জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান পদে শপথ নেওয়ার পরে মোহন বসু। ছবি: সন্দীপ পাল।
পুড়ে যাওয়া দিনবাজার সংস্কার করে আধুনিক বাজার নির্মাণ, শহরের রাস্তা সম্প্রসারণ, ওয়ান-ওয়ে ট্র্যাফিক ব্যবস্থা চালু এবং জলনিকাশি সমস্যার সমাধান। চতুর্থ বারের জন্য জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়ে এই বিষয়গুলিকেই অগ্রাধিকারের তালিকায় রাখবেন বলে জানালেন মোহন বসু। সোমবার তৃণমূল পরিচালিত জলপাইগুড়ি পুর বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে শপথ নিয়েছেন মোহনবাবু।
এ দিন বেলা দু’টো নাগাদ থানা মোড় থেকে দলের কাউন্সিলারদের নিয়ে হেঁটে পুরসভার দিকে রওনা দেন মোহনবাবু। সঙ্গে ছিলেন দলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী, প্রদেশ সম্পাদক কল্যাণ চক্রবর্তী, সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মন-সহ অন্য নেতা কর্মীরা। পুরসভার প্রয়াস হলে ২৫ জন কাউন্সিলরকে শপথ বাক্য পাঠ করান মহকুমাশাসক সীমা হালদার। চেয়ারম্যান নির্বাচনের সভায় কাউন্সিলর সন্দীপ মাহাতো সভার সভাপতিত্ব করেন। সভায় কাউন্সিলার পাপিয়া পাল চেয়ারম্যান পদের জন্য মোহনবাবুর নাম প্রস্তাব করেন। বিরোধীদের প্রার্থী না থাকায় সহজে প্রস্তাব গৃহীত হয়। এর পরে পৃথক মঞ্চে চেয়ারম্যান পদে শপথ নেন মোহনবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘শহরের বাসিন্দারা যে আস্থা আমাদের উপর রেখেছেন তাকে সম্মান দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। ভোটে জিতলে আমরা কী কী পদক্ষেপ করব, তা আগেই বাসিন্দাদের ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এ দিন একটি অগ্রাধিকারের তালিকা তৈরি হয়েছে। যাতে বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি এবং সমস্যাগুলিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।’’
শপথ গ্রহণের পরে চেয়ারম্যান মোহনবাবু ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সাহায্যের জন্য পুরসভার তরফে ৫ লক্ষ থাকা আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেন। দিনবাজার সংস্কারের কাজ দীর্ঘদিন ধরেই নানা জটিলতায় থমকে রয়েছে। চলতি মাসেই আগুনে পুড়ে যায় দিনবাজারের একটি বড় অংশ। চলতি মাসেই আগুনে দিনবাজারের শতাধিক দোকান পুড়ে যাওয়ার পরে পুরসভার তরফে আধুনিক বাজার ভবন তৈরির ঘোষণা করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতর থেকে এর জন্য বরাদ্দের সম্মতিও মিলেছে বলে মোহনবাবু জানিয়েছেন।
সেই সঙ্গে শহরের দীর্ঘদিনের দুই সমস্যা যানজট এবং জলনিকাশিকেও অগ্রাধিকারের তালিকায় রেখেছেন নতুন পুরপ্রধান মোহনবাবু। শহরের ট্র্যাফিক ব্যবস্থাকে একমুখি করে তুলতে বিভিন্ন রাস্তার সম্প্রসারণ করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। করলা অ্যাকশন প্ল্যানের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শেষ হলে শহরের নিকাশির সমস্যা অনেকটাই মিটবে বলে মোহনবাবু আশা করেছেন। সেই সঙ্গে শহরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নর্দমা সংস্কারের পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, অগ্রাধিকারের তালিকায় থাকা প্রতিটি কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রাও ছকে ফেলা হয়েছে। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী প্রথমবার প্রকাশ্য মঞ্চে দাঁড়িয়ে স্বীকার করেন, “এ বারের পুর ভোট দলের কাছে অ্যাসিড টেস্ট ছিল। উন্নয়নের আশায় মানুষ ভোট দিয়েছে। ওয়ার্ড কমিটি গঠন করে এলাকার বাসিন্দাদের মতামত নিয়ে উন্নয়নের বিস্তারিত কর্মসূচি তৈরি করতে হবে।”
মোহনবাবুও এ দিন দলীয় কাউন্সিলরদের সভায় বলেন, “যে ওয়ার্ড আমাদের ভোট দিয়েছে সেখানেই সব উন্নয়ন হবে এই নীতি আমাদের নয়। শহরকে এগিয়ে নিতে প্রতিটি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের চাহিদাকে সম্মান দিতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy