প্রতীকী ছবি।
ভোট দেবেন? প্রশ্নটা শুনেই ঝেঁজে উঠে বললেন, ‘‘ভোট তো দেবই। প্রতিবাদের রাস্তা তো ওটাই।’’
কোচবিহারের দিনহাটার বলরামপুর রোডের কোয়ালিদহ গ্রামের সবিতা ভৌমিক এখনও ভুলতে পারেন না সেই দিন। ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তখন সবিতাদেবীরা থাকতেন দিনহাটা শহরের বাবুপাড়ার ভাড়া বাড়িতে। ১৩ নভেম্বর এটিএমের সামনে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন সবিতাদেবীর স্বামী ধরণীকান্ত ভৌমিক (৫৬)। প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক ধরণীবাবুর রোজগারের উপরেই চলত সংসার। সংসারের প্রয়োজনেই সে দিন সকালেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে চলে গিয়েছিলেন এটিএম-এ। কয়েকটি এটিএম-এ টাকা ছিল না বলে তাঁদের প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত একটি এটিএম-এ টাকা রয়েছে শুনে সেখানে বিরাট লাইন পড়ে। ধরণীবাবুও ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেই লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখনই তাঁর শরীর খারাপ লাগছিল। বাড়ি ফিরে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। দু’দিন দু’রাত্রি নার্সিংহোমে ছিলেন। কিন্তু বাঁচানো যায়নি তাঁকে।
সবিতাদেবী বলেন, ‘‘নোটবন্দি করে কত কালো টাকা উদ্ধার হয়েছে, জানি না। কিন্তু আমার সংসার ধসে গিয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এখন কাগজে, টেলিভিশনে প্রায়ই দেখি নোটবন্দি নিয়ে কথা হচ্ছে। তা যে ভুল ছিল, এমন কথাও বলছেন অনেক অর্থনীতিবিদ। কিন্তু সে সব শুনে আমাদের কী হবে? আমাদের পরিবারে যে বিপর্যয় হয়েছে, তা সামলাবো কী করে?’’ ধরণীবাবুর এক ছেলে, এক মেয়ে। ছেলে শৈবাল দিনহাটা কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। মেয়ে শ্রাবণী স্নাতকোত্তর পাঠ শেষ করেছেন। সেই সময় দুই সন্তানকে নিয়ে কী করবেন, ভেবে উঠতে পারছিলেন না। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, ধরণীবাবুর বেতনের টাকাই একমাত্র ভরসা ছিল। তা দিয়েই সংসার, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা চলত। সেই টাকা আচমকা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে শুরু হয় সবিতাদেবীর লড়াই। পেনশন চালু না হওয়ায় আরও বিপদের মুখে পড়তে হয়। তিনি বলেন, “কত নেতা-সাংসদ তখন বাড়িতে এসেছিলেন। ভেবেছিলাম পেনশন দ্রুত চালু হবে। তা হয়নি। দেড় বছর সময় লেগেছে।” কিন্তু তার পরে কেউই প্রায় প্রতিশ্রুতি রাখেননি।
তাঁদের পরিবারে এক জনের চাকরি খুব দরকার। সবিতাদেবীর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী চাকরির আশ্বাস দিয়েছিলেন। আমরা সেই আশাতে এখনও আছি।’’ এই পরিবারের কী সাহায্য করা যায় তা দেখা হচ্ছে বলে প্রশাসনিক সূত্র জানিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy