উদ্ধার করা হয়েছে অজিত মুণ্ডার দেহ। — নিজস্ব চিত্র
হাসপাতালের ওয়ার্ডের ভিতরেই শৌচাগারে গলায় চাদর পেঁচানো অবস্থায় এক রোগীর মৃতদেহ উদ্ধার হল। সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে মালবাজার মহকুমা হাসপাতালে। মৃতের নাম অজিত মুণ্ডা (২৫)। তাঁর বাড়ি দার্জিলিঙ জেলার খড়িবাড়ি এলাকায় বলে জানা গেছে। মারধরের ঘটনায় জখম অজিতবাবু গত রবিবার গভীর রাতে মালবাজারের হাসপাতালে ভর্তি হন। সমীর লাকড়া নামের এক ব্যক্তি তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করান। কিন্তু অজিত মুণ্ডাকে হাসপাতালে ভর্তি করবার পর থেকে সমীর লাকড়ারও কোন খোঁজ মেলেনি। পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
হাসপাতালের খাতায় সমীর লাকড়ার ঠিকানা ওদলাবাড়ি বলে লেখা থাকলেও সেটার সত্যতা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে বলেই মত পুলিশের। মৃতের আত্মীয় পরিজন কারওরই কোন খোঁজ মেলেনি। মালবাজার মহকুমা হাসপাতালের সুপার মাসুদ আলি জানান শরীরে একাধিক চোট আঘাত থাকায় অজিতবাবুকে ভর্তি রাখা হয়। এদিন হাসপাতালেরই চাদর গলায় পেঁচানো অবস্থায় শৌচাগার থেকে তার মৃতদেহ উ দ্ধার করা হয়। তবে গলায় ফাঁস থাকলেও মৃতদেহটি ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়নি, অজিতবাবুর দেহ শৌচাগারের ভেতরে পড়ে থাকতে দেখা যায়। হাসপাতাল সূত্রের খবর যে, ভর্তি হবার পর থেকেই অস্বাভাবিক আচরণ করছিলেন অজিত। বারবারই পুরুষ ওয়ার্ডের মূল গেট খুলে বাইরে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছিলেন তিনি। এরপর সোমবার বেলা একটা নাগাদ হাসপাতালের চাদর গায়ে জড়িয়ে তিনি শৌচাগারে ঢুকে পড়েন। অনেক ক্ষণ পেরিয়ে গেলেও শৌচাগার থেকে না বেরোনোয় এরপর হাসপাতালের সাফাইকর্মী শৌচাগারের উপর দিয়ে উঁকি মেরে অজিত মুণ্ডাকে নীচে পড়ে থাকতে দেখেন। দেড়টার সময় তাঁর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ দিকে মহকুমা হাসপাতালে রোগীর মারা যাওয়ার ঘটনায় রোগীদের উপরে নজরদারির মান নিয়েই প্রশ্ন তোলেন অনেকে। মালবাজারের পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন সাহা বলেন, ‘‘মালবাজার মহকুমা হাসপাতলে এই ঘটনা কী ভাবে ঘটল তা বুঝে উঠতে পারছি না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।’’ মালবাজার পুরসভার বিরোধী দলনেতা সুপ্রতিম সরকার এই ঘটনাকে নজিরবিহীন বলে দাবি করেন। এই ধরনের ঘটনায় হাসপাতালের পরিষেবা নিয়েই প্রশ্ন তৈরি হবে বলেও জানান তিনি। ওয়ার্ডের ভেতরে নজরদারি যাতে আরও বাড়িয়ে তোলা হয় সেই দাবিও করেন সুপ্রতিমবাবু। অ্যাম্বুল্যান্স এবং ছোটগাড়ির সংগঠনের পক্ষ থেকেও হাসপাতালের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করা হয়েছে। আদিবাসী যুবকের এই রকম মৃত্যুর পেছনে হাসপাতালের গাফিলতি রয়েছে বলেই দাবি করেন সংগঠনের কর্মকর্তা সুবল দে। তিনি বলেন এই ধরনের ঘটনা মালবাজারের হাসপাতালে আশা করা যায় না, পুরো বিষয়টির দায়িত্ব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy