প্রতীকী ছবি।
এই প্রথমবার নয়। বরং দ্বিতীয়বারের ফেরত যাত্রায় ধরা পড়েছে হামিদ। হামিদ হোসেন নামে ওই রোহিঙ্গা ছাড়াও আরও চার জনকে গত মঙ্গলবার ধরে এনজেপি জিআরপি। কিন্তু হামিদকে জেরা করে যে তথ্য বেরিয়ে আসছে, তা রীতিমতো কপালে ভাঁজ ফেলে দিয়েছে গোয়েন্দাদের। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেরায় হামিদ তাদের জানিয়েছে, বাংলাদেশের একাধিক শরণার্থী শিবির থেকে নথি জাল করে অবৈধ পথে রোহিঙ্গাদের ভারতে আসার সব ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন এজেন্টরা। হামিদের এই দাবি সত্যি হলে জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এমন ঘটনা গরু পাচারের চেয়েও উদ্বেগজনক, মনে করছেন গোয়েন্দারা। তবে হামিদ নিজেই এজেন্ট কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মঙ্গলবার রাতে দুই মহিলা এক শিশু ছাড়াও হামিদ এবং তার মামা মহম্মদ ইব্রাহিম ধরা পড়ে এনজেপি থেকে। অভিযোগ, রোহিঙ্গাদের এই দলটি পরিচয় গোপন করে ১২ ঘণ্টার দূরত্ব পার করে এনজেপি অবধি চলে এসেছিল। তাতেই নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়েও। কারণ ধৃতদের জেরা করে যে তথ্য রেল পুলিশ পেয়েছে, তা রীতিমতো চাঞ্চল্যকর। শিলিগুড়ি রেল পুলিশ সুপারের দফতর সূত্রে খবর, টাকা দিলে এজেন্টরাই ধাপে ধাপে শরণার্থী শিবির পার করে এমনকি সীমান্তও টপকে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন।
হামিদকে জেরা করে প্রাথমিকভাবে রেলপুলিশ গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, সিলেট জেলার কুটুকফালাং শিবির থেকে তারা পালিয়েছিল। এজেন্টের লোক বাসে করে একটি জায়গায় এনে তাদের প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা হাঁটিয়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতার পার করিয়ে দেয় বলে দাবি তাদের।
এক অফিসারের কথায়, ‘‘হামিদ আগে ২০১২ সালে একই কায়দায় পেরিয়ে কয়েক জন আত্মীয়কে নিয়ে জম্মুতে গিয়ে ওঠে। সেখানেই কাজকর্ম করে। এখন জম্মুর অস্থায়ী বাসিন্দা।’’ গত বছর লকডাউনের আগে সে ফের জম্মু থেকে অবৈধভাবেই সীমান্ত পেরিয়ে সিলেট ঢোকে। সেখান থেকে এজেন্টের মাধ্যমেই আত্মীয়দের নিয়ে ফের জম্মুর পথে রওনা দেয়। কিন্তু এই যাত্রায় শেষরক্ষা হয়নি। তারা এনজেপিতে ধরা পড়ে। হামিদের দাবি কতটা সত্যি, খতিয়ে দেখতে তাকে নিয়ে অসমে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করছেন তদন্তকারীরা। তার দাবি, ২০১২ সাল থেকেই অনেকেই জম্মুতে থাকতে শুরু করেছে।
রেলপুলিশের দাবি, রাষ্ট্রসঙ্ঘের উদ্বাস্তু হাই কমিশন রাজনৈতিক কারণে শরণার্থীদের পরিচয়পত্র দেয়। তা রোহিঙ্গারাও পায়। বাংলাদেশে হামিদদের সেই কার্ড ছিল। সেগুলি জাল করে, ভারতীয় শরণার্থী হিসেবে দেখিয়ে ট্রেনের বাতানুকুল কামরায় চেপে বসেছিল হামিদরা।
এই রুটে আগেও রোহিঙ্গারা ধরা পড়েছে, কিন্তু তার পরেও রেলপুলিশ, টিকিট পরীক্ষক বা গোয়েন্দাদের মধ্যে হাই কমিশনের সেই নথির বৈধতা বা সেটি আসল কি না তা যাচাই করার অভিজ্ঞতা নেই। কেন তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হল না, সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে হামিদদের ঘটনা সামনে আসার পর থেকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy