প্রতীকী ছবি।
মোবাইল ফোন সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার অভিযোগে মঙ্গলবার বাগডোগরার শুভমায়া এসএন হাই স্কুলের পরীক্ষা কেন্দ্রে যে ১৮ জন পরীক্ষার্থীর খাতা বাতিল করা হয়েছে, তারা বাগডোগরা চিত্তরঞ্জন হাইস্কুলের পড়ুয়া। বহিরাগত পরীক্ষার্থী হিসেবেই তারা নথিভুক্ত। তাদের একাংশ মালদহের বাসিন্দা। তবে সেই দলে শিলিগুড়ির বাসিন্দাও রয়েছে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি। শতাধিক বহিরাগত পরীক্ষার্থীর নাম ওই স্কুল থেকে নথিভুক্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন পেশায় যুক্ত মাধ্যমিক পাশ না-করা ওই পরীক্ষার্থীদের একাংশের মধ্যে যতটা বেপরোয়া ভাবে নকল করার প্রবণতা দেখা গিয়েছে, তাতে উদ্বিগ্ন শিক্ষক মহল। দালাল মাধ্যমে ওই পরীক্ষার্থীরা মোটা টাকা খরচ করে পরীক্ষায় বসছেন কিনা, সেই প্রশ্নও উঠেছে।
এর পিছনে প্রশ্নপত্র ফাঁসের চক্র সক্রিয় বলে সন্দেহ শিক্ষকদের। ফি বছর বাগডোগরার চিত্তরঞ্জন স্কুল থেকেই এ ধরনের বহিরাগত পরীক্ষার্থীরা মাধ্যমিক দিয়ে থাকেন। তাদের নথিভুক্ত করানো থেকে পরীক্ষায় বসানো, সবের পিছনেই দালালচক্র সক্রিয় বলে শিক্ষকদের একাংশই মনে করছে। তাঁদের মতে, পরীক্ষার আগের দিন বহিরাগতরা স্থানীয় কোনও হোটেলে এসে ওঠেন। তাঁদের সঙ্গে পরিচিত ছেলেমেয়েরাও আসেন। অভিযোগ, তাদের মোবাইলে প্রশ্নপত্র চলে আসে। মোবাইল ফোনে উত্তর চালাচালি হতে থাকে। মঙ্গলবার পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল নিয়ে তা দেখেই নকল করার সময় ধরা পড়ে এক পরীক্ষার্থী। তাকে জেরা করে বাকিদের থেকে সব মিলিয়ে ১৯টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। ঘটনার যথাযথ তদন্তের দাবি তুলেছেন শিক্ষকদের একাংশ।
ওই পরীক্ষার্থীদের নিয়ে বিপাকে বাগডোগরা চিত্তরঞ্জন হাইস্কুলের শিক্ষকদের অনেকে। আবার অনেকে বিষয়টি জানেন না বলেও দাবি করেন। প্রধান শিক্ষিকা তপতী হালদার বলেন, ‘‘২০১৭ সাল থেকেই আমরা ওই পরীক্ষার্থীদের নথিভুক্ত করাতে চাইছি না। তবে পর্ষদের অনুরোধেই ওই কাজ করতে হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে ঢোকানোর আগেই ভাল করে তল্লাশি করা উচিত ছিল।
পর্ষদের তরফেই বা কেন চিত্তরঞ্জন হাইস্কুলকে উত্তরবঙ্গে বহিরাগত পরীক্ষার্থীদের নথিভুক্তকরণের জায়গা হিসাবে বেছে নেওয়া হচ্ছে? পরীক্ষার্থীদের অনেকেই জানায়, পাঁচ হাজার করে টাকা তাদের খরচ করতে হয়েছে পরীক্ষায় বসার জন্য। অথচ স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে, ২৩০ টাকা ফি লাগে বহিরাগত পরীক্ষার্থীদের জন্য। স্কুল কর্তৃপক্ষ টেস্ট পরীক্ষা, পরিকাঠামো ব্যবহারের জন্য ১০০ টাকা নেন। বাকি টাকা বিভিন্ন স্তরে দালালরা নিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ। পাশ করিয়ে দিতে পারলে বেশি টাকা চাওয়ার অভিযোগও ওঠে। বুধবার পরীক্ষা দিয়ে বহিরাগত পরীক্ষার্থী মহম্মদ রবিউল হক বলে, ‘‘সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত পাঁচ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।’’
পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে এই আদায় করা টাকার ভাগ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। প্রধান শিক্ষিকা জানান, বাড়তি টাকা কে কী ভাবে নেয়, তা তাঁদের জানা নেই। মধ্য শিক্ষা পর্যদের উত্তরবঙ্গ আঞ্চলিক শাখার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পর্ষদের তরফে কেউ এ ব্যাপারে মুখ খুলতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy