উড়ালপুলের নীচে খুনের ঘটনার পিছনে মহাবীরস্থানে ফ্যান্সি মার্কেটের নিয়ন্ত্রণই একমাত্র কারণ নয়। সেই সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে টাউন ক্লাব দখল করে বিক্রির ঘটনাও। পুলিশের তদন্তে এই তথ্যই সামনে এসেছে। শুক্রবার খুনের ঘটনায় ধৃত ছয় জনকে আদালতে তুলে ১৪ দিনের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন লাগোয়া টাউন ক্লাবের বয়স ৮ দশক পেরিয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে ক্লাবের দখল চলে গিয়েছিল গোপাল ঘোষ ওরফে বাউ, মহম্মদ মুখতার ওরফে লাটুয়াদের দলবলের হাতে। সেখানে তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষা সমিতির দফতরও ছিল বলে বাসিন্দারা জানান। সেটি অবশ্য রাতারাতি উঠে যায় বলে অভিযোগ। তার পরেই ক্লাবের জায়গায় টিন, কাঠ দিয়ে গড়ে ওঠে নতুন ১২টি দোকান। এক একটি দোকান ৮-১০ লক্ষ টাকায় বিক্রি করা হয় বলে অভিযোগ।
তখন গোপালের পাশেই ছিল বাকিরাও। কিন্তু বাজার বসানোর পর টাকার ভাগ নিয়ে গোলমাল শুরু হয়ে যায় বলে অভিযোগ। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বলেন, ‘‘বাজার বসানো, টাকা ভাগ এ সব নিয়েই ঝামেলা। তার থেকেই খুনের ঘটনা।’’ শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘টাউন ক্লাব, উড়ালপুলের নীচের এলাকা দখল করে বাজার আর টাকা আদায় হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে সমাজবিরোধীরা, মাফিয়ারা জড়িত।’’
তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, টাউন ক্লাবের এলাকা বিক্রির প্রায় ১ কোটি টাকা হাতে আসতে শুরু করতেই বাউদের সঙ্গে খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের দূরত্ব তৈরি হয়ে যায়। এলাকায় দোকান বসে যায়। তার কোনওটা খাবারের, কোনওটা মোবাইলের। গত এক মাস ধরে টাকার ভাগ নিয়ে গোলমাল চরমে ওঠে।
পুলিশ তদন্তে জেনেছে, দোকান প্রতি ৫০ হাজার টাকা করে দাবি করা হয়েছিল বাউ ও তার সঙ্গীদের কাছে। এর মধ্যে উড়ালপুলের নীচে বসানো ফ্যান্সি মার্কেটের দখল, টোটো থেকে টাকা তোলার বিরোধ তো ছিলই। গত ৫ মে সব মিলিয়ে দুই পক্ষের বচসা গড়ায় খুনের ঘটনায়। বাউ খুন হন।
স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর নিখিল সহানি বলেছেন, ‘‘পুরনো ক্লাবটির জমি দখল হয়েছে। এই দলবলের কয়েক জন তাতে জড়িত বলে শুনেছি। পুলিশকে আমরা ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’ দোকানদারদের একাংশ জানান, প্রাথমিক শিক্ষকদের একটি অফিস থাকলেও, পরে তা উঠে যায়। সেখানেও এখন দোকান বসে গিয়েছে। তবে তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের নেতা রঞ্জন শীলশর্মা বলেন, ‘‘আমাদের ওখানে কিছু ছিল বলে জানি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy