উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে এভাবেই বসেছে দোকান। ছবি: সন্দীপ পাল।
প্রথম দর্শনে বাজার বলে ভুল করতে পারেন যে কেউই। পোশাকের দোকান থেকে শুরু করে চা, ঘুগনির দোকান। খাবার হোটেল থেকে মাছের দোকান রয়েছে সব কিছুই। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ক্যাম্পাসের ছবিটা এরকমই।
হাসপাতালের করিডরের দু’ধার দিয়ে পসরা নিয়ে বসে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। অধ্যক্ষের দফতর, সুপারের অফিসের কাছে সর্বত্রই এক অবস্থা। হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগ থেকে ব্লাড ব্যাঙ্ক সংলগ্ন করিডর সব জায়গাতেই গজিয়ে উঠেছে অবৈধ দোকান। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ক্যাম্পাসে প্রায় এক হাজার দোকান অবৈধ ভাবে গজিয়ে ওঠায় চিন্তিত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, পুলিশ দিয়ে ওঠালেও কিছুক্ষণ পরে ফের সেই জায়গায় বসে পড়ছেন তাঁরা। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মদতেই ওই ব্যবসায়ীরা ক্যাম্পাসে ঘাঁটি গেড়ে বসতে চাইছে। এই মদতের কারণেই ওই ব্যবসায়ীদের তোলা সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি হাসপাতালের সুপারের। সুপার নির্মল বেরা বলেন, ‘‘অবৈধ দোকানগুলি পুলিশকে দিয়ে তুলে দেওয়ায় হলেও পরে ফের সেগুলি বসে পড়ে।’’ হাসপাতাল চত্বর থেকে ওই সমস্ত অবৈধ দোকান তুলতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলির স্বদিচ্ছা এবং সাহায্য দরকার বলে জানিয়েছেন তিনি।
নির্বাচনের পরে রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে সুপার জানিয়েছেন। হাসপাতালের ওয়ার্ড লাগোয়া ক্যাম্পাসে যে ভাবে গ্যাসের স্টোভ জ্বালিয়ে চায়ের দোকান, হোটেল চলছে তাতে যে কোনও সময় বিপদ ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি। তা ছাড়া মেডিসিনের অন্তর্বিভাগের সামনে থেকে বহিবির্ভাগ পর্যন্ত বিস্তৃত প্রায় আড়াইশো মিটার করিডরের ধার দিয়ে যত্রতত্র দোকান গজিয়ে উঠেছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, এমসিআই পরিদর্শনের সময় এ ধরনের দোকান বা অস্থায়ী পরিকাঠামোর ফলে হওয়া সমস্যার কথা জানানো হয়েছিল। তখন বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকা অস্থায়ী দোকানগুলি তুলে ব্লাড ব্যাঙ্কের পিছনের অংশে বসানো হয়। জানা গিয়েছে, রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে ঠিক হয়েছিল বিকল্প ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত ওই জায়গাতেই তাদের বসতে হবে।
এখন ব্লাড ব্যাঙ্কের পিছনে ওই অংশে অন্তত ছ’শো দোকানের একটি বাজার গড়ে উঠেছে। তা নিয়ে ঘোরতর আপত্তি রয়েছে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের। এর পরেও করিডরের ধার দিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় ফের নতুন করে দোকান বসায় বিব্রত মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
এমনিতেই করিডরের পরিস্থিতি ভাল নয় বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ভূমিকম্পে ওই অঞ্চলের বহু জায়গায় ফাটল ধরেছে। গোটা এলাকাটি বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঠেকা দিয়ে রাখা হয়েছে। অস্থায়ী দোকান তৈরি করতে গিয়ে সেই সমস্ত বাঁশও অনেক ক্ষেত্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। অনেকে সেই বাঁশেই দড়ি বেঁধে দোকানের পলিথিন টাঙাচ্ছেন। তাতে বাঁশ সরে করিডর ভেঙে কোনও বড় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy