিভাইডার এবং ব্যারিকেড টপকে যাতায়াত করতে হত না। দেওয়াল টপকে চিকিৎসকের কাছে পরীক্ষা করিয়েও হাঁটতে হত না কয়েক কিলোমিটার।

আমি জটিয়াখালির এক সাধারণ গৃহবধূ। কাজের জন্যই বেরিয়েছিলাম। আর বেরিয়ে যথেষ্ট শিক্ষা পেলাম। কেউ বলছে, যানজট। কেউ বলছে পথ অবরোধ। কিন্তু কিছুটা এগিয়ে বুঝতে পারলাম, একটা যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি। প্রচুর সাঁজোয়া গাড়ি আর বন্দুক নিয়ে কারও একটা অপেক্ষায় সেনার মতো দেখতে পোশাকে পুলিশ। ভয় পাইনি। কারণ, আমার গর্ভের সন্তানের সুস্থতার জন্য চিকিৎসকের পরীক্ষা খুব জরুরি ছিল। কারণ এ দিনই মেডিক্যালে চেক আপের দিন পড়েছিল। তাই, হবু মা হয়ে রাস্তায় বেরিয়ে কোনও অন্যায় করিনি। বাড়ি ফিরে যাওয়ার বিকল্প উপায়ও দেখিনি। টোটো, অটো সব বন্ধ। হঠাৎ, কোনও বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই একটা জরুরি অবস্থার মতো পরিস্থিতি। রাস্তায় সেনা নামতে কখনও দেখিনি ঠিকই, কিন্তু দেখে ঠিক বুঝতে পারছিলাম না বিষয়টি তাই কি না। পরে হেঁটে আর ব্যারিকেড টপকে শারীরিক কষ্ট চরমে উঠল। তখন অনুভব করলাম, সরকার বা বিরোধী, সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার জরুরি রাস্তা রেখে কিছু করে না। জানলাম, সাধারণ মানুষ, রোগীদের এ রকম চরম কষ্টে ফেলে আন্দোলন আর তার মোকাবিলার দীর্ঘ খণ্ডযুদ্ধ কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে!

এলাকার সাধারণ মানুষকে অন্তত একটু আগে থেকে প্রচার বা ঘোষণা করে কি জানানো যেত না, সোমবার এশিয়ান হাইওয়ের একটি বড় অংশই বন্ধ রাখা হবে? এটা প্রশাসন যখন করছে, তাদের কি কোনও দায় নেই মানুষের প্রতি? এলাকায় কেউ কোনও ঘোষণা শুনেছে বলে আমি অন্তত শুনিনি। কেন ওই অংশের রোগী বা আমার মতো অসহায় অবস্থায় পড়া মানুষদের সাহায্যের জন্য কোনও বিকল্প ব্যবস্থা থাকল না? এই দাবিটা কি খুব অন্যায়ের? এই ধকলে আমার গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হলে কে দায় নেবেন? সরকার না বিরোধীরা?

(ফুলবাড়ির জটিয়াখালির গৃহবধূ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pregnant Women Police Barricade Doctor Treatment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy