হোলির দিন। শিলিগুড়ির রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র
রাস্তায় পুলিশের কড়াকড়ি বেড়েছে। তার উপরে পাড়ায়-পাড়ায় ম্যারাপ বেঁধে বসন্ত উৎসবের রেওয়াজও কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে। ফলে, জবরদস্তি রং দেওয়া, ছাদ থেকে রঙিন জল ছোঁড়ার প্রবণতা শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারের টুকরো ছবি জুড়লে সেটাই স্পষ্ট হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের পুলিশের একাধিক শীর্ষ কর্তা একান্ত আলোচনায় জানাচ্ছেন, মণ্ডপ গড়ে দল বেঁধে নাচগান, খাওয়া-দাওয়ার মাধ্যমে দোল ও হোলির আয়োজনের ফলে উচ্ছৃঙ্খলতার প্রবণতা আগের চেয়ে কমেছে। শুধু তাই নয়, ডিসি পদমর্যাদার এক অফিসার জানান, পাড়ায় দল বেঁধে কয়েকশো জন নাচগানের মাধ্যমে যখন উৎসবে মেতেছেন, সেখানে জবরদস্তি রং দিতে গেলে সমবেত প্রতিরোধের মুখে পড়তে হত। তাই বিশৃঙ্খলার ঝুঁকি কমে গিয়েছে।
বস্তুত, শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে দাগাপুরের পরিবেশপ্রেমী সংস্থা ‘বসুন্ধরা’য় ১১ বছর আগে শান্তিনিকেতনের ধাঁচে যে বসন্ত উৎসবের সূচনা হয়েছিল তা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা উত্তরবঙ্গেই। যেখানে দোলের দিন সকাল থেকে বিকেল অবধি আবির উড়িয়ে নাচগানের মাধ্যমে মেতে ওঠেন বাসিন্দারা। কয়েকশো জনের উপস্থিতিতে যে উৎসবের সূচনা হয়েছিল, সেই বসুন্ধরায় এবার অন্তত ৬ হাজার জন যোগ দিয়েছিলেন। শিলিগুড়ি-দার্জিলিং রাস্তার ধারে যানজটে থমকে গিয়েছিল জনজীবন। যা সামাল দিতে বাড়তি পুলিশ পাঠাতে হয় পুলিশ কমিশনারকে।
ভিড়ে ঠাসা ছিল মালদহের শুভঙ্কর শিশু উদ্যান অথবা রায়গঞ্জের পাডা়র বসন্ত উৎসব। শিলিগুড়ির সূর্যনগর ময়দানের পাশে মাইকেল স্কুলের মাঠে কাউন্সিলর কৃষ্ণ পালের উদ্যোগে বসন্ত উৎসবেও কাতারে কাতারে মানুষ। অরবিন্দপল্লি, সেবক রোড, গ্রিন পার্ক, মিলনপল্লি, গাঁধী ময়দান, ক্ষণিক সঙ্ঘের মাঠেও ঠাসাঠাসি ভিড়। ক্ষণিক সঙ্ঘের কর্ণধার সুশান্ত সেন বললেন, ‘‘জবরদস্তি রং দিলে সমবেত প্রতিরোধ হবে। তাতেই আগের মতো গা জোয়ারি নেই।’’
বসুন্ধরার কর্ণধার সুজিত রাহা মনে করেন, শিলিগুড়ি শুধু নয়, গোটা উত্তরবঙ্গেই দোল-হোলি উদযাপনে উচ্ছৃঙ্খলতার প্রবণতা ধীরে ধীরে কমেছে। তিনি বলেন, ‘‘কেউ কাউকে জোর করে রং দেননি। বেলেল্লাপনা নেই।’’
তা বলে উচ্ছ়ৃঙ্খল আচরণ যে একেবারে হয়নি, তা নয়। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সুনীল কুমার চৌধুরী বলছেন, ‘‘দু’দিনে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি, বাইক চালানোর জন্য শতাধিক জনকে ধরা হয়েছে। জবরদস্তি রং ছোঁড়ার চেষ্টা করায় বেশ কয়েকজনকে সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy