Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
Cooch Behar

বুলডোজ়ার নিয়ে অস্থায়ী দোকান ভাঙল পুলিশ

অভিযোগ উঠেছে, আগাম নির্দেশিকা ছাড়া, আচমকা অভিযান চালানোয় ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে বহু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে। উচ্ছেদ অভিযানে কোচবিহার শহরে ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃষ্ণগোপাল মিনা।

ফুটপাত দখলমুক্ত করতে চলছে পুলিশের অভিযান,মঙ্গলবার কোচবিহার শহরে।

ফুটপাত দখলমুক্ত করতে চলছে পুলিশের অভিযান,মঙ্গলবার কোচবিহার শহরে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৪ ০৮:৩২
Share: Save:

‘নবান্ন’-এর সোমবারের বৈঠক থেকে জবরদখল উচ্ছেদের বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই কোচবিহারে অভিযানে নামল পুলিশ-প্রশাসন। বুলডোজ়ার নামিয়ে সকালে খাগরাবাড়িতে পরিবহণ দফতরের সামনে হল উচ্ছেদ অভিযান চলল। দুপুরে কোচবিহার শহরে চলল উচ্ছেদপর্ব। আর তা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।

অভিযোগ উঠেছে, আগাম নির্দেশিকা ছাড়া, আচমকা অভিযান চালানোয় ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে বহু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে। উচ্ছেদ অভিযানে কোচবিহার শহরে ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃষ্ণগোপাল মিনা। তিনি বলেন, ‘‘সবাইকেই আগাম সতর্ক করা হয়েছিল। তার পরেই অভিযান চালানো হয়। সমস্ত ফুটপাত দখলমুক্ত করা হবে। ধারাবাহিক অভিযান চলবে।’’ খাগরাবাড়িতে উচ্ছেদ অভিযানে ছিলেন মহকুমাশাসক (কোচবিহার সদর) কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘একাধিক বার সবাইকে ফুটপাত থেকে সরে যেতে বলা হয়। সময় দেওয়া হয়। তার পরেই অভিযান চালানো হয়।’’

কোচবিহারে ফুটপাত দখলের অভিযোগ নতুন নয়। বহু বছর ধরে ভবানীগঞ্জ বাজার, সুনীতি রোড, হাসপাতালের সামনের রাস্তা, রাসমেলার মাঠের সামনের রাস্তা, পাওয়ার হাউস মোড় এলাকা, সাগরদিঘি চত্বর, নতুন বাজার এলাকায় ফুটপাত দখল করে ব্যবসা চলছে। এর আগে, কোচবিহার পুরসভা ও প্রশাসন কয়েক দফায় উচ্ছেদ অভিযানে নামে। মাঝ পথেই অবশ্য ওই অভিযান বন্ধ হয়ে যায়।ব্যবসায়ীদের অনেকের দাবি, এর আগে মাইকে প্রচার করার কয়েক দিন পরে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছিল। তাতে দোকানঘর সরিয়ে নিতে কিছুটা সময় পেয়েছিলেন তাঁরা। এ বার তা হয়নি। এ বার এক দিকে, মাইকে প্রচার চলেছে, অন্য দিকে, বিশাল পুলিশ বাহিনী বুলডোজ়ার দিয়ে দোকান গুঁড়িয়ে দিয়েছে।

রাসমেলার মাঠে দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবসা করেন দিলীপকুমার নন্দী ও অমর সরকার। দিলীপ বলেন, ‘‘ছোট্ট পানের দোকান আমার। এটা করে সংসার চালাই। দোকান তুলে দেওয়া হল। এখন কী করে সংসার চলবে বুঝতে পারছি না!’’ অমরের চিন্তা, ‘‘কুড়ি বছরের উপরে রাস্তার পাশে জুতো বিক্রির ব্যবসা করি। দোকান বন্ধ হয়ে গেল। এখন চলবে কী করে!’’

পুলিশ অবশ্য ব্যবসায়ীদের জানিয়েছে, কোথাও স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরি করে ব্যবসা করা যাবে না। চাকা লাগানো গাড়িতে নির্দিষ্ট সময় মেনে ব্যবসা করতে হবে। কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সূরজ ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা জেলা ব্যবসায়ী সমিতি সব সময়ে জবরদখলের বিরুদ্ধে। কিন্তু কিছু মানুষ অনেক বছর ধরে ফুটপাতে ব্যবসা করে সংসার চালাচ্ছেন। আচমকা কোনও নোটিস ছাড়া, দোকান ভেঙে দেওয়ায় তাঁদের অনেক বড় ক্ষতি হয়েছে। তাঁরা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। আমরা প্রশাসনের কাছে আর্জি জানাব, যাতে তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Cooch Behar Demolition
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE