সফরে: বাগডোগরায় সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ। ফাইল চিত্র
খোদ বড়কর্তা ঘুরে যাওয়ার পরে মনোবল বেড়েছে পুলিশের।
টানা বন্ধে জেরবার পাহাড়ে গিয়ে অফিসার-কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ। গত সোমবার থেকে তিন দিন পাহাড়ের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে তিনি অফিসারদের সঙ্গে কথা বলেন। ডুয়ার্সের পরিস্থিতি দেখতে মূর্তিতেও যান। গত দেড় মাসে একাধিক থানা-ফাঁড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া, ডিএসপি গাড়ি-সহ অন্তত ১০টি পুলিশের গাড়ি পুড়েছে। অফিসারকে কোপানো হয়েছে। পুলিশ মেসও ভস্মীভূত হয়েছে। পুলিশের তরফে সাধ্য মতো পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টাও চলছে। খাবারের সমস্যা, গাড়ি, থাকার সমস্যাও সামনে এসেছে। পুলিশের মনোবল নীচের দিকে চলে যাচ্ছে বলে বাহিনীর মধ্যেই কথাবার্তা শুরু হয়ে যায়। আর তখনই পাহাড়ে আসেন ডিজি।
পুলিশের কয়েক জন কর্তা জানান, অনেকের মনোবলে চিড় ধরেছে। তা বুঝতে পেরেই খোদ ডিজি নিজেই দার্জিলিং, কার্শিয়াং, মিরিক ও মূর্তিতে গিয়েছেন। দার্জিলিঙের পুলিশের এক কর্তা জানান, এতে কর্মীরা অনেকটাই উদ্দীপিত। নিয়মিত সমন্বয় বৈঠক। রসদ, গাড়ি পাঠানো ছাড়াও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়মিত পাঠানোর নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন ডিজি। তেমনই, সমতলে গোলমালের যাতে আঁচ না পড়ে, তা দেখার ভার দিয়ে দিয়েছেন শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ কর্তাদের। তার পরেই জোরকদমে নেমে পড়েছেন অফিসারেরা। রাত অবধি বৈঠক, সীমানাগুলিতে নাজরদারি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে পাহাড়ে গোলমাল শুরু হতেই প্রথমে প্রশাসনিক দফতর, হেরিটেজ সম্পত্তি, বিভিন্ন দফতরে হামলার ঘটনা ঘটে। তার পরে ধীরে ধীরে তা পুলিশের বিরুদ্ধে যেতে থাকে। চলতি সপ্তাহ বাদে প্রতিদিনই পুলিশের উপরে হামলা হয়েছে। সিংমারি ও পাতলেবাসে অভিযান ছাড়া পাল্টা তেমন প্রতিরোধের রাস্তায় নামতে পারেনি পুলিশ। কয়েক জায়গায় গুলি চললে এখনও ৯ জন মারা গিয়েছেন। তার উপরে সমতলের বিভিন্ন জেলার ফোর্স দিয়ে পরিস্থিতি সামলাতেও হিমসিম খেতে হচ্ছে পুলিশকে। কত দিন এ ভাবে টানা সম্ভব, সেই প্রশ্নই উঠেছে পুলিশ মহলে। পাহাড়ে অন্তত এক ডজন বিভিন্ন স্তরের আইপিএস, ডিএসপি পদ মর্যাদার অফিসার আছে।
মোর্চার তরফে ডিজির সফর নিয়ে নজর রাখা হয়। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা একান্তে দাবি করেন, কারা গোলমাল পাকাচ্ছে না, সেটা তিন দিনে ডিজি নিশ্চয়ই বুঝেছেন। কলকাতা ফেরার আগে বিমানবন্দরে ডিজি বলেছেন, ‘‘সকলের সঙ্গে কথা বলেছি। অবস্থা নিয়ে পর্যালোচনা করেছি।’’ তিনি জানান, ‘‘পাহাড়ের যারা শান্তিপ্রিয় মানুষ, তাঁদের পাশে পুলিশ সবসময় থাকবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy