কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারের লোকসভা ভোটের প্রার্থীদের বেশির ভাগই আয়করের হিসেব দিতে নারাজ।
বিভিন্ন গুরুতর মামলায় অভিযুক্তদের ভোটে দাঁড়ানো উচিত কি না, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রের লোকসভা ভোটে মোট ১৮ জন প্রার্থীর মধ্যে ৬ জনের বিরুদ্ধেই এমন মামলা রয়েছে। তাঁদের কারও কারও বিরুদ্ধে খুন, বোমাবাজির মতো অভিযোগও রয়েছে। নির্বাচন কমিশনে দায়ের করা প্রার্থীদের হলফনামা আলোচনা করে এই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে পর্যবেক্ষণ সংস্থা, ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকশন ওয়াচ’ এবং ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস’ (এডিআর)।
ওই দুই সংস্থার যৌথ সংস্থার রিপোর্ট বলছে, ওই দুই কেন্দ্রে বিজেপির দুই প্রার্থী, জন বার্লা এবং নিশীথ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। মামলা রয়েছে কোচবিহারে ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী গোবিন্দচন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধেও। এসইউসি-র এক প্রার্থী, কামতাপুরি পিপলস পার্টি (ইউনাইটেড)-র এক জন এবং এক জন নির্দল প্রার্থীর বিরুদ্ধেও মামলা রয়েছে। জন বার্লার বিরুদ্ধে চুরি, বিস্ফোরক আইন, খুনের চেষ্টা, সরকারি কর্মীকে মারধরের মতো নানান ঘটনায় মোট ৯টি মামলা রয়েছে। নিশীথের বিরুদ্ধে খুন, খুনের চেষ্টা, শ্লীলতাহানি, প্রতারণা, চুরির মতো নানান ঘটনায় একাধিক মামলা রয়েছে। গোবিন্দবাবুর বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতির মতো অভিযোগ রয়েছে। নিশীথ অবশ্য বলেন, ‘‘মামলা কারও নামে কেউ করতেই পারে। তার মানে তো এই নয় তিনি দোষী প্রমাণিত হচ্ছেন।’’ গোবিন্দর দাবি, ‘‘দল বদলাতে চাপ দিতেই আমার বিরুদ্ধে শাসক দল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলা করেছে।’’
সম্প্রতি বাঁকুড়ার বিষ্ণপুরের বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খানের আগাম জামিনের মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি মনোজিৎ মণ্ডলের ডিভিশন বেঞ্চ মন্তব্য করেছিল, কোনও মামলায় অভিযুক্ত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উচিত দলকে তাঁকে প্রার্থী মনোনীত করতে নিষেধ করা। এ দিন ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকশন ওয়াচ’-এর রাজ্য কো-অর্ডিনেটর উজ্জ্বয়িনী হালিম বলেন, ‘‘সামাজিক সংগঠন হিসেবে আমরাও বারবার রাজনৈতিক দলগুলিকে অনুরোধ করেছি, অভিযুক্তদের প্রার্থী না করতে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ লোকসভা ভোটের প্রথম দফার দুই কেন্দ্রে ৩৩ শতাংশ প্রার্থীর বিরুদ্ধে নানান গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
স্থানীয় সূত্রের খবর, জন ও নিশীথ, দু’জনেই একদা তৃণমূলে ছিলেন। দল বদলে বিজেপিতে গিয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া বেশির ভাগ মামলাই কিন্তু তৃণমূলে থাকাকালীন হয়েছে। জন দাবি করেন, ‘‘আমার নামে যে যে থানায় যে যে ধারায় মামলা রয়েছে তার সবগুলিই বিস্তারিতভাবে হলফনামায় লিখেছি।’’
ওই দুই কেন্দ্রের প্রার্থীদের আর্থিক অবস্থার তথ্যও তুলে ধরেছে পর্যবেক্ষণ সংস্থার রিপোর্ট। তাতে দেখা গিয়েছে, সব থেকে ধনী প্রার্থী পরেশচন্দ্র অধিকারী। তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৪ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা। তাঁর মধ্যে অস্থাবর সম্পত্তি প্রায় ২ কোটি ৬ লক্ষ টাকা। ১৮ জন প্রার্থীর গড় সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৫৫ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকা। সম্পত্তির নিরিখে এগিয়ে রয়েছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল প্রার্থী দশরথ তিরকের মোট সম্পত্তি প্রায় ৯০ লক্ষ টাকা।
তবে আয়করের হিসেব দিতে কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারের লোকসভা ভোটের প্রার্থীদের বেশির ভাগই নারাজ। নির্বাচন কমিশনে জমা পড়া প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে সমীক্ষকেরা দেখিয়েছেন, ১৮ জনের মধ্যে ১০ জন প্রার্থী আয়কর রিটার্ন জমা দেননি। সেই তালিকায় আলিপুরদুয়ারের আরএসপি প্রার্থী, দুই কেন্দ্রের এসইউসি প্রার্থী রয়েছেন। আলিপুরদুয়ারের এসইউসি প্রার্থী-সহ তিন জন প্যানও জমা দেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy