Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

হঠাৎ শব্দ, পড়ে সুশীল

সুশীলবাবুর পৈতৃক বাড়ি হায়দরপাড়ার শিবরামপল্লিতে। তবে তিনি হাকিমপাড়ায় ফ্ল্যাট কিনে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে থাকতেন। গত কয়েক দিন তিনি বাঘা যতীন পার্কের কাছে শ্বশুরবাড়িতে ছিলেন।

শোক: সুশীলের দেহ আঁকড়ে তার মেয়ে। ছবি: স্বরূপ সরকার

শোক: সুশীলের দেহ আঁকড়ে তার মেয়ে। ছবি: স্বরূপ সরকার

নিজস্ব সংবাদদাতা 
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৯ ০৬:২৪
Share: Save:

শিলিগুড়ি পুরসভার এক বাস্তুকারের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। শনিবার সুভাষপল্লিতে নেতাজি সুভাষ রোডে বেলা ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। নির্মীয়মাণ বাড়ির তিনতলা থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয় বলে স্ত্রী এবং সেখানে থাকা নির্মাণ কর্মীরা দাবি করেছেন। মৃত ওই আধিকারিকের নাম সুশীলচন্দ্র দাস (৪৬)। তিনি পুরসভার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়র (ইলেকট্রিক্যাল) ছিলেন।

সুশীলবাবুর পৈতৃক বাড়ি হায়দরপাড়ার শিবরামপল্লিতে। তবে তিনি হাকিমপাড়ায় ফ্ল্যাট কিনে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে থাকতেন। গত কয়েক দিন তিনি বাঘা যতীন পার্কের কাছে শ্বশুরবাড়িতে ছিলেন। নেতাজি সুভাষ রোডে নতুন তিনতলা বাড়ি তৈরি করছিলেন। সেই কাজ অনেকটাই হয়ে গিয়েছে। নির্মীয়মাণ বাড়িটির তিনতলায় পিছনের অংশে টিনের ঘর করে সেখানে ঠাকুরের আসন বসিয়ে পুজোর ব্যবস্থা করেছিলেন। মাঝেমধ্যেই পুরসভায় যাওয়ার আগে সেখানে গিয়ে পুজো দিতেন, মিস্ত্রিদের কাজের তদারকি করতেন। এ দিন ছেলে এবং মেয়ে দু’জনেরই জন্মদিন ছিল।

শ্বশুরবাড়ি থেকে খেয়ে স্ত্রী রুবিকে নিয়ে নেতাজি রোডের বাড়িতে যান সুশীল। তিনতলায় পুজো দেন। নীচতলায় তখন অন্তত তিন জন মিস্ত্রি কাজ করছিলেন বলে দাবি। স্ত্রী তাঁদের প্রসাদ দিতে নেমেছিলেন। আচমকা ভারী কিছু পড়ার শব্দ হয় বাড়ির পাশে। সকলে হকচকিয়ে ছুটে বেরিয়ে আসেন। সুজন মজুমদার নামে এক মিস্ত্রি তিনতলায় উঠে উপর থেকে দেখেন, সুশীলবাবু পাশের বাড়ির চাতালে পড়ে কাতরাচ্ছেন। রক্তে ভেসে যাচ্ছে। দ্রুত তাঁকে শিলিগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

তিন তলার ওই অংশে খোলা ছাদ নেই। দেওয়াল গাঁথা। দেওয়ালের উপরে জানলা বা গ্রিল বসানোর অংশ ফাঁকা রাখা। তাই অসতর্কতায় পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা কম। সে কারণে তিনি কী ভাবে পড়ে গেলেন, তা নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে।

ঘটনার খবর পেয়ে মেয়র, বরো চেয়ারম্যান, কাউন্সিলরদের অনেকে, পুরসভার কর্মী-আধিকারিকরা হাসপাতালে যান। পরিবারের লোকেরা ততক্ষণে চলে এসেছেন। ছেলেমেয়ে কান্নাকাটি করছিল। তার মধ্যেই পরিবারের লোকদের কয়েক জনকে দোষারোপ করতেও দেখা গিয়েছে। ময়নাতদন্তের পরে দেহ এলে কোন বাড়িতে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে, তাই নিয়ে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে গোলমাল বাঁধে।

সন্ধ্যার দিকে পুরসভায় মরদেহ নিয়ে গেলে সেখানে সবাই শ্রদ্ধা জানান। সেখানে পরিবারের লোকদের একাংশ শিবরামপল্লির বাড়িতে মা রয়েছেন দাবি করে সেখানে দেহ নিয়ে যেতে চান। স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ি লোকজন সেখানে না নেওয়ারই পক্ষপাতী ছিলেন। শিবরামপল্লির বাড়ির লোকেরা এরপর শিলিগুড়ি থানায় গিয়ে জানান, তাদের বাড়িতে মৃতদেহ নিতে দেওয়া হচ্ছে না। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ যায়। একই সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলও ঘুরে দেখে।

অন্য বিষয়গুলি:

Siliguri Municipality Engineer Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy