প্রশাসনের তরফ থেকে বিবেচনার আশ্বাস পেয়ে অনশন তুলে নিলেন আলিপুরদুয়ারের আলুচাষিরা। ঋণ মকুব ও মৃত আলু চাষির পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া সহ ১২ দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে জেলাশাসকের দফতরের সামনে অনশন শুরু করেন আলুচাষিরা। এদিন রাতে সুব্রত সরকার নামে এক আলু চাষি অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। প্রশাসনের আশ্বাসে শুক্রবার সন্ধ্যে ছ’টা নাগাদ আন্দোলন প্রত্যাহার করেন অনশনরত কৃষকরা। আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত জেলা শাসক দেবীপ্রসাদ করনম বলেন,‘‘অনশনরত আলুচাষিদের কাছ থেকে তাদের দাবিপত্র নেওয়া হয়। এই দাবিপত্র সংশ্লিষ্ট জায়গায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে।”
আলিপুরদুয়ার আলু চাষি সংগ্রাম কমিটির সম্পাদক খোকন রায় বলেন, “ প্রশাসনের এক ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট আমাদের সঙ্গে এসে কথা বলেন। পরে আমরা আমাদের দাবি পত্র তুলে দিয়েছি। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে জানানোর আশ্বাস দিয়েছেন প্রশাসনিক কর্তারা। বিকেল ছ’টা নাগাদ আমারা অনশন তুলে নিয়েছি। এদিন দুপুরে সুজিত সরকার বলে আরো এক অনশনকারী অসুস্থ হন। তাঁকে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’’
শুক্রবার দুপুরে আলুচাষিদের অনশন মঞ্চে যান আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়। তিনি বলেন, “ উড়িষ্যা ও অসম এবছর আলুচাষ করায় এরাজ্যের কৃষকরা ওই সব রাজ্যে আলু রফতানি করতে পারেননি। তাছাড়া ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত উত্তরপ্রদেশ ও রাজস্থানে চাষিদের জন্য সরকার সাহায্যের ব্যবস্থা করেছে। এরাজ্যেও কৃষকদের ঋণ মকুব করা উচিত। ঋণ মকুবের বিষয়টি ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রী অরুণ জেটলিকে জানিয়েছি। ফের রাজ্য সরকারকেও জানাব।’’
এদিন বামপন্থী কৃষক সংগঠনের তরফেও আলু সমস্যা নিয়ে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। ভারতের কৃষক সভার জেলা নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী যোগেশ বর্মন বলেন, “কৃষকরা আলুর দাম পাচ্ছেনা। সরকার কৃষকদের ভর্তুকি দিক। ঋণ মকুবের ব্যবস্থা করা হক। ৮০০ টাকা সহায়ক মূল্যে আলু কিনুক।”
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবছর আলিপুরদুয়ার জেলায় প্রায় ১৫ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। উৎপাদন ভালো হওয়ায় সারা জেলায় প্রায় ৪ লক্ষ ৫০ হাজার মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়েছে। আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটা ব্লকে পাঁচটি ও আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকে তিনটি হিমঘর রয়েছে। এই আটটি হিমঘরে আলু রাখার ক্ষমতা মাত্র ৯৬ হাজার মেট্রিকটন। একদিকে বাজারে আলুর দাম মেলেনি, অন্য দিকে হিমঘর গুলিতেও পর্যাপ্ত যায়গা না থাকায় সমস্যায় পড়েন চাষিরা। ক্ষতির মুখে পড়ে গত ২৬ মার্চ যশোডাঙা এলাকায় সনাতন বিশ্বাস (২৬) নামে এক আলু চাষি আত্মহত্যা করেন বলে পরিবারের দাবি। রাজ্য সরকারের তরফে সাড়ে পাঁচ টাকা কেজি দরে সহায়ক মুল্য আলু কেনা শুরু হলেও অনেক চাষি দাবি করেন, উৎপাদনের ক্ষেত্রে তাদের কেজি প্রতি প্রায় ছ’টাকার উপর খরচ হয়েছে। তাই সহায়ক মূল্যে আলু বিক্রি করলে তাদের ক্ষতির মুখ দেখতে হবে।
কাঠ উদ্ধার। কাঠ চেরাই এর গোপন ডেরায় হানা দিয়ে প্রায় এক লক্ষ টাকার অবৈধ সেগুন কাঠ উদ্ধার করল বন দফতর। শুক্রবার ভোরে মালবাজার লাগোয়া ডামডিমের খাগড়াবস্তি থেকে ওই কাঠ উদ্ধার করা হয়। বৈকুন্ঠপুর ডিভিশনের তারঘেরা রেঞ্জ এবং কালিম্পঙ বননিগমের নেওড়া রেঞ্জের কর্মী আধিকারিকরা যৌথভাবে এই অভিযান চালায়। পাচারে যুক্তরা পালিয়ে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy