একটানা দাঁড়িয়ে থাকার পর শুয়ে পড়েছে অসুস্থ হাতিটি। — নিজস্ব চিত্র
দীর্ঘ দিন একটানা দাঁড়িয়ে থাকার পর শেষমেশ অসুস্থ হাতি লুটিয়ে পড়ল মাটিতে। নাগরাকাটার অসুস্থ হাতিটির শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক। শনিবার হাতিটি আর দাঁড়িয়ে থাকতে না পেরে মাটিতে শুয়ে পড়ে। বর্তমানে মাটিতে শুয়েই ছটফট করছে অসুস্থ পূর্ণবয়স্ক হাতিটি।
শুক্রবার হাতিটিকে চিকিৎসার জন্য জঙ্গল থেকে গরুমারা অভয়ারণ্যের পিলখানায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন বনকর্মীরা। চারটি কুনকি হাতির সাহায্যে অসুস্থ হাতিটিকে ধাক্কা দিয়ে গাড়িতে তোলার চেষ্টা চলে। জেসিবিরও সাহায্য নেওয়া হয়। কিন্তু অসুস্থ হাতিটি ওই এলাকা ছেড়ে কোনও মতেই গাড়িতে উঠতে চায়নি। সন্ধ্যে হলে বনকর্মীরা এক প্রকার বাধ্য হয়েই অসুস্থ হাতিটির বাঁধন খুলে দিয়ে খালি হাতে ঘরে ফেরেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, সারা দিনের ধকল হাতিটি সহ্য করতে পারেনি। বেশ কিছু ক্ষণ হাতিটি গাছে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার চেষ্টা করে। এর পর হাতিটি মাটিতে পড়ে যায়। হাতিটির শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসার বিষয়ে তথ্য দিতে শনিবার জলপাইগুড়ির অরণ্য ভবনে বনকর্তারা একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন। উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গের অতিরিক্ত প্রধান মুখ্য বনপাল উজ্বল ঘোষ, মুখ্য বনপাল রাজেন্দ্র জাখর, জলপাইগুড়ি ডিভিশনের ডিএফও বিজয় বিকাশ। বনকর্তাদের কথায় স্পষ্ট, হাতিটির আর চিকিৎসা করা সম্ভব নয়।
বামনডাঙ্গা চা বাগান ও ডায়না নদী সংলগ্ন যে জঙ্গলে অসুস্থ হাতিটি ছিল, শনিবার সকাল থেকে ওই এলাকায় কড়া নজরদারি শুরু করেন বনকর্মীরা। রিজার্ভ পুলিশের কিছু কর্মীকেও সেখানে মোতায়েন করা হয়। জঙ্গলের ভিতর দিয়ে যাওয়া রাস্তা দিয়ে কেবলমাত্র স্থানীয় লোকজনকেই চলাফেরা করতে দেওয়া হচ্ছে। এ দিন সাংবাদিক সম্মেলন করে উত্তরবঙ্গের অতিরিক্ত প্রধান মুখ্য বনপাল উজ্বল ঘোষ জানান উত্তরবঙ্গে হাতির সংখ্যা ৬৫০ এর কাছাকাছি। তার মধ্যে একটি পূর্ণবয়স্ক হাতি অসুস্থ। বন দফতর নিশ্চিত যে, অন্য কোনও হাতির দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল ওই হাতিটি। তাতেই জখম হয় সে। বন কর্তাদের দাবি, এটি স্বাভাবিক ঘটনা, আগেও ঘটেছে, আগামীতেও ঘটবে। মুখ্য বনপাল রাজেন্দ্র জাখোর জানান, অসুস্থ হাতিটির আর চিকিৎসা করা এই মুহুর্তে সম্ভব নয়। বনকর্মীরা নিয়মিত হাতিটির উপর নজর রাখছিলেন এবং আগামীতেও তা জারি থাকবে।
অন্য দিকে, পরিবেশপ্রেমী সংগঠন ন্যাসের কর্মকর্তা নফসর আলি বলেন, ‘‘হাতিটি এক মাসের বেশি সময় ধরে অসুস্থ। সঠিক সময় বন দফতর চিকিৎসা শুরু করেনি। সংবাদমাধ্যম খবর করার পরেই তৎপরতা শুরু হয় বন দফতরের। শুক্রবার জেসিবি, চারটি কুনকি হাতির সাহায্য নিয়ে অসুস্থ হাতিটিকে লরিতে চাপিয়ে গরুমারা অভয়ারণ্যে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। তার পরেই আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে হাতিটি।’’ তিনি এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তেরও দাবি তুলেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy