পায়ে পায়ে: শিলিগুড়িতে কৃষকসভার মিছিলে কর্মী ও সমর্থকরা। বৃহস্পতিবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
বড় মিছিল হল। মিছিলে পা মেলালেন উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা কৃষক, শ্রমিকরা। রাজ্যজুড়ে ভোটের বাজারে মন্দার মধ্যেও শিলিগুড়িতে বামেদের মিছিলের দৈর্ঘ্য নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। অন্য অনেক দলের নেতারাই স্বীকার করছেন বৃহস্পতিবার উত্তরকন্যা অভিযানে শিলিগুড়িতে সিপিএমের কৃষকসভার যে মিছিল হয়েছে তা ছিল শহর স্তব্ধ করে দেওয়ার মতো।
এ দিন এই মিছিলে এসেছিলেন কৃষকসভার কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অশোক ধাওয়াল। মিছিল শেষে তিনবাতি মোড়ে সভা করেন সিপিএম ও কৃষকসভার নেতারা। সেই সভা থেকে তৃণমূলকে আক্রমণ করেন কৃষকসভার কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অশোক ধাওয়াল। বলেন, ‘‘তৃণমূলের সন্ত্রাস রুখে লাল ঝান্ডাই পশ্চিমবঙ্গে ফের পরিবর্তন আনবে।’’ অথচ কোন পথে আসবে সেই পরিবর্তন সেই দিশার কথা বলেননি তিনি। সেই একই প্রশ্ন দেখা গেল কর্মীদের মধ্যেও। সভায় এসেছিলেন একাধিক চা বাগানের শ্রমিকেরা। তাঁদেরই একজন নকশালবাড়ির একটি চা বাগানের শ্রমিক সুমিতা ওরাওঁ। বাড়ি ফেরার সময় তিনি বলেন, ‘‘অনেক মিটিং, মিছিল করছি, আরও করব। তবে কী ধরনের আন্দোলন করলে ন্যূনতম মজুরি মিলবে সেটা নেতারা বলতে পারছেন না। ওনারা বলুক এইভাবে আন্দোলন করলে ফল পাওয়া যাবে তাহলে আমরা সেভাবেই আন্দোলন করব।’’ কোন পথে আন্দোলন হবে সেরকম কথা শিলিগুড়ির সিপিএম বিধায়ক ও মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের বক্তব্যেও শোনা যায়নি। পুরনিগমের প্রতি রাজ্যের বঞ্চনার অভিযোগই প্রাধান্য পেয়েছে তাঁর বক্তব্যে।
এ দিন বেলা ১টা নাগাদ শিলিগুড়ির মহানন্দা মোড় থেকে মিছিল শুরু হয়। উত্তরকন্যার প্রায় এক কিলোমিটার আগে তিনবাতি মোড়ে ব্যারিকেড করে মিছিল আটকায় পুলিশ। বাধা পেয়ে তিনবাতি রেল মাঠে ঘণ্টাতিনেক সভা করে সংগঠন। সভা চলাকালীন হবিবপুরের সিপিএম বিধায়ক খগেন মুর্মুর নেতৃত্বে পাঁচ জনের একটি প্রতিনিধি দল উত্তরকন্যায় গিয়ে দাবিপত্র জমা দেন। অভিযোগ প্রতিনিধি দলকে প্রথমে উত্তরকন্যার গেটেই আটকে দেওয়া হয়েছিল। সেসময় গেটেই আঠা দিয়ে দাবিপত্র সাঁটিয়ে দিতে উদ্যত হন তাঁরা। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে উত্তরকন্যার এক প্রশাসনিক কর্তা দাবিপত্র জমা নেন। প্রতিনিধি দলের সদস্য তমসের আলি জানিয়েছেন, ‘‘কৃষকদের ফসলের দাম বাবদ উৎপাদন খরচের দেড়গুণ বেশি টাকা দেওয়া, বছরে ২০০ দিন কাজ, তিস্তার সেচ প্রকল্পের কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন সহ ১২ দফা দাবি জানান হয়েছে।’’
অশোক ধাওয়ালের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল গুন্ডা নামিয়ে গোটা রাজ্যে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেছে। সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে।’’ যদিও সেই বক্তব্যকে আমল দিতে নারাজ উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘সিপিএম এখন দিশেহারা। সন্ত্রাস কাকে বলে সেটা সিপিএমের ৩৪ বছরের রাজত্বে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy