তৃণমূল কোণঠাসা। এ বারে কার দখলে থাকবে সিতাই, তা নিয়েই আদি ও নব্য বিজেপির গণ্ডগোলে মাঝে মধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে কোচবিহারের ওই প্রান্তিক গ্রাম। বৃহস্পতিবার রাতে সিতাইয়ের আদি বিজেপি বলে পরিচিত প্রশান্ত বর্মণকে আটক করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে ‘নব্য বিজেপির’ সভাতেই হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ রয়েছে। তা নিয়ে শুক্রবার সকাল থেকে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে সিতাইয়ে। জেলা বিজেপি নেতৃত্বের তরফ থেকে অবশ্য কেউই প্রশান্তের পক্ষে দাঁড়ায়নি। উল্টে বিজেপির তরফেই জানানো হয়েছে, প্রশান্ত সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়ার আত্মীয়। পিছন থেকে প্রশান্তকে উস্কাচ্ছেন জগদীশই। যা মানতে নারাজ প্রশান্তের অনুগামীরা। তাঁদের দাবি, তৃণমূলের থেকে সদ্য দলে যোগ দেওয়া লোকজনই রয়েছেন গণ্ডগোলের পিছনে।
দলীয় সূত্রের খবর, বিজেপিতে প্রভাব বাড়ছে কোচবিহার জেলার সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকের। নিশীথ একসময় জেলায় যুব তৃণমূলের দাপুটে নেতা ছিলেন। পরে দল তাঁকে বহিষ্কার করলে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপি তাঁর উপরে ‘ভরসা’ রেখেই কোচবিহারে লোকসভা আসনে প্রার্থী করে। সেই ‘ভরসা’ পূরণ করেই কোচবিহার কেন্দ্রে জয়ী হন নিশীথ। এবং তাঁর জয়ের পরেই আদি ও নব্য বিজেপি’র কোন্দল নিয়ে অভিযোগ উঠতে শুরু করে। নিশীথের সঙ্গে অনেকেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেয়। ভোটের ফল প্রকাশের পরে সেই ধারা অব্যাহত। আদি বিজেপিরা তা নিয়ে দু-একবার আওয়াজ তুললেও কোনও গুরুত্ব দেননি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এমনকি, জেলা নেতাদের স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে, দলে যোগদান না করালে দল বড় হবে না। কার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ রয়েছে, তা পরে দেখা হবে।
সিতাইয়ের নুর মহম্মদ প্রামাণিক এলাকায় পরিচিত নিশীথের ঘনিষ্ঠ অনুগামী বলে। নিশীথের সঙ্গেই দল বদল করেন তাঁরা। নুর মহম্মদ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘দাদা’ যে দিকে থাকবেন, তিনিও সে দিকে। ভোটের পরে সিতাইকে তৃণমূল শূন্য করে বিজেপির ধ্বজা তুলে ধরতে তাঁর অবদানকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন বিজেপি নেতৃত্ব, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। প্রশান্ত ঘনিষ্ঠদের দাবি, সেই নুর মহম্মদের বিরুদ্ধেই সিতাইয়ে সন্ত্রাস ছড়ানোর অভিযোগ তুলে পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে ময়দানে নেমেছিলেন প্রশান্ত। কিন্তু গত পঞ্চায়েত ভোটে সিতাইয়ে দলের জেলা পরিষদ প্রার্থীকে আমল দেয়নি দল, অভিযোগ প্রশান্ত ঘনিষ্ঠদের। বরং তাঁকে গণ্ডগোলে না করে ঐক্যবদ্ধ ভাবে দল করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তার পরেও প্রশান্ত একের পর এক কর্মসূচি নিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতেও তাঁর পার্টি অফিস উদ্বোধনের কর্মসূচি ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। অবশেষে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে।
প্রশান্তের স্ত্রী সোমা বলেন, “নতুন যারা তৃণমূল থেকে এসেছে, তারাই চক্রান্ত করে আমার স্বামীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। জেলা বিজেপি নেতাদের জানিয়েও লাভ হয়নি।” বিজেপির জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “প্রশান্তর নামে কিছু মামলা রয়েছে বলে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে শুনেছি। জামিন পাওয়ার পর দল তাঁকে নিয়ে আলোচনায় বসবে।” নিশীথ অবশ্য আগেই জানিয়েছেন, সাংগঠনিক বিষয় পুরোপুরি দল দেখছে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy