কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা। —ফাইল চিত্র।
জোরকদমে দুর্ঘটনাস্থলের কাজ চলছিল। রেলকর্মীরা নীচে গড়িয়ে পড়া সব পাথর লাইনের ধারে তুলে দিচ্ছিলেন। পাথরের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে আসছিল জুতো, ছেঁড়া চটি, রক্তমাখা ছেঁড়া পোশাক, ব্যাগের অংশ। সোমবার ফাঁসিদেওয়ার ছোট নির্মল জোতের রেল দুর্ঘটনার পরে কেটে গিয়েছে ২৪ ঘণ্টা। মঙ্গলবার সকালে লাইনের ধারের ভেঙে পড়া কামরা, ইঞ্জিনের একাংশ, এলাকার মানুষের ভিড়, রেলের পুলিশকর্মীদের তৎপরতার মাঝে টুকরো টুকরো হয়ে পড়ে থাকা সে সব জিনিসপত্র বেরিয়ে আসছিল।
এ দিনও এলাকার মানুষের ভিড় ছিল দুর্ঘটনাস্থলে। নির্মল জোতে ইদের উৎসব থমকে গিয়েছিল এক লহমায়। স্থানীয়দের মধ্যে অনেকেরই কথায় ফিরে ফিরে আসছিল রক্তাক্ত সব মুখের কান্না, দুর্ঘটনায় পড়া কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস থেকে বেরোতে না পারার যন্ত্রণার আর্তনাদ। এ দিন এলাকা জুড়ে থমথমে ভাব। এলাকার কিছু পরিবার নিয়মরক্ষায় উৎসব পালন করেছেন বলে জানান। কিন্তু সেই উৎসবে আনন্দ নেই। জানান জাহির হুসেন, মহম্মদ রফিকেরা। জাহির বলেন, ‘‘দিনভর উদ্ধারকাজে ব্যস্ত ছিলাম। গা, হাত-পায়ে ব্যথা হয়েছে। তাতে কি আর উৎসব ভাল লাগে?’’ রফিক বলেন, ‘‘নিয়মরক্ষায় উৎসব হয়েছে। রাত জেগে ঘটনার ছবি মনে পড়ছিল।’’ রেল লাইনের আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ছেঁড়া রক্তাক্ত পোশাক, বাচ্চার জুতো দেখে মাঝেমধ্যেই শিউরে উঠছিলেন ওঁরা।
এ দিন সকালে ঘটনাস্থলে যান উত্তর-পূর্ব রেলের সেফটি কমিশনার জনককুমার গর্গ। তিনি এলাকা ঘুরে দেখেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। সিগন্যাল এবং গতিতে কোথায় কী সমস্যা রয়েছে তা দেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ ঘটনাস্থলে উপস্থিত কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম সুরেন্দ্র কুমার বলেন, ‘‘অটো সিগন্যাল বিকল হলে, কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়। তা সত্ত্বেও কেন মালগাড়িটি এত জোরে চলল, তা খতিয়ে দেখতে হবে। তদন্ত হলে সবটাই পরিষ্কার হবে।’’
রেল সূত্রে খবর, দুর্ঘটনার জেরে, এলাকার ২০০ মিটার মতো লাইনের ক্ষতি হয়েছে। এ দিন সে অংশটি মেরামত করা হয়েছে। পরে, মেশিন দিয়ে কয়েক ধাপে পরীক্ষাও করা হয়। বৈদ্যুতিক লাইন ও পাটাতনের সংস্কারও চলেছে সমান তালে। এ দিন প্রথমে আপ লাইনে আওধ-অসম এক্সপ্রেস চলেছে। দু’টি মালবাহী ট্রেনও চলেছিল ক্ষতিগ্রস্ত লাইন সংস্কারের সময়। বৈদ্যুতিক লাইন কিছুটা দেরিতে ঠিক হওয়ার পরে ডাউন লাইনে ডিব্রুগড়-চণ্ডীগড় এক্সপ্রেস চলেছে। সেটি জলপাইগুড়িতে আটকে ছিল বলে দাবি। ওই ট্রেনের যাত্রীরা জানালেন, অন্তত ৯ ঘণ্টা আটকে ছিল ট্রেনটি।
রাঙাপানির স্টেশন ম্যানেজার অংশুকুমার অমরেশ এ দিন বলেন, ‘‘আমি কিছু বলব না। তদন্ত করে যদি দোষী প্রমাণ হয়, তবে রেল শাস্তি দেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy