রতুয়ায় চলছে নৌকো। নিজস্ব চিত্র
ঘরে কোমরসমান জল। রাস্তার পাশে নিজের ছেঁড়া ত্রিপল খাটিয়ে সপরিবার রয়েছেন শেখ ফাইজুদ্দিন। পাশেই স্তূপ করে রাখা পাট, গম। লাগাতার বৃষ্টিতে ছেঁড়া ত্রিপল চুঁইয়ে পাট-গম সব ভিজে একশা। একটা ত্রিপলের আশায় গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে বলা হয় ব্লকে যেতে। দু’বার নৌকা পাল্টে ২০ টাকা খরচ করে বৃষ্টি মাথায় করে ব্লকে এসে খালি হাতে ফিরে যাওয়ার সময় ফাইজুদ্দিন বললেন, ‘‘ত্রাণের একটা ত্রিপলও জুটল না। ব্লক থেকে বলল, পঞ্চায়েতেই যোগাযোগ করতে। উল্টে যাতায়াতে ২০ টাকা খরচ হয়ে গেল।’’
মালদহের বন্যাদুর্গত রতুয়ার আশুটোলার বাসিন্দা ফাইজুদ্দিন। তাঁর মতোই এখনও একটা ত্রিপলও জোটেনি কাহারপাড়ার সনাতন সরকার, অতুল মণ্ডল, ঢুলিপাড়ার প্রভাস সরকারের। গঙ্গা, ফুলহারের জলস্ফীতি, ফুলহারের বাঁধ ভেঙে বিপন্ন রতুয়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় এখন শুধুই হাহাকার আর দীর্ঘশ্বাস। আর তিনদিনেও ত্রাণ না মেলায় সেই হাহাকার ক্রমশ বদলে যাচ্ছে ক্ষোভে। যদিও ত্রাণ নিয়ে বাসিন্দাদের অভিযোগ পুরোপুরি মানতে চায়নি প্রশাসন। মালদহের জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য় বলেন, ‘‘যোগাযোগের সমস্যা, বৃষ্টির জন্য হয়ত সমস্যা হচ্ছে। তবে দুর্গতদের প্রত্যেকেই ত্রাণ পাবেন।’’
কালিয়াচক-৩ ব্লকের পারদেওনাপুর-শোভাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পার অনুপনগর গ্রামে ২০০৫ সাল থেকে দুর্গা পুজো করে আসছে স্থানীয় স্পোর্টস ক্লাব। গঙ্গার প্রবল জলোচ্ছাসে এবার পরিস্থিতি ভয়াবহ। গত এক সপ্তাহ ধরে গঙ্গা চরম বিপদসীমার উপর দিয়ে বয়ে চলেছে এলাকায়। ফলে গ্রামে জল শুধু বেড়েই চলেছে। গ্রামের যেখানে মণ্ডপ তৈরির কাজ চলছে সেখানেও এখন এক হাঁটু জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। প্রতিমাও অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় জলের উপরেই স্রেফ একটি পাটাতনের উপর দাঁড়িয়ে। কাজ বন্ধ। তিনদিন ধরে চলছে বৃষ্টি। তবু পুজো হবে গ্রামে। পুজো কমিটির সম্পাদক সুদেব সিকদার বলেন, ‘‘গঙ্গা যাতে তুষ্ট থাকে, ভাঙন ও বন্যা যেন ফি বছর না হয়, সেই কামনা করেই হাজার প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও দুর্গা আরাধনা আমরা করবই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy