অকারণে রোগীদের অন্যত্র রেফার করা যাবে না। সেই সঙ্গে, এখন থেকে অস্ত্রোপচারের সংখ্যাও বাড়াতে হবে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের মুখ্যসচিব অনিল ভার্মার ওই নির্দেশের তিন দিনের মধ্যে জেলার তিনটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও একটি গ্রামীণ হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটার গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিল উত্তর দিনাজপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, রোগী ও প্রসূতিদের প্রতি মাসে রেফারের সংখ্যা বিচার করে কালিয়াগঞ্জ ব্লকের কুনোর, গোয়ালপোখর ব্লকের লোধন, চোপড়া ব্লকের দলুয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও করণদিঘি গ্রামীণ হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটার গড়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধার দাবি, খুব দ্রুত ওই তিনটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও করণদিঘি গ্রামীণ হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটার তৈরির কাজ শুরু করা হবে। একই সঙ্গে, জেলার মোট সাতটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে লেবার রুম, রোগীদের বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ ও বিদ্যুদয়নের পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজও চলবে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের চার কোটি টাকা বরাদ্দে ছ’মাসের মধ্যে সমস্ত কাজ শেষ করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
গত ২৩ নভেম্বর রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের মুখ্য সচিব অনিলবাবু ও রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথির নেতৃত্বে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতাল ও সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। এর পর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সভাকক্ষে জেলাশাসক আয়েশা রানি, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা-সহ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তাঁরা। ওই বৈঠকে অনিলবাবু জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রেফারের পরিসংখ্যান দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। রেফারের কারণ জানতে চিকিত্সকদের নানা প্রশ্ন করেন তিনি। এর পরেই বিভিন্ন হাসপাতালে অকারণে রোগীদের রেফার করা বন্ধ করে অস্ত্রোপচারের সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশ দেন তিনি।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, অনিলবাবুর ওই নির্দেশের পরেই জেলা হাসপাতালের চিকিত্সকেরা বুঝেশুনে রোগীদের শারীরিক পরিস্থিতি ও চিকিত্সার পরিকাঠামো বিচার করেই রোগীদের রেফার করছেন। কুনোর, লোধন ও দলুয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি কালিয়াগঞ্জ, গোয়ালপোখর ও চোপড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মর্যাদায় রয়েছে। ফলে ওই তিনটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সব সময় রোগীদের ভিড় লেগে থাকে।
একই পরিস্থিতি ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন করণদিঘি গ্রামীণ হাসপাতালেও। কিন্তু ওই তিনটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও করণদিঘি গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিত্সক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীর অভাব না থাকলেও এখনও পর্যন্ত অপারেশন থিয়েটার গড়ে ওঠেনি।
ফলে প্রতিদিনই বিভিন্ন দুর্ঘটনায় কমবেশি জখম ও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীদের অস্ত্রোপচারের জন্য কালিয়াগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতাল, ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতাল ও রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে রেফার করে দেন চিকিত্সকেরা। অপারেশন থিয়েটার গড়ে উঠলে এক দিকে যেমন রেফারের সংখ্যা কমবে, তেমনই রোগীদের হয়রানি বন্ধ হবে বলে দাবি করেছেন জেলা রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারপার্সন কেয়া চৌধুরীর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy