Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

পুলিশ যেতেই কনেপক্ষ ‘হাওয়া’

হবিবপুর ব্লকের বুলবুলচণ্ডী পঞ্চায়েতের শোলাডাঙার এক জনের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় ওই পঞ্চায়েতেরই ইংলিশগ্রামের একটি মেয়ের।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হবিবপুর শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৯ ০৪:১৪
Share: Save:

‘ভাবী জামাতা’-কে আশীর্বাদ করছে কনেপক্ষ, উপস্থিত পুরোহিতও। হঠাৎ পুলিশ যেতেই দেখা গেল ‘পাত্রের’ বাড়ি ফাঁকা, পালিয়েছেন নাবালিকা ‘কনে’-র বাড়ির লোকজন, নেই পাত্রও। রবিবার এ ভাবেই নাবালিকা বিয়ে রুখে দিল পুলিশ ও প্রশাসন। ঘটনাটি ঘটে মালদহের হবিবপুর থানার ষোলাডাঙা গ্রামে। নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দেব না বলে পুলিশ প্রশাসনের কাছে মুচলেকা দেয় দুই পরিবার। পুলিশ প্রশাসনের দাবি, নাবালিকার বিয়ে বন্ধে লাগাতার প্রচার চলছে। তাই নাবালিকা মেয়ের বিয়ে হলেই একাংশ গ্রামবাসী সক্রিয় হয়ে পুলিশ প্রশাসনের নজরে নিয়ে আসছেন।

সূত্রের খবর, হবিবপুর ব্লকের বুলবুলচণ্ডী পঞ্চায়েতের শোলাডাঙার এক জনের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় ওই পঞ্চায়েতেরই ইংলিশগ্রামের একটি মেয়ের। মেয়েটি স্থানীয় একটি স্কুলের একাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনা করে, তার বাবা পেশায় দিনমজুর। মেয়েটির বাবার কথায়, তিন ভাই-বোনের মধ্যে এই মেয়েটিই বড়। আর যে ছেলেটির সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় তিনি হাটে চাল, গম বিক্রির কাজ করেন।

এ দিনই রাতে বিয়ের দিন ঠিক হয়। বিকেল বেলা পাত্রকে আশীর্বাদ করতে চলে যান কনেপক্ষ। পুরোহিতের উপস্থিতিতে শুরু হয়ে যায় আশীর্বাদ পর্বও। স্থানীয় সূত্রে খবর, বাজনা বা প্যান্ডেলের ব্যবস্থা করা হয়েনি। একেবারে ঘরোয়া পরিবেশেই বিয়ের আয়োজন চলছিল বলে জানান তাঁরা।

পুলিশ জানায়, গ্রামবাসীদের মাধ্যমে এই নাবালিকার বিয়ের বিষয়টি জানতে পারে তারা। তার পরই হানা দেওয়া হয় ছেলের বাড়িতে। তবে পুলিশ আসার বিষয়টি চাউর হতেই পালিয়ে যায় পাত্র এবং কনেপক্ষ। ছেলের বাড়ির পর মেয়ের বাড়িতেও হানা দেয় পুলিশ। হবিবপুর থানার আইসি ত্রিদিব প্রামাণিক বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের মাধ্যমে নাবালিকা বিয়ের বিষয়টি জানতে পারি। ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারি ছেলের আশীর্বাদ চলছে। দু’পক্ষকেই নাবালিকা মেয়ের বিয়ের কুফলের বিষয়ে সচেতন করা হয়। এমনকি, দু’পক্ষই মুচলেকাও দেন।’’

পুরোহিত বলেন, ‘‘আশীর্বাদ পর্ব শুরু হয়েছিল। পুলিশ আসার খবর পেয়েই ছেলে এবং মেয়ের বাড়ির লোকেরা গা ঢাকা দেন। পরে জানতে পারি এখনও মেয়ের বয়স আঠারো হয়নি। আগে জানলে নাবালিকা মেয়ের বিয়ে করাতে আমিও রাজি হতাম না।’’ ‘‘পরিবারের কথা ভেবেই বিয়েতে রাজি হয়েছিলাম,’’ বলে ওই ছাত্রী। সে জানায়, ‘‘আমার পড়াশোনা করার ইচ্ছে রয়েছে।’’

তার বাবা বলেন, ‘‘আমাদের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। তাই ভাল পাত্র পেয়ে বিয়ে দিতে রাজি হয়েছিলাম। এমন কাজ আর করব না।’’ হবিবপুর ব্লকের বিডিও শুভজিৎ জানা বলেন, ‘‘গ্রামের মানুষ সচেতন হওয়ায় নাবালিকা বিয়ে নিয়ে আমাদের কাছে খবর পৌঁছে যাচ্ছে। মানুষকে সচেতন করতে আরও প্রচার চালানো হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Police Child Marriage Teenage Marriage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy