Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চ

কাজের অগ্রগতি নিয়ে অসন্তোষ বিচারপতির

সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরির কাজের অগ্রগতি দেখে সন্তুষ্ট হতে পারলেন না কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত। শনিবার দুপুর নাগাদ তিনি জলপাইগুড়ি জেলা দায়রা আদালত পরিদর্শনে যান। বিকেলে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী পরিকাঠামো ঘুরে দেখেন। তিনি জানিয়েছেন, গত জানুয়ারি মাসে সার্কিট বেঞ্চের পরিবর্তিত পরিকাঠামোর প্রেজেন্টেশন হাইকোর্টে জমা দেওয়ার কথা ছিল।

নথি খতিয়ে দেখছেন হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত। নিজস্ব চিত্র।

নথি খতিয়ে দেখছেন হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৫ ০১:২৮
Share: Save:

সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরির কাজের অগ্রগতি দেখে সন্তুষ্ট হতে পারলেন না কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত। শনিবার দুপুর নাগাদ তিনি জলপাইগুড়ি জেলা দায়রা আদালত পরিদর্শনে যান। বিকেলে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী পরিকাঠামো ঘুরে দেখেন। তিনি জানিয়েছেন, গত জানুয়ারি মাসে সার্কিট বেঞ্চের পরিবর্তিত পরিকাঠামোর প্রেজেন্টেশন হাইকোর্টে জমা দেওয়ার কথা ছিল। এখনও সেটা হয়নি। আলোচনা করে জেনেছেন চলতি মাসে তা হতে পারে। সেটা হলে প্রেজেন্টেশন হাইকোর্ট দেখবে। আলোচনা হবে।

এ দিন দুপুর নাগাদ জেলা দায়রা আদালতে পৌঁছে যান হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত। তিনি জেলা আদালতের পরিকাঠামো থেকে বিভিন্ন সমস্যার দিক খতিয়ে দেখেন। জেলা বিচারক ছাড়াও আইনজীবীদের সঙ্গেও আলোচনায় বসেন। পরে বলেন, “জেলা আদালত পরিদর্শন করলাম। হাইকোর্টকে সমস্যার কথা জানাব। হাইকোর্টের মুখ্য বিচারপতি সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী পরিকাঠামো দেখতে বলেছেন। সেটাও দেখব।” বিকেলে তিনি চলে যান জাতীয় সড়কের পাশে সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরির কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে। সেখানে প্রকল্পের বাস্তুকারদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রকল্পের কাজ নিজের ক্যামেরায় বন্দি করেন।

রাজ্য সরকারের তরফে সার্কিট বেঞ্চের পরিবর্তিত পরিকাঠামোর প্রেজেন্টেশন এখনও হাইকোর্টে দেওয়া হয়নি জানার পরে আইনজীবী মহলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সার্কিট বেঞ্চ দাবি আদায় ও সমন্বয় কমিটির সম্পাদক কমলকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দ্রুত পরিবর্তিত পরিকাঠামোর প্রেজেন্টেশন হাইকোর্টে জমা দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। সময় নষ্ট করলে কাজের ক্ষতি হবে।” বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সম্পাদক তপন ভট্টাচার্য বলেন, “নতুন করে শুনছি সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী পরিকাঠামোর পরিমার্জিত পরিকল্পনাও নাকি এখনও হাইকোর্টে পাঠানো হয়নি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে আমরা আইন মন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলব।”

জলপাইগুড়ি জেলাশাসক পৃথা সরকার বলেন, ‘‘বেশ কয়েকবার প্রকল্পের নকশার রদবদল হয়েছে। সে কারণে প্রতিবার প্রস্তুতি নিতে হয়েছে। গত মার্চ মাসে পরিবর্তিত পরিকল্পনা পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু পূর্ত দফতরের কিছু প্রশাসনিক পরিবর্তনের কারণে একটু সময় লেগেছে। তবে দ্রুত ওই পরিকল্পনা পাঠানো হবে।’’

সার্কিট বেঞ্চ দাবি আদায় ও সমন্বয় কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৬৩ সাল থেকে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চের দাবিতে সোচ্চার হয়েছে জলপাইগুড়ি। ১৯৭৫ সালে বার অ্যাসোসিয়েশন ওই দাবিতে প্রস্তাব গ্রহণ করে। এর পরে ১৯৯৪ সালের ৬ জানুয়ারি বিচারপতি উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি দল জলপাইগুড়িতে আসেন। এলাকা পরিদর্শন করেন। বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সম্পাদক জানান, বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের পেশ করা রিপোর্ট হাইকোর্টের ফুল বেঞ্চ ১৯৯৮ সালের ১৫ জানুয়ারি অনুমোদন করে। ২০০৬ সালের ১৬ জানুয়ারি জলপাইগুড়িতে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ গঠনের বিষয়টি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অনুমোদন করে। এর পরে করলা দিয়ে আনেক জল গড়িয়েছে। অস্থায়ী ব্যবস্থা হিসেবে জেলা পরিষদের বাংলো ভাড়া নেওয়া হয়। সার্কিট হাউসে তৈরি করা হয় পৃথক পরিকাঠামো। সব শেষে জাতীয় সড়কের পাশে স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু হয়। কিন্তু এর পরেও সার্কিট বেঞ্চ অধরা থাকায় জলপাইগুড়িতে হতাশা বাড়ছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE