দুর্নীতির নানা অভিযোগের তদন্ত চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। ‘ভুলে ভরা’ ফলাফলের অভিযোগ তুলে আন্দোলন করছেন পড়ুয়ারাও। এমনই পরিস্থিতিতে শুক্রবার গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়া উপাচার্য হিসেবে কাজে যোগ দিলেন স্বাগত সেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে যে নৈরাজ্য বা হতাশা রয়েছে সেকথা তাঁকে অনেকেই জানিয়েছেন বলে এ দিন স্বীকারও করে নেন নতুন উপাচার্য। তবে তাঁর দাবি, দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে সেখান থেকেই নতুন কিছু উঠে আসে এবং তিনি সেই আশাই করেন। ছাত্রছাত্রীদের সমস্যাই যে তাঁর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাবে তা এ দিন তিনি অকপটে জানিয়েছেন।
তবে মাত্র ছ’মাসের জন্য তাঁকে এই পদে নিয়োগ করেছে রাজ্য সরকার। ফলে এই স্বল্প সময়ে তিনি কতটা কাজ করতে পারবেন তা নিয়ে সন্দিহান জেলার শিক্ষা মহলের একাংশ।
গত ১৫ নভেম্বর গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে ইস্তফা দেন গোপালচন্দ্র মিশ্র। রাজ্য উচ্চশিক্ষা দফতর সেই পদে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী উপাচার্য স্বাগতবাবুকে নিয়োগ করে। এ দিন কাজে যোগ দিয়ে তিনি বলেন, “আমার কার্যকাল মাত্র ছ’মাস। এই অল্প সময়ের মধ্যে দীর্ঘকালীন কোনও পরিকল্পনা নিতে পারব না। তবে যেটুকু শুনেছি এখানে কতগুলি অসুবিধা রয়েছে। আমি মূলত শিক্ষক। তাই, ছাত্রছাত্রীদের সমস্যাই আমার কাছে প্রাধান্য পাবে। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় মালদহের গর্ব। এই বিশ্ববিদ্যালয় যাতে ভারতের মধ্যে অন্যতম হয়ে উঠতে পারে সেটাই লক্ষ্য।”
স্বাগতবাবু জানান, শুনেছি এখানে রেজিস্ট্রার-সহ অনেক পদে স্থায়ী আধিকারিক নেই। সেজন্য বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে অনেককে চাপে কাজ করতে হচ্ছে। তাঁর আশ্বাস, ‘‘উচ্চ শিক্ষা দফতরের সঙ্গে কথা বলে সেই শূন্যপদগুলি পূরণের চেষ্টা করব।’’
গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রীয় উচ্চতর শিক্ষা অভিযান (রুশা) প্রকল্পের টাকা খরচ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারের নির্দেশে গঠিত হয়েছে তদন্ত কমিটি। বিত্ত আধিকারিকেরও বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত এখন চলছে। সে সব নিয়ে তিনি বলেন, “দুর্নীতি হয়েছে কি, হয়নি তা জানিনা। সবটাই শোনা। তদন্ত চলছে। তদন্তের রিপোর্ট পেলে উচ্চ শিক্ষা দফতরের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হবে।”
দুর্নীতির অভিযোগের সঙ্গেই সদ্য প্রকাশিত প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের প্রকাশিত ফলাফল ‘ভুলে ভরা’ বলে অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ চরমে তুলেছেন পড়ুয়ারা। তা নিয়েও ওয়াকিবহাল উপাচার্য।
এ দিনই তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সামিনেশন কমিটির সঙ্গে বৈঠকও করবেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় ও তার অধীনে কলেজগুলিতে যাতে পঠন-পাঠন ঠিকঠাক হয়, পরীক্ষা সময়ে নেওয়া ও সময়ে নির্ভুল ফল প্রকাশ হয়, ভর্তি প্রক্রিয়া যাতে সঠিক নিয়ম মেনে হয় সেটাই আগে করতে হবে।’’ এ জন্য শীঘ্রই তিনি আধিকারিকদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত ২৫টি কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy