Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
PMAY

‘তালিকা? ওই দোকানে দশ টাকা দিলেই পেয়ে যাবেন’

জলপাইগুড়ির পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতে পাঁচ হাজারেরও বেশি প্রাপকের নাম রয়েছে তালিকায়। সদর ব্লকে যা ‘রেকর্ড’। সেই গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘর-প্রাপকদের তালিকায় নাম খুঁজতে বাসিন্দাদের ১০ টাকা করে দিতে হচ্ছে।

১০ টাকা জমা দিলেই দেখতে পাওয়া যাবে তালিকা।

১০ টাকা জমা দিলেই দেখতে পাওয়া যাবে তালিকা। ছবি সংগৃহীত।

অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২২ ০৬:৫১
Share: Save:

আবাস যোজনার তালিকা কোথায়?

গ্রাম পঞ্চায়েতের সচিব বললেন, “ছিল তো! গায়েব হয়ে গিয়েছে।” নতুন করে তালিকা টাঙালেন না কেন? উত্তরে পঞ্চায়েতের সচিব রঞ্জিত ওরাওঁ জানালেন, গ্রাম পঞ্চায়েতের উল্টো দিকের দোকানে তালিকা দেওয়া রয়েছে। সেখান থেকে সকলে গিয়ে নিজের নাম আছে কি না দেখে নিতে পারবেন। উল্টো দিকের দোকান থেকে জানানো হল, নাম দেখতে হলে, আধার কার্ড জমা দিতে হবে। তাতেও সঙ্গে সঙ্গে হবে না। নাম আছে কি না জানার জন্য ওই দোকানে ১০ টাকা জমা দিতে হবে। জলপাইগুড়ির পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ‘নিজস্ব নিয়ম’ এটাই।

জলপাইগুড়ির পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতে পাঁচ হাজারেরও বেশি প্রাপকের নাম রয়েছে তালিকায়। সদর ব্লকে যা ‘রেকর্ড’। সেই গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘর-প্রাপকদের তালিকায় নাম খুঁজতে বাসিন্দাদের ১০ টাকা করে দিতে হচ্ছে। গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের উল্টো দিকের দোকানে কম্পিউটার নিয়ে বসে থাকা তরুণী বললেন, “তালিকায় নাম দেখতে হলে, আধার কার্ড লাগবে। ১০ টাকা করে নেওয়া হয়।”

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, যে তালিকা গ্রাম সংসদ সভায় পাশ করতে হবে এবং যেটা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের নোটিস বোর্ডে টাঙিয়ে দেওয়ার কথা, সে তালিকা নিয়ে গোপনীয়তার অভিযোগ জেলার একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতে। জলপাইগুড়ি শহর-ছোঁয়া খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত। অফিসের নোটিস বোর্ডে পুরনো সব কাগজ সাঁটানো। কিন্তু আবাস যোজনার প্রাপকদের তালিকা নেই সেখানে। গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাহী আধিকারিকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “প্রতিদিন সকালে টাঙানো হয়, আবার খুলে নেওয়া হয়। এখন টেবিলে রয়েছে।” একই প্রশ্নে তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান কানন অধিকারী বলেন, “এখনও টাঙানো হয়নি, টাঙিয়ে দেওয়া হবে।”

সদর ব্লকের আর একটি গ্রাম পঞ্চায়েত হল অরবিন্দ। এই গ্রাম পঞ্চায়েতে আবাস যোজনার ঘর বিলি নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তালিকা কোথায় জানতে চাইলে গ্রাম পঞ্চায়েতের এক আধিকারিক বলেন, “আমরা এখনও তালিকা পাইনি।” এ দিকে, গত শনিবার এলাকায় গ্রাম সংসদ সভায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর প্রাপকদের তালিকা অনুমোদন করে ব্লক অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সরকারি তথ্য রয়েছে। তালিকা না থাকলে গ্রাম সভায় অনুমোদন করা হল কী করে? গ্রাম পঞ্চায়েতের সচিব নির্মল শীল বলেন, “এখনও সমীক্ষা চলছে। এ সব বিষয়ে আমাদের বলার এক্তিয়ার নেই।”

স্বচ্ছতা বজায় রাখতে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে তালিকা টাঙানোর নির্দেশ দিয়েছিল প্রশাসন। অভিযোগ, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে একবার তালিকা টাঙিয়ে তার ছবি তুলে জেলাকে পাঠিয়ে খুলে নেওয়া হয়েছে। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, “বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেব। সব গ্রাম পঞ্চায়েত থেকেই তালিকা টাঙানোর রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। তা ছাড়া, প্রশাসন-পুলিশকেও নজর রাখতে বলেছি।”

অন্য বিষয়গুলি:

PMAY Jalpaiguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy