রোগীকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হাসপাতালে। — নিজস্ব চিত্র।
বর্ষায় গ্রামের রাস্তায় গাড়ি ঢোকে না। তাই বাঁশে কাপড় জড়িয়ে তৈরি করা হয়েছে ‘স্ট্রেচার’। তাতে চড়িয়েই রোগীকে নিয়ে যেতে হল হাসপাতালে। এমনই ছবি দেখা গেল কালিম্পঙের একটি গ্রামে।
কালিম্পং জেলার ঝুলং গ্রাম। বর্ষায় আর পাঁচটা পাহাড়ি গ্রামের মতোই রাস্তার দফারফা সেখানেও। মূল সড়ক থেকে গ্রামের দিকে কোনও যানবাহন চলাচল করে না। এই সময় গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে তাঁকে প্রধান সড়কে নিয়ে যেতে হয় হাতে তৈরি করা স্ট্রেচারে শুইয়েই। ঝুলংয়ে প্রায় ৭০টি পরিবার রয়েছে। কালিম্পং শহর থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে পৌঁছতে হয় ওই গ্রামে। বর্ষার শুরুতে ধসের কবল ভয়ানক পরিস্থিতি হয়েছে ঝুলংয়ের রাস্তার। গত শনিবার গ্রামের এক ব্যক্তি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় হাতে তৈরি করা ওই রকম স্ট্রেচারে শুইয়েই। মূল সড়ক থেকে ঝুলং গ্রাম ৭-৮ কিলোমিটার দূরে। ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট হেঁটে কাঁচা রাস্তা পেরিয়ে মূল রাস্তায় ওঠেন ওই রোগীর আত্মীয়রা। এর পর তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্সে চড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয় কালিম্পঙে।
ঝুলংয়ের বাসিন্দা সঞ্জু খিতিয়া বলেন, ‘‘কাউকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হলে ব্যাপারটা সবচেয়ে কষ্টের হয়। কেউ রাতবিরেতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভোর হওয়ার অপেক্ষা করতে হয়। কিছুই করার থাকে না। এ ভাবেই আমরা দিন কাটাচ্ছি।’’ স্মিতা রাই নামে এক মহিলার কথায়, ‘‘বর্ষাকালে রাস্তা বলে আদৌও কিছু থাকে না। তাই এই সময়ে মহিলা বা বয়স্ক কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে নিয়ে সবচেয়ে বেশি অসুবিধা।’’
এ প্রসঙ্গে কালিম্পঙের জেলাশাসক আর বিমলা বলেন, ‘‘ওই এলাকাটি গরুবাথান এলাকায় পড়ে। আসলে পাহাড়ে এমন অনেক পকেট রুট রয়েছে যেখানে সাধারণ মানুষকে রাস্তার জন্য ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তবে আমরা কিছু জায়গায় রাস্তার কাজ করেছি। গ্রামের বাসিন্দারা যদি আমার কাছে আবেদন করেন তা হলে অবশ্যই ওই রাস্তা তৈরি করে দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy