Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
কোচবিহারে বার্তা রবির

শিল্পে বাধায় রেয়াত নয় কর্মীদেরও

কোচবিহারে আরও দু’টি নতুন শিল্পতালুক গড়তে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য জমি চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়াও ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। শিল্পদ্যোগীদের টানতে প্রাথমিক কথাবার্তা শুরু করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।

বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনায় মন্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র।

বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনায় মন্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৬ ০২:১৭
Share: Save:

কোচবিহারে আরও দু’টি নতুন শিল্পতালুক গড়তে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য জমি চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়াও ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। শিল্পদ্যোগীদের টানতে প্রাথমিক কথাবার্তা শুরু করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। পাশাপাশি শিল্প স্থাপনে দলের কর্মীরা কোনওভাবে বাধা দিলে রেয়াত করা হবে না বলেও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “কর্মীরা দুষ্টুমি করলে শাসন তো করতেই হবে। আমরা উন্নয়ন চাই, কর্মসংস্থান চাই।”

নানা সমস্যায় ধুঁকছে জেলায় একমাত্র শিল্প তালুক চকচকা। এখানকার সমস্যা না মিটিয়ে জেলায় নতুন শিল্পতালুক গড়ার উদ্যোগে প্রশ্ন তুলেছেন জেলাবাসীর একাংশ। তবে কোচবিহারে নতুন শিল্পতালুক তৈরির উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শিল্পদ্যোগী সংগঠনের কর্তারা। একই সঙ্গে চকচকায় জেলার বর্তমান একমাত্র শিল্পতালুকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও দাবি তুলেছেন তাঁরা।

উদ্যোগীদের একাংশ জানান, বাম আমলে গড়ে ওঠা ওই শিল্পতালুকে ৩০টির বেশি কারখানা চালু রয়েছে। মাস তিনেক আগে একটি বিস্কুট কারখানা চালু হয়েছে। তবে গত দেড় দশকে বেশ কিছু কারখানা বন্ধ হয়েছে। চকচকায় কর্মীদের অনিয়মিত হাজিরার অভিযোগে মালিকপক্ষ কয়েকমাস আগে ‘সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের’ বিজ্ঞপ্তি ঝোলায়। শিল্পের জন্য জমি নিয়ে অনেকে ফেলে রেখেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। সেখানে জুট পার্কের জন্য জমি চিহ্নিত হলেও কোনও কাজ হয়নি।

কোচবিহার জেলা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুকুমার সাহা বলেন, “চকচকা শিল্পতালুকে রাস্তা ও নিকাশির উন্নয়নে কাজ শুরু হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ ক্যাম্প দরকার। পুকুরগুলির সংস্কার প্রয়োজন। সেইসঙ্গে জেলায় শিল্প টানতে দ্রুত বিমান চালুও আবশ্যিক। আমরা এসব বিষয়ে সাংগঠনিকভাবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর কাছে আর্জি জানাবো।” চকচকার শিল্পদ্যোগীদের সব ব্যাপারে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথবাবু।

মঙ্গলবার কোচবিহারে বিদ্যুৎ কর্মী সংগঠনের একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন রবীন্দ্রনাথবাবু। পরে বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “জেলায় শিল্পস্থাপনের ব্যাপারে জোর দেওয়া হচ্ছে। দু’টি নতুন শিল্পতালুক তৈরির ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। শিল্পদ্যোগীদের সমস্ত রকম সহযোগিতা করা হবে।”

সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারের পুন্ডিবাড়ি, মধুপুর, ডাউয়াগুড়ি ও মারুগঞ্জ এলাকায় শিল্পতালুকের জন্য এক সঙ্গে ৫-৬ হাজার একর জমি পাওয়া যেতে পারে বলে প্রাথমিক তথ্য মিলেছে। ওই সব এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়ার পরেই অবশ্য জায়গা চূড়ান্ত করা হবে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “শিল্পদ্যোগীদের অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। ভেষজ, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের মত বিভিন্ন শিল্প স্থাপনে তাঁদের আগ্রহ রয়েছে। পরবর্তীতে বিভিন্ন বণিক মহল, ব্যবসায়ী সংগঠনকে নিয়ে আলোচনা করা হবে। শিল্পস্থাপন করতে চাইলে কারও কোনওরকম সমস্যা হবে না।”

গত নভেম্বরে সভা করতে এসে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোচবিহারে শিল্পদ্যোগীদের বিনিয়োগের আহ্বান জানান। এমনকি উদ্যোগীদের পঞ্চাশ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছিলেন তিনি। সে কথা মাথায় রেখেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রকের দায়িত্ব নিয়েই ওই ব্যাপারে তৎপর হয়েছেন রবীন্দ্রনাথবাবু। শিল্পস্থাপনে আগ্রহীরা আবেদন করলে দ্রুত সংযোগ দেওয়ার ব্যাপারে বিদ্যুৎ কর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

এ দিন বিদ্যুৎ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখেন রবীন্দ্রনাথবাবু। ২০১৬ সালের মধ্যে সমস্ত কাজ সম্পূর্ণ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। নদী বিচ্ছিন্ন দিনহাটার দরিবস, তুফানগঞ্জের চর বালাভূতে টাওয়ার বসিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগের বন্দোবস্ত করার ব্যাপারেও আলোচনা হয়। মন্ত্রী জানান, মাথাভাঙায় ১৩২ কেভি সাবস্টেশন হয়েছে। জেলায় আরও ১২টি নতুন সাবস্টেশন তৈরির প্রস্তাব রয়েছে। গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিল ব্যাঙ্কের মাধ্যমে জমা নেওয়ার ব্যবস্থা করার ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Industrialization Field Workers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE