Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
rat

Indigenous People: একবেলায় ইঁদুরই খাবার, ক্ষোভ আদিবাসী গ্রামে

গ্রামের নাম নিশ্চিন্তপুর হলেও নিশ্চিন্তে নেই সোম কিস্কুর মতো আদিবাসী প্রধান গ্রামের ৩৫টি পরিবার।

বাঁশের শুকনো পাতা দিয়ে রান্নার প্রস্তুতি সোমের স্ত্রী জয়ন্তীর।

বাঁশের শুকনো পাতা দিয়ে রান্নার প্রস্তুতি সোমের স্ত্রী জয়ন্তীর। নিজস্ব চিত্র।

জয়ন্ত সেন ও অভিজিৎ সাহা
নিশ্চিন্তপুর শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২২ ০৮:০৫
Share: Save:

মাথার উপরে গনগনে রোদ। রোদ, গরম থেকে বাঁচতে ছ’মাসের মেয়েকে নিয়ে বাঁশ বাগানে মাদুর পেতে ঝিমোচ্ছেন বছর তিরিশের সোম কিস্কু। পাশেই ঘুমিয়ে রয়েছেন তাঁর ষাটোর্ধ্ব অসুস্থ বাবা মণিলাল বেসরা। বাঁশ বাগানে গেছো ইঁদুরের লাফালাফি দেখে নড়েচড়ে বসলেন সোম। হাতের কাছে থাকা লাঠি নিয়ে ইঁদুর ‘শিকারের’ চেষ্টা করেন তিনি। ইঁদুর ধরতে না পেড়ে ফের মাদুরেই বসে পড়েন। ইঁদুর মেরে কী করবেন, প্রশ্ন শুনে জবাব দেন না সোম। অসুস্থ মণিলাল বলেন, “ইঁদুরটা ধরা পড়লে, দুপুরের খাবার হয়ে যেত।” বিশ্ব আদিবাসী দিবসে এমনই ছবি মালদহের ইংরেজবাজার শহর সংলগ্ন যদুপুরের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের।

নাম নিশ্চিন্তপুর হলেও নিশ্চিন্তে নেই সোম কিস্কুর মতো আদিবাসী প্রধান গ্রামের ৩৫টি পরিবার। গ্রামে রাস্তা পাকা হয়েছে। বিদ্যুৎ, পানীয় জলের পরিষেবা মিলছে। তবে এইটুকুই, দাবি গ্রামবাসীর একাংশের। তাঁদের দাবি, সরকারি প্রকল্পে ঘর মেলেনি। গ্রামের অনেকেরই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কার্ড নেই। মিলছে না ‘জয় জোহার’ কিংবা ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-এর মতো প্রকল্পের সুবিধাও। এমন অবস্থায় বৃষ্টি অপ্রতুল হওয়ায়, জমিতে এখন ঠিক মতো কাজও মিলছে না বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা।

গ্রামের শেষ প্রান্তে বাঁশ বাগান ঘেরা ঝুপড়ি বাড়িতে অসুস্থ বাবা, স্ত্রী, মেয়েকে নিয়ে বসবাস করেন সোম। ঘর-বাড়ি জুড়েই স্পষ্ট অভাবের ছবিটা। বাঁশের শুকনো পাতা জোগাড় করে রান্না করতে ব্যস্ত সোমের স্ত্রী জয়ন্তী টুডু। তিনি বলেন, “বাড়িতে ছোট গ্যাস সিলিন্ডার রয়েছে। ছোট গ্যাস ভরার ক্ষমতা আমাদের নেই। কারণ, গ্যাস সিলিন্ডার বাজারে ১,১৫০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।” বাড়িতে শৌচাগার নেই। নেই বিদ্যুৎ পরিষেবাও। সরকারি প্রকল্পে ঘরও মেলেনি বলে জানিয়েছেন সোম। তিনি বলেন, “রাষ্ট্রপতি আদিবাসী হলেও, কাজ না থাকলে আমাদের উনুনে হাঁড়ি চড়বে না। আর বিশ্ব আদিবাসী দিবস নিয়ে সবাই মেতে থাকলেও, আমাদের পেট ভরবে না।”

মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি আবু তৈয়ব মহম্মদ রফিকুল হাসান বলেন, “গ্রামে গিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

rat Ingraj Bazar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE