প্রতীকী ছবি।
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে দার্জিলিং পাহাড়ের নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ইতিবাচক কোনও ঘোষণা করবে বলে জানিয়ে দিলেন জিএনএলএফ প্রধান মন ঘিসিং। সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করে বুধবার বিকেলে বিমানে উত্তরবঙ্গে ফিরেছেন মন। বিমানবন্দরেই তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ইতিবাচক বৈঠকের দাবি করে ধৈর্য্য ধরার কথাও বলেছেন। মন ঘিসিং বলেন, ‘‘প্রায় দু’ঘণ্টা অমিত শাহের সঙ্গে কথা হয়েছে। উনি পাহাড়ের সব বিষয়ই জানেন। আমরা রাজনৈতিক স্থায়ী সমাধান এবং ১১ জনজাতির স্বীকৃতি দাবির কথা বলেছি। বিধানসভার আগে আমাদের আশা পাহাড়ের জন্য ঘোষণা করা হবে।’’
জিএনএলএফের সঙ্গে গোর্খা লিগের মতো ছোট ছোট দলের নেতারা দিল্লি গিয়েছিলেন। প্রথমে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং পরে অমিত শাহের সঙ্গে তাঁরা বৈঠক করেছেন। করোনার আগে থেকে জিএনএলএফ দিল্লি যাতায়াত শুরু করেছে। বৈঠকে দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা এবং রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় ছিলেন। বিমল গুরুং বিজেপি থেকে আলাদা হওয়ার পর জিএনএলএফ বেশি করে বিজেপির নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক শুরু করেছেন।
পাহাড়ের নেতারা জানান, জিএনএলএফের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র দার্জিলিঙের বিজেপি বিধায়ক। তিনি তো বটেই, বাকি নেতাদের একটা অংশ মনে করছেন, আগামী বিধানসভায় বিজেপির রাজ্যে বড় সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। গেরুয়া দল ক্ষমতায় এলে পাহাড়ের সরকারি ব্যবস্থার কোনও শাসনভার জিএনএলএফ পেতে পারে। পাশে থাকবে বিজেপি। সেখানে বিমল গুরুং বা বিনয় তামাং পাহাড়ের লোকবল ধরে রাখলেও রাজনৈতিক দল ছাড়া তাঁরা আর কিছুই থাকবেন না। আর শাসন ক্ষমতার সঙ্গে জুড়তে পারলে দলীয় সংগঠনও মজবুত হবে।
তবে মোর্চা নেতারা মনে করছেন, বিজেপি খুব বেশি হলে ১১টি জনজাতির তফসিলি জনজাতি সংক্রান্ত স্বীকৃতি দিয়ে ভোটের আগে গিয়ে পাহাড়ে পা ফেলার জায়গা খুঁজবে। কারণ, মোর্চার দুই পক্ষই তৃণমূলের পাশে থাকা আপাতত পাহাড়ে বিজেপি পুরোপুরি ব্যাকফুটে। গুরুংপন্থী মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেছেন, ‘‘বিজেপি গত ১২ বছর ধরে শুধু আশ্বাস দিয়েছে। এখনও দিচ্ছে। ওই নেতারা শীতের দিল্লি ঘুরছেন। খুব ভাল। বাকিটা ভোটের সময় দেখা যাবে।’’ আর তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তা ছেত্রী বলেন, ‘‘১১ জনজাতির দাবি আমরাই সাংসদে প্রথম তুলেছি। রাজ্য ছাড়পত্রও দিয়েছে। কেন্দ্র রাজনীতির জন্য তা ঝুলিয়ে রেখেছে। আর জিএনএলএফ-সহ বাকি দলগুলি প্যাঁচে পড়া বিজেপির হয়ে বিজ্ঞাপনের কাজে নেমেছে। আর কিছুই নয়।’’
এদিনও পাহাড়ে বিমল গুরুং সকাল থেকে পাতলেবাস অফিসে বসে এলাকা ধরে দরে কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। বিনয় তামাংদের অভিযোগ, ঘরোয়া বৈঠকে গুরুং যাঁরা তাঁর বিরুদ্ধে গিয়েছেন, তাঁদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। যদিও গুরুং এই অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে চাননি। তাঁরা বলেছেন, ‘‘আমাদের দলের অন্দরে নানা আলোচনা চলছে। তা নিয়ে বাইরে বলার কিছুই নেই।’’ যা শুনে পাহাড়ের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, ‘‘বড়দিনের আগে পাহাড়ে বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপও।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy