ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় গত দু’দিন ধরে ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার রায়গঞ্জ শাখায় সমস্ত ধরনের আর্থিক লেনদেন থমকে রয়েছে। শুক্র ও শনিবার ব্যাঙ্কের কাজ করতে না পেরে চরম দুর্ভোগ ও হয়রানির শিকার কয়েক হাজার গ্রাহক। তাঁদের ক্ষোভের মুখে পড়ে বিএসএনএল কর্তৃপক্ষকে দুষছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।
ব্যাঙ্কের রায়গঞ্জ শাখার ম্যানেজার সমীরকুমার মাঝি ও অপারেশন ম্যানেজার পল্লব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সমস্যার কথা জানানো হয়েছে।’’ রিজিওনাল ম্যানেজার অমরেন্দ্র রায়ের দাবি, ‘‘বিএসএনএল কর্তৃপক্ষকে বার বার সমস্যার কথা জানানো হলেও তাঁরা পরিষেবা স্বাভাবিক করেননি। আপাতত একটি বেসরকারি মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবার তিনটি ডঙ্গল ব্যবহার করে সোমবার থেকে লেনদেন প্রক্রিয়া কিছুটা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।’’ ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা রুখতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে জানান তাঁরা।
কুলিক পক্ষিনিবাসের কর্মী ভরত সরকারের দাবি, ‘‘গত দু’সপ্তাহের পক্ষিনিবাসে প্রবেশের টিকিট বিক্রির ৫৯ হাজার টাকা ব্যাঙ্কে জমা দিতে পারছি না। প্রতিদিন টাকা বোঝাই ব্যাগ নিয়ে ব্যাঙ্কে যাতায়াতের সময় ছিনতাই হলে তার দায় কি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ নেবেন?’’ এই দুর্ভোগ ও হয়রানি রুখতে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ কেন বেসরকারি ইন্টারনেট পরিষেবা বা ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা স্বাভাবিক করছেন না, তা নিয়ে গ্রাহকেরা প্রশ্ন তুলছেন। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানান, শুরু থেকেই তাঁরা বিএসএনএল পরিষেবা ব্যবহার করছেন। ইতিপূর্বে এত বড় ধরনের সমস্যাও হয়নি। ফলে এখন বেসরকারি সংযোগ নিতে গেলে সে বিষয়ে ঊর্ধবতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচজনা প্রয়োজন।
তবে এ বিষয়ে বিএসএনএল কর্তৃপক্ষ মুখে কুলুপ এঁটেছেন। রায়গঞ্জের টেলিকম ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার প্রদীপ সরকার কোনও মন্তব্য করতে চাননি। সংস্থার এক আধিকারিক জানান, শহরের বাড়িগুলিতে পানীয় জল সরবরাহের পাইপলাইন বসানোর জন্য মাটি খোঁড়ার কাজ চলছে। তার জেরে কোথাও অপটিক ফাইবার কেবল কেটে গিয়ে পরিষেবা বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকতে পারে। দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।
ব্যাঙ্কের ওই শাখায় প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহকের সেভিংস ও কারেন্ট অ্যাকাউন্ট রয়েছে। ৫০০ জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীর পেনশনও ওই শাখা থেকে হয়। রায়গঞ্জের ১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর সুখেন্দু বিশ্বাস ২৪ হাজার টাকার চেক নিয়ে একাধিক বার ব্যাঙ্কে গিয়ে ফিরে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আত্মীয়ের চিকিত্সা চলছে। অথচ টাকা তুলতে পারছি না। সমস্যা সমাধানে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দ্রুত উদ্যোগী হওয়া উচিত।’’
শহরের শিলিগুড়িমোড় এলাকার বাসিন্দা পেশায় নির্মাণ ঠিকাদার শক্তি দত্ত বলেন, ‘‘দু’দিন ধরে একাধিক বার ব্যাঙ্কে গিয়ে ৫০ হাজার টাকা তুলতে পারিনি। ফলে শ্রমিকদের মজুরি ও নির্মাণসামগ্রী কেনার কাজ আটকে রয়েছে। এ রকম চলতে থাকলে তো লোকসান হয়ে যাবে।’’ এখন সমস্যার দ্রুত সমাধানে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা নেন, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy