করলার জলে এভাবেই মিশছে আবর্জনা। ছবি: সন্দীপ পাল।
শীতের করলায় জল বাড়ন্ত। কিন্তু দূষণে কমতি নেই। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রকাশিত পর পর তিন মাসের রিপোর্টে, করলা নদীতে দূষণের মাত্রা বেশি রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। রাজ্যের দূষিত নদীর তালিকায় করলা দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে। করলার দূষণের মাত্রা নিয়ে নিয়মিত রিপোর্ট প্রকাশ করে পর্ষদ। চলতি বছরের শুরু এবং মাঝের দিকে নদীর জলের ‘স্বাস্থ্য’ ভাল থাকলেও, গত তিন মাসের রিপোর্টে করলার জলে অক্সিজেনের মাত্রা অনেকটাই কম পাওয়া গিয়েছে, মিলেছে বিষাক্ত রাসায়নিক এবং বর্জ্যও। গত নভেম্বরের পরীক্ষায় করলার জলে ‘টোটাল কলিফর্ম’ ব্যাক্টিরিয়া স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে পাওয়া গিয়েছে। নদীর জলে ওই ব্যাক্টিরিয়া বেশি মেলার অর্থ, জল বেশি দূষিত। তা ছাড়া, জলে অক্সিজেনের চাহিদাও বেশি।
অক্টোবরে দুর্গাপুজোর বিসর্জনের পরে, কালীপুজোর বিসর্জন এবং ছটপুজো সবই হয়েছে করলার জলে। এ বছর নদীর জলের দূষণ ঠেকাতে পরিবেশ আদালতের নির্দেশে বহু সামগ্রী জলে ফেলতে দেওয়া হয়নি। তার পরেও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের রিপোর্টে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। জলপাইগুড়ি শহরকে দু’ভাগে ভাগ করেছে করলা। ২০১১ সালে করলা নদীতে বিষ-কাণ্ডে রাশি রাশি মৃত মাছ ভেসে উঠেছিল। তার পরেই করলা রাজ্যের দূষিত নদীর তালিকায় ঢুকে পড়ে। সে দূষণের হাত থেকে নদীকে রক্ষা করতে সময় লেগেছিল বেশ কয়েক বছর। এ বছর পর পর তিন মাসে নদীর জলে অস্বাভাবিক রকমের দূষণ মেলায় ফের নদী নিয়ে তৈরি হয়েছে আশঙ্কা। এ ব্যাপারে জলপাইগুড়ি পুরসভার পুরপ্রধান পাপিয়া পাল বলেন, “করলা নদীতে আবর্জনা ফেলতে দেওয়া হয় না। নদী পরিষ্কারও করা হয়। বিষয়টি দেখা হবে।”
শহরের বিভিন্ন নর্দমা করলা নদীতে পড়েছে। সম্প্রতি নর্দমাগুলির মুখে ছাঁকনি বসানো হয়েছে, যাতে দূষিত কিছু নদীর জলে না পড়ে। তার পরেও নদীর জলে দূষণ ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না কেন? করলা নদীতে একাধিক সমীক্ষা চালিয়েছে পরিবেশ নিয়ে কাজ করা
একটি সংগঠন। ওই সংগঠনের অন্যতম মুখপাত্র রাজা রাউত বলেন, “দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পর পর তিন মাসের যে রিপোর্ট দেখলাম, তাতে অস্বাভাবিক দূষণ রয়েছে। সেটা জলের মতো পরিষ্কার হলেও করলার জল যে পরিষ্কার নয়, তা প্রমাণ করছে। নদীর প্রবাহ, অর্থাৎ, জলের বহমানতা ফেরাতে না পারলে দূষণ কমবে না। এত বড় নদীতে কোথায় কী পড়ছে তা নিয়ন্ত্রণ করা সহজ নয়। নদীর নাব্যতা বাড়াতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy