মেল মেডিক্যাল ওয়ার্ডই হোক বা ফিমেল, মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এই দু’টি ওয়ার্ডে একটি শয্যায় দু’জন করে রোগী থাকাটা যেন দস্তুর হয়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবারও দু’টি ওয়ার্ডের চিত্র একই। রোগীদের ভিড়ে ঠাঁই নেই, ঠাঁই নেই অবস্থা। প্রায় একই অবস্থা মাস কয়েক আগে চালু করা মাদার চাইল্ড হাবেরও। সেখানেও শিশু ও প্রসূতি বিভাগে একই শয্যায় দু’জন করে রোগী থাকছেন। অবশেষে বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এই হাসপাতালে শয্যা বাড়ানোর কথা ঘোষণা করায় কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরছে রোগী ও তাঁদের পরিজনদের মধ্যে। যদিও পরিকাঠামো, ডাক্তার, নার্স, জিডিএ বা সুইপার না বাড়িয়ে শয্যা বাড়ানো হলে পরিষেবা কতটা মিলবে, তা নিয়ে সংশয়ে ভুক্তভোগীরা।
মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে খবর, এখন এই হাসপাতালে ৭৫০টি শয্যা সরকারি ভাবে রয়েছে। মেল মেডিক্যাল ১ ও ২, ফিমেল মেডিক্যাল, মেল সার্জিক্যাল, ফিমেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ড, বার্ন ওয়ার্ড ছাড়াও ১০ শয্যার সিসিইউ, মাদার চাইল্ড হাবে শিশু বিভাগ, এসএনসিইউ, প্রসূতি বিভাগ প্রভৃতি রয়েছে। কিন্তু তাতেও রোগী সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। তবে রোগীর প্রচণ্ড চাপ থাকায় বাড়তি কিছু শয্যাও বকলমে চলছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, মালদহ জেলা তো বটেই, এমনকী পাশের তিন জেলা দুই দিনাজপুর ও মুর্শিদাবাদ এবং প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ড ও বিহার থেকেও প্রচুর রোগী ভর্তি হন এই হাসপাতালে।
সাড়ে সাতশো শয্যার হাসপাতালে গড়ে রোজ ১৩০০ থেকে ১৪০০ রোগী ভর্তি থাকেন। এ দিকে, রোগীর এত চাপ থাকলেও ডাক্তার রয়েছেন ১৯৫ জন, নার্স ৩৭০ জন। এঁদের দিয়েই পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকার এই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রায় ২৭৪টি শয্যা বাড়াতে চলেছে। এর মধ্যে ২৫০টি মাদার চাইল্ড হাব ও মেল-ফিমেল মেডিক্যাল ওয়ার্ডে। এ ছাড়া ১২ শয্যার পিকু, ৬ শয্যার নিকু ও ৬ শয্যার এইচডিইউও চালু হবে। কিন্তু পরিকাঠামো না বাড়িয়ে বাড়তি শয্যায় পরিষেবা দেওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
হাসপাতালের সুপার তথা সহকরারী অধ্যক্ষ অমিত দাঁ বলেন, ‘‘হাসপাতালের মূল ভবন থেকে শিশু, এসএনসিইউ, প্রসূতি বিভাগগুলি মাদার চাইল্ড হাবে চলে যাওয়ায় সেই ওয়ার্ডগুলির ঘর ফাঁকা পড়ে রয়েছে। সেগুলি সংস্কার করে শয্যা বাড়ানো যাবে। ওই ঘরগুলি সংস্কার করার কাজও শুরু হয়েছে। শয্যা বাড়ানোয় ডাক্তার ও নার্স নিয়ে তেমন কোনও সমস্যা না হলেও জিডিএ এবং সুইপার-সহ নিরাপত্তা কর্মী কম থাকায় পরিষেবায় সমস্যা হবে। এ নিয়ে স্বাস্থ্যভবনে কথা বলা হবে।’’
মেল মেডিক্যাল ওয়ার্ডে একই শয্যায় ভর্তি রয়েছেন আমিনুল শেখ ও আজগর আলি। তাঁরা জানান, একেই প্রচণ্ড গরম। মাথার উপরে ফ্যান ঘুরছেই না। তাতে একটি শয্যায় দু’জন করে থেকে চিকিত্সা করাতে হচ্ছে। সরকার শয্যা বাড়ালে একটি বেডে অন্তত একজন করে রোগী থাকতে পারবেন বলে আমাদের আশা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy