বাড়ির মেজো মেয়ের বিয়ে। সেই হিসেবে প্রস্তুতি পর্ব প্রায় শেষ। সন্ধ্যায় বিয়ের লগ্ন। তাই উঠোনে ছাদনাতলা তৈরি। কিন্তু পাত্রী নাবালিকা, এই খবর পেয়ে বিয়ে রুখল পুলিশ ও চাইল্ড লাইন। সোমবার ইসলামপুর থানার শিয়ালতোড় এলাকার ঘটনা।
ইসলামপুর থানার শিয়ালতোড় এলাকাতে বল্লভ পরিবারের মেজ মেয়ের বিয়ের প্রস্তুতি নিয়ে মেতেছিলেন পরিবারের লোকেরা। বিয়ের প্যান্ডেলের কাপড় লাগানোর কাজ প্রায় শেষের দিকে, বিয়ে বাড়ির রান্নার প্রস্তুতি নিচ্ছিল রাঁধুনিরা, বাড়ির মহিলারাও জল ভরতে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন, তার মধ্যেই পুলিশ নিয়ে পৌঁছয় চাইল্ড লাইনের এক প্রতিনিধি। পুলিশ দেখে রীতিমত হতভম্ব হয়ে যায় গোটা পরিবার। তাঁরা বুঝতে পারছিলেন না হঠাৎ বাড়িতে পুলিশ কেন। পরে জানতে পারেন নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করতে পৌঁছেছে পুলিশ।
ইসলামপুরের শিয়ালতোড়ের ওই নাবালিকা মিলনপল্লি হাইস্কুলে পড়াশোনা করে। চার ভাইবোনের মধ্যে দ্বিতীয় সে। দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে এক বছর আগে। তবে তার মধ্যেই ইসলামপুর থানার দাড়িভিট এলাকার এক যুবক তাকে পছন্দ করায় পেশায় কৃষক এক ওই যুবকের সঙ্গে বিয়ে ঠিক করেন তার পরিবারের লোকেরা। তবে বিয়ে নিয়ে বাবা মায়ের কথা অমান্য করেনি ওই নাবালিকা। প্রায় ৮ শতাংশ সুদে প্রায় ৫০ হাজার নিয়ে মেয়ের বিয়ের প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন পেশায় কৃষক নবকুমার বল্লভ। ওই নাবালিকার পরিবারের লোকেদের দাবি, মেয়েটির বিয়ের বয়স হয়ে গিয়েছে। সেই কারণেই বিয়ে দিচ্ছিলেন তারা। তবে প্রশাসন খতিয়ে দেখেছে, সেই দাবি ঠিক নয়।
স্থানীয় তৃণমূল নেতাকে তথা আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি মহম্মদ সুলেমানকেও ডেকেছিলেন ওই নাবালিকার পরিবারের লোকজন। তিনি গিয়ে বিষয়টি মেনে নেওয়ার পরেই মেয়ের বিয়ে না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একটি মুচলেকা দেন ওই নাবালিকার বাবা। চাইল্ড লাইনের প্রতিনিধি উত্তম দাস বলেন, ‘‘নাবালিকার বিয়ের বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে বিয়ে বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের সাহায্য নেওয়া হয়।’’ নাবালিকার বিয়ে বন্ধ হওয়ার বিষয়ে ইসলামপুরের মিলনপল্লি স্কুলের প্রধান শিক্ষক নীলকমল দাস বলেন, ‘‘ভালই কাজ করেছে প্রশাসন। মেয়েটি আবার স্কুলে আসতে পারবে। স্কুলে বাল্য বিবাহ নিয়ে একটি সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy