এনআরসি নিয়ে শুধু উত্তর দিনাজপুর জেলা নয়, উত্তরবঙ্গ জুড়েই উদ্বেগের আবহ। ফাইল চিত্র
এনআরসি নিয়ে শুধু উত্তর দিনাজপুর জেলা নয়, উত্তরবঙ্গ জুড়েই উদ্বেগের আবহ। তার উপর সেই উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে শুক্রবার সোলেমান সরকারের মৃত্যু। অভিযোগ, এনআরসির জেরে দেশছাড়া হওয়ার আতঙ্কে আচমকা অসুস্থ হয়েই মারা যান ইটাহার থানার জয়হাট গ্রাম পঞ্চায়েতের হালিমপুরের ওই বাসিন্দা। সেই মৃত্যুর জেরে আতঙ্কে একাধিক এলাকায় ডিজিটাল রেশন কার্ডের সংশোধন আবেদনের ভিড় উপচে পড়েছে বিভিন্ন শিবিরে। এমনই অবস্থা যে, ইটাহারেই অত্যধিক ভিড়ে বিশৃঙ্খলার জেরে একটি শিবির অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
ইটাহার ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে শনিবার বেলা ১১টা থেকে জয়হাট গ্রাম পঞ্চায়েতের কার্যালয়ে একটি শিবির হওয়ার কথা ছিল। শিবিরে প্রশাসনের তরফে বাসিন্দাদের কাছ থেকে ডিজিটাল রেশন কার্ডে নাম সংশোধন ছাড়াও পরিবারের সদস্যদের নতুন ডিজিটাল রেশন কার্ড তৈরির জন্য আবেদন জমা নেওয়ার কথা ছিল। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এনআরসি নিয়ে উদ্বেগ ও সোলেমানের মৃত্যুর ঘটনার জেরে এ দিন সকাল ৮টা থেকে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০টি সংসদের কয়েক হাজার বাসিন্দা পঞ্চায়েতের কার্যালয়ের সামনে লাইন দেন। তাঁরা কেউ ডিজিটাল কার্ডে নাম সংশোধন, নিজেদের এবং পরিবারের ছোটদের নতুন ডিজিটাল কার্ড তৈরির জন্য এসেছিলেন। ভিড়ের জেরে পঞ্চায়েত কার্যালয়ের সামনে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। বাধ্য হয়ে প্রশাসন সেই শিবির স্থানীয় বৈদড়া জনকল্যাণ হাইস্কুল চত্বরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রশাসনের তরফে এরপর ওই স্কুলে তড়িঘড়ি ২৫টি কাউন্টার খুলে এ দিন বিকেল পর্যন্ত প্রায় পাঁচ হাজার বাসিন্দার কাছ থেকে ডিজিটাল কার্ডের আবেদন জমা নেওয়া হয়।
ইটাহারের বিডিও আবুল আলা মাবুদ আনসার বলেন, ‘‘ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় পঞ্চায়েতের তরফে ইটাহার ব্লকের ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের এনআরসি নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য প্রচার চালানো হচ্ছে।’’ বৈদড়া এলাকার বাসিন্দা পেশায় চাষি মজিতুল্লা আবেদিন বলেন, ‘‘শুনেছি, এনআরসি কার্যকরী হলে ১৯৭১ সালের আগের পূর্বপুরুষের জমির দলিল ও নতুন ডিজিটাল রেশন কার্ড না থাকলে দেশছাড়া হতে হবে। সেই ভয়েই চার ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে পরিবারের সমস্ত সদস্যের ডিজিটাল কার্ড তৈরির আবেদন জমা দিয়েছি।’’ ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের গোপালনগর সংসদ এলাকার বাসিন্দা আলো বেওয়ার বক্তব্য, ‘‘প্রায় দেড়দশক আগে আমার স্বামী মারা গিয়েছেন। এ দিন শিবিরে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে আমার ডিজিটাল রেশন কার্ড তৈরির আবেদন জমা দিয়েছি।’’
এদিকে, এ দিন পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের কাছ থেকে সোলেমানের মৃত্যুর বিষয়ে খোঁজখবর নেন। ইটাহারের তৃণমূল বিধায়ক অমল আচার্য ও ইটাহার পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের দলনেতা নজিবর রহমান মৃতের পরিবারের লোকেদের প্রশাসন ও দলের তরফে সরকারি ও আর্থিক সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy