—প্রতীকী চিত্র।
গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতি এবং একাধিক বিষয়ে ওঠা অভিযোগের ভিত্তিতে ৪ জনের তদন্ত কমিটি গঠন করল উচ্চ শিক্ষা দফতর। কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবকুমার মুখোপাধ্যায়কে। ৪ সদস্যের তদন্তকারী দল ইতিমধ্যেই মালদহে চলে এসেছে। শনিবার সকাল থেকেই সেই দল শুরু করে দিয়েছে তদন্তের কাজ।
যে অধ্যাপকেরা গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্ম, দুর্নীতি, একাধিক অনিয়ম নিয়ে অভিযোগ তুলেছিলেন, শনিবার তাদের ডাকা হয়। অস্থায়ী উপাচার্য ও অস্থায়ী রেজিস্টার-সহ ডাকা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য আধিকারিকদেরও। তদন্ত কমিটির বাকি সদস্যেরা যুগ্ম অধিকর্তা ডিপিআই আশিস ঘোষ, উচ্চ শিক্ষা দফতরের সিনিয়র ল অফিসার জয়ন্ত ঢালি, উচ্চ শিক্ষা দফতরের ডেপুটি ফিনান্সিয়াল অফিসার শম্পা গুহ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একাধিক বিষয়ে প্রশ্ন চিহ্নের মুখে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া রুশার টাকা নয়ছয়, বেআইনি ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের এগজিউটিভ কাউন্সিল গঠন, বিভিন্ন বিভাগের প্রধানের বদলিতে অনিয়ম, ইতিহাস কংগ্রেস, বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভোকেশনে সরকারি অর্থ নয়ছয়, রস্টার না মেনে নিয়োগ এবং কোনও অনুমোদন ছাড়াই ১১৮ জন শিক্ষাকর্মীর নিয়োগ-সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে।’’
শনিবার ২-৩ জন করে অধ্যাপককে ডেকে তাঁদের বক্তব্য শোনেন তদন্তকারী দলের সদস্যেরা। কেন তাঁরা অভিযোগ করেছেন, কোথায় কোথায় কী কী ধরনের অনিয়ম হয়েছে— সব কিছুরই খুঁটিনাটি জানার চেষ্টা করেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, লক্ষ লক্ষ টাকার খরচের কোনও বিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নেই কোনও স্টক রেজিস্টার। ওয়াইফাই লাগানোতে কোটি টাকার উপর খরচ দেখানো হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের হস্টেল তৈরি হল না অথচ কোটি টাকার বিল দেখানো হয়ে গিয়েছে। এ রকম ভূরি ভূরি অভিযোগ রয়েছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন রেজিস্টার সাধনকুমার সাহা বলেন, ‘‘আমাকে মেল করে শনিবার দুপুর ১২টায় থাকার জন্য বলা হয়। আমি গিয়েছিলাম। আরও অনেক অধ্যাপক এসেছিলেন। এখানে এসে জানতে পারলাম ওঁদেরকেও মেল করে ডাকা হয়েছে।’’ তবে তদন্ত কমিটিকে কী কী বলেছেন তিনি, তা অবশ্য জানাতে চাননি সাধন। তিনি বলেন, ‘‘গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে কী চলছে সবাই জানে। উচ্চ শিক্ষা দফতরে অনেক অভিযোগ গিয়েছে। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাটু মানা হচ্ছে না। নিজের মতো করে এগজিকিউটিভ কাউন্সিল চলছে। কোনও কারন ছাড়াই বেশ কয়েক জন অধ্যাপককে সাসপেন্ড করে রাখা হয়েছে।’’ তিনি জানান, গত ৯ মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও অস্থায়ী রেজিস্টার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আর এক অধ্যাপক সৌরেন বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাকে মেল করে ডেকেছে তদন্ত কমিটি। যা বলার বলেছি ওঁদের। আমি চাই, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসুক।’’
অন্য দিকে গোটা পরিস্থিতি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য চঞ্চল চৌধুরী কোনও মন্তব্য করতে চাননি। অস্থায়ী রেজিস্টার বিপ্লব গিরিও মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy