আদল: ছবি দেখে তৈরি হচ্ছে অসুর। নিজস্ব চিত্র
‘রামরহিম’ থেকে ‘জঙ্গল দস্যু’ এ বার পুজোয় অসুরের রূপেও বৈচিত্র্য আনছেন কোচবিহারের পুজো উদ্যোক্তারা। অসুরের রূপ নিয়ে সবচেয়ে বেশি সাড়া ফেলেছেন দিনহাটার একটি মহিলা পরিচালিত দুর্গাপুজো কমিটির উদ্যোক্তারা। দিনহাটা শহরের এক্সচেঞ্জ মোড় সর্বজনীন কমিটির মণ্ডপে ‘ধর্ষক বাবা’ রামরহিমই অসুর। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, রাম রহিমের কর্মকাণ্ড নারী সমাজের কাছে লজ্জার। সুস্থ সমাজ গঠন ও নারী নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য মুখোশধারী ওই বাবার মতো অসুরদের বধ করা দরকার। সেই বার্তা তুলে ধরতেই একেবারে দেশজুড়ে তোলপাড় ফেলে দেওয়া ‘রামরহিম’-এর আদলে অসুর তৈরি করার কাজ শুরু হয়েছে। এক্সচেঞ্জ মোড়েরই মৃৎশিল্পী সত্য পাল প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন।
এক্সচেঞ্জ মোড় সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির সহকারী সম্পাদিকা বীণা মজুমদার বলেন, “রামরহিমরাই সমাজ ব্যবস্থায় আসল অসুর। ওই বার্তা দিতেই বাবার আদলেই অসুর গড়া।” মৃৎশিল্পী সত্য পাল বলেন, “আগে এমন কোনও ব্যক্তি বিশেষের আদলে অসুর তৈরির বরাত কেউ দেয়নি। এ বার মহিলা পুজোর উদ্যোক্তারা ছবি দিয়ে বলেছেন রাম রহিমের আদল আনতে।”
উদ্যোক্তারা জানান, ওই পুজোর এ বার ৪৮তম বর্ষ। এক সময় পুরুষেরা পুজোর দায়িত্ব সামলাতেন। নানা কারণে কয়েক বছর ধরে মহিলারা দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন। চাঁদা তোলা থেকে বিসর্জন সবটা সামলাচ্ছেন। ইলা সরকার, ভারতী সরকার, শুক্লা সরকারদের মতো অনেক গৃহবধূ, চাকরিজীবীও ওই তালিকায় রয়েছেন। দেউঘরের মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি হবে। মণ্ডপের সঙ্গে মানানসই আলোকসজ্জা করা হচ্ছে।
অসুরের রূপে, অভিনবত্বের ছাপ থাকছে জেলার আরও বিভিন্ন পুজোয়। কোচবিহার শহরের রকি ক্লাবে কুঠার হাতে গাছ কাটতে উদ্যত অসুরকে বধ করবেন দেবী। পুজো কমিটির সহ সভাপতি শান্ত্বনু সাহা বলেন, “জঙ্গল ধ্বংসকারীদের অসুর হিসেবে তুলে ধরে সবুজ রক্ষায় বার্তা দিতে চাইছি।” উদ্যোক্তারা জানান, মোট চারটি অসুর থাকছে। গণেশ, কার্তিককেও গদা ও তীর-ধনুক দিয়ে অসুর বধ করতে দেখা যাবে। দিনহাটার সাহেবগঞ্জ রোড নাট্য সংস্থার পুজো অসুর থাকবে দেবীর রথের চাকায় পিষ্ট অবস্থায়। পুজো কমিটির সদস্য শঙ্খনাদ আচার্য বলেন, “কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের থিমের সঙ্গে মানিয়েই অসুর হয়েছে।” নেতাজি স্কোয়্যার সর্বজনীনে অসুর ভূপতিত অবস্থায় থাকছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy