শিলিগুড়ির হাসমিচক লাগোয়া বিধানরোডে রাস্তার গা ঘেঁষে গড়ে ওঠা বিতর্কিত বহুতল বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স তৈরির কাজ বন্ধ করা এবং তা ভেঙে ফেলার দাবি উঠেছে। ওই কাজের দায়-দায়িত্ব পুর কর্তৃপক্ষের উপর চাপালেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান গৌতম দেব। রবিবার এসজেডিএ’র দফতরে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে গত বছর এবং এই আর্থিক বছরে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজের রিপোর্ট প্রকাশ করেন তিনি। তখনই গৌতমবাবু বলেন, ‘‘প্রকল্প যাঁরা শুরু করেছিল ১০ বছর বাদে তা নিয়ে ভুল স্বীকার করছেন। ওই বিতর্কিত ভবনের বিষয়টি নিয়ে আমি নির্মাণকারী সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছি। এসজেডিএ-ও তার অংশীদার। কিন্তু চুক্তি করে বাম জমানায় তাদের কাজ দেওয়া হয়েছে। তাই কিছু করা যাচ্ছে না। এখন পুরসভাই পারে এর দায়-দায়িত্ব নিতে।’’
প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা শিলিগুড়ি পুরসভায় বামেদের মেয়র পদের দাবিদার অশোক ভট্টাচার্য জানিয়েদেন, তিনি এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান থাকার সময় ওই বাণিজ্যিক ভবন তৈরির কাজ শুরু হলেও পরবর্তীতে তিনি বুঝতে পেরেছেন ওই জায়গা রাস্তা চওড়া এবং পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখলেই ঠিক হত। বাণিজ্যিক ভবন তৈরির কাজ না করলেই হত। প্রকাশ্যে ভুল স্বীকার করে তা জানিয়েছেনও। এ দিন অশোকবাবু বলেন, ‘‘রাজ্যে চার বছর এই সরকার রয়েছে। তা ছাড়া এসজেডিএ তাদের হাতে রয়েছে। তারা চাইলে ওই বাণিজ্যিক ভবন তৈরির চুক্তি বাতিল করে নির্মাণ কাজ বন্ধ করতেই পারতেন। তা করতে পারেননি।’’ গৌতমবাবুর কটাক্ষ, ওই বাণিজ্যিক ভবন তৈরি, সেতু সংযোজক রাস্তার জায়গার ব্যবস্থা না করেই চতুর্থ মহানন্দা সেতু তৈরির মতো নানা ভুল পরিকল্পনা সে সময় নেওয়া হয়েছিল। অশোকবাবুর দাবি, ‘‘রাজ্যে নতুন সরকার আসার পরেই এসজেডিএ’র তরফে মহানন্দা অ্যাকশন প্লান-সহ নানা প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছে। নানা ভুল কাজ হয়েছে।’’
বিধানরোডে নির্মীয়মাণ ওই মার্কেট কমপ্লেক্সের জন্য রাস্তার জায়গা অপ্রশস্ত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। শহরে পার্কিংয়ের জায়গার অভাব। সে জন্য বিতর্কিত ভবনের অংশে রাস্তা চওড়া করে বাকি অংশে পার্কিং প্লাজা করার দাবি ওঠে। বাম জমানায় প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান থাকাকালীন অশোকবাবু রেলের কাছ থেকে ওই জায়গা পার্কিংয়ের প্রকল্পের কথা বলে কম দামে কেনেন। সেখানে বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স তৈরির কাজ শুরু করে বেসরকারি সংস্থা। তাদের সঙ্গে অংশীদারিত্বে রয়েছে এসজেডিএ-র। সেখানে কিছু পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে বলে জানানো হয়। বিতর্কিত নির্মীয়মাণ ওই ভবন ভেঙে ফেলার দাবি ওঠে। আন্দোলনে নামে যুব কংগ্রেস। নির্মাণ কাজ স্থগিত হয়ে পড়ে। এর পর ২০০৯ সালের শেষের দিকে কংগ্রেস পুরবোর্ড গড়ে। নির্মাণকারী সংস্থার সঙ্গে কথা বলে প্রকল্পের অংশ থেকে রাস্তা চওড়া করতে জায়গা নেওয়া হয়। সেই মতো নির্মীয়মাণ ভবনের গা ঘেঁষে রাস্তা কিছুটা চওড়া করা হয়। এর পর পুরসভার অনুমোদনে ফের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। তাতেও বিধানরোডের ওই অংশ যথাযথ ভাবে চওড়া করা যায়নি বলে অভিযোগ। তা ছাড়া মার্কেট কমপ্লেক্স চালু হলে ওই এলাকায় যানজট হবে বলে তাঁদের একাংশের আশঙ্কা। সে কারণে ওই জায়গায় পার্কিংয়ের ব্যবস্থার দাবি ওঠে। প্রাক্তন মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, ‘‘ওই কাজ বন্ধ করতে হলে এসজেডিএ’র তরফেই করা সম্ভব। আমরা পুরবোর্ডে থাকার সময় গৌতমবাবুর সম্মতি নিয়েই রাস্তা চওড়া করার সিদ্ধান্ত হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy