Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

স্মৃতির পাহাড় রক্ষায় মিছিলে সকলেই

নকশালবাড়ি কলেজের শিক্ষিকা জিনিয়া মিত্র প্রথম থেকেই রয়েছেন সংগঠনটির সঙ্গে। তাঁর কথায়, ‘‘পাহাড়-সমতলে কোনও বিভেদ চাই না। আমরা একের অপরের ভাষা, খাবার, সাহিত্য নিয়েই থাকি।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৭ ০২:৫০
Share: Save:

কারও স্মৃতি ছোটবেলার কুয়াশা মোড়া পাহাড়ি স্কুলের সিঁড়ি। কারও বা কর্মজীবনের নানা অভিজ্ঞতা। কেউ আবার নিছক কাঞ্চনজঙ্ঘার টানেই বারবার ছুটে যান। এ হেন ‘সবার দার্জিলিংকে’ বাংলা থেকে আলাদা করে দেওয়ার দাবি মানতে পারছেন না অনেকেই। শিলিগুড়ি শহরের নতুন প্রজন্মের পাশে তাই দাঁড়িয়ে পড়েছেন ওঁরাও।

গত রবিবার শান্তি, সম্প্রীতির লক্ষ্যে বাঘাযতীন পার্ক থেকে শুরু হওয়া মিছিলে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে তাঁরা অনেকেই পা মেলান। সে দিনই মিছিল শেষ করে শুরু হয়ে গিয়েছিল পরের বারের প্রস্তুতি। তৈরি হয় অরাজনৈতিক সংগঠন ‘ফোরাম ফর পিস অ্যান্ড ইউনিটি’।

উল্লেখযোগ্য ভাবে শুক্রবারের মিছিলে সামিল হতে চলেছেন সমাজের নানা স্তরের মহিলারাও। শহরের সংস্কৃতি কর্মী কৃষ্ণা কর বা বাচিক শিল্পী পারমিতা দাশগুপ্তরা প্রায় এক সুরে বলেছেন, ‘‘আমরা বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপে নিয়মিত কথা হচ্ছে।’’ শান্তির পক্ষে প্রতিবাদের রাস্তায় নামতে চান তাঁরাও। ওঁদের ধারণা, আগামী শুক্রবার শহর একটি ঐতিহাসিক মিছিল দেখবে।

নকশালবাড়ি কলেজের শিক্ষিকা জিনিয়া মিত্র প্রথম থেকেই রয়েছেন সংগঠনটির সঙ্গে। তাঁর কথায়, ‘‘পাহাড়-সমতলে কোনও বিভেদ চাই না। আমরা একের অপরের ভাষা, খাবার, সাহিত্য নিয়েই থাকি। তা হলে এই আগুন, অশান্তি কেন! শান্তি চাই। তাই সহকর্মী, পরিচিতদের নিয়েই রাস্তায় নামব।’’

শিলিগুড়িতে মিছিলের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন। নতুন করে তৈরি করা সংগঠনের সদস্যরা জানান, রোজ ব্যক্তিগত ভাবে তো বটেই বিভিন্ন ক্লাব, সংগঠনের তরফে যোগাযোগ করা হচ্ছে। মিছিল কোথা থেকে কখন শুরু হবে— সব কিছু জানানো হচ্ছে।

এ ছাড়া এক দল তরুণ আলাদা রাজ্যের বিরোধিতা করে ফেসবুক পেজও তৈরি করেছেন। সেখানেও নিয়মিত মিছিল নিয়ে আপডেট দেওয়া হচ্ছে। শিলিগুড়ি কলেজের অধ্যক্ষ সুজিত ঘোষ সংগঠনটিতে যথেষ্ট সক্রিয়। তিনি বলেন, ‘‘শান্তি থাকলেই উন্নয়ন হবে। কিন্তু এ ভাবে বিশৃঙ্খলতা মানা যায় না। এর বিরুদ্ধে সবাইকে একজোট হতেই হবে।’’

শুধু শিলিগুড়ি শহরই নয়, নকশালবাড়ি, বাগডোগরা, মাটিগাড়াতেও বিভিন্ন দিনে শান্তি মিছিলের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। বিধাননগর মুরলিগছ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সামসুল আলম জানান, পাহাড়কে নতুন করে সাজিয়ে তুলছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময় এই ধরনের আন্দোলন মেনে নেওয়া যায় না। তাই প্রতিবাদে রাস্তায় নামবেন। গত রবিবারের মিছিলে আইনজীবীদের একাংশ হেঁটেছিলেন। আবার রাস্তায় নামার প্রস্তুতি নিয়েছেন তাঁরা।

শিলিগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পীযূষ ঘোষ বলেন, ‘‘গত রবিবারের মিছিলেও আমি সামিল হয়েছি।’’ তেমনিই মিছিলে পরিচিতদের নিয়ে সামিল হচ্ছেন আইনজীবী তথা শহরের নাগরিক মঞ্চের সম্পাদক রতন বণিকও।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE