প্রতীকী ছবি।
ধর্ষণে অভিযুক্ত এক যুবককে ভর সন্ধ্যায় পিটিয়ে খুনের ঘটনায় নির্যাতিতা তরুণীর বাবা ও মাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। সোমবার রাতে ওই যুবককে তাঁর বাড়িতে ঢুকে পিটিয়ে খুন করা হয়। সেই রাতেই নির্যাতিতার বাবা-মাকে পুলিশ গ্রেফতার করে। মঙ্গলবারও থমথমে হয়ে রয়েছে পুরাতন মালদহ শহরের ওই এলাকা। ঘটনাস্থলে মোতায়ন রয়েছে পুলিশ পিকেট।
মালদহ থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে ওই যুবককে বাড়িতে ঢুকে খুনের ঘটনায় পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মৃতের আত্মীয় পরিজন থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের দাবি, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় বাড়ির ভিতরে নৃশংস ভাবে খুন হলেন ওই যুবক। পুলিশকে একাধিকবার ফোন করেও কোনও লাভ হয়নি বলে জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী। তিনি বলেন, “প্রতিবেশী পরিবারের লোকজন বাড়িতে চড়াও হতেই পুলিশকে ফোন করা হয়। তবে পুলিশ কর্তারা কোনও আমলই দেননি। এমনকি, থানাতে গেলেও প্রথমে আসতে চাননি পুলিশ কর্তারা।” পুলিশ সক্রিয় হলে স্বামীকে বাঁচানো যেত বলে তাঁর দাবি।
মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “এক ব্যক্তি ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।”
ওই যুবক বাড়িতেই হস্তশিল্পের কাজ করতেন। তাঁর সঙ্গেই হস্তশিল্পের কাজ করেন এলাকার দশ মহিলা। প্রতিবেশী এক তরুণীও সেই কাজ করতেন। ডিসেম্বর মাসে ওই তরুণীর বিয়ে হয়ে যায় ইংরেজবাজার শহরে। অভিযোগ, বিয়ের পরে দিনই তরুণীকে অপহরণ করেন ওই যুবক। থানাতে অপহরণের অভিযোগ করেন ওই তরুণীর পরিবারের লোকেরা। অপহরণের চার মাস পরে বাড়িতে ফিরে আসেন তরুণী। সেই সময় ফের ওই যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ তাকে গ্রেফতারও করে। প্রায় আড়াই মাস মালদহ সংশোধনাগারে ছিলেন তিনি।
শনিবার জামিনে ছাড়া পান ওই যুবক। অভিযোগ, তরুণীর পরিবার ওই যুবকের কাছ থেকে দশ লক্ষ টাকা দাবি করেন। তার পরে সোমবার ভর সন্ধ্যায় বাঁশ, লোহার রড নিয়ে যুবকের বাড়ি চড়াও হন তরুণীর আত্মীয় স্বজনেরা। অভিযোগ, দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে পিটিয়ে খুন করা হয় ওই ব্যক্তিকে। ওই যুবকের স্ত্রী বলেন, “আমাদের দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে সাত থেকে আট জন। এরপরে আমার স্বামীকে পিটিয়ে খুন করা হয়। আমার স্বামী জেল থেকে ফিরেছে। আদালতে মামলা চলছে। তারপরেও তাকে খুন করা হল।”
ঘটনায় হতবাক স্থানীয় বাসিন্দারাও। তাঁদের দাবি, তরুণীর পরিবারও খুব সাধারণ। তরুণীর বাবা লটারি বিক্রির কাজ করে। তাঁরা কারও বাড়িতে চড়াও হয়ে খুন করে দেবে এমনটা তাঁরা ভাবতে পারছেন না। তবে পুলিশ তৎপর হলে খুনের ঘটনা এড়ানো যেত বলে দাবি স্থানীয়দের।
তাঁদের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে থানার দূরত্ব মাত্র চারশো মিটার। অথচ, পুলিশের প্রথমে দেখা মেলেনি। যদিও গাফিলতির অভিযোগ মানতে নারাজ পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ দিন ধৃতদের মালদহ জেলা আদালতে পেশ করা হলে বিচারক জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের বশিষ্ঠ ত্রিবেদী বলেন, “ধার দেনা করে তরুণীর বিয়ে দিয়েছিলেন পরিবারের লোকেরা। ঘটনার পর তরুণীকে আর মেনে নেয়নি শ্বশুর বাড়ির লোকেরা। সেই আক্রোশেই হামলা হয়ে থাকতে পারে। তবে খুনের ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক।”
পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান অলোক রাজোরিয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy