Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Dhupguri

পুজোয় চাই নতুন জামা, ফুটপাতে শাক বিক্রি করতে বসল চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র

সঞ্জয় তরফদার ফুটপাতে চা বিক্রি করেই সংসার চালান। তাঁর দুই ছেলে। অভাবের কারণে দুই ছেলেকে পুজোয় নতুন জামা কিনে দিতে পারেননি তিনি।

সব্জি বিক্রি করছে রাজদীপ।

সব্জি বিক্রি করছে রাজদীপ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ধূপগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২১ ১৫:১৪
Share: Save:

সামনেই পুজো। তা নিয়ে ইতিমধ্যেই উন্মাদনা শুরু হয়ে গিয়েছে ছোটদের মধ্যে। কোন দিন কোন জামা পরে ঘুরতে যাবে, তাই ঠিক করতে পারছে না অনেকে! কিন্তু জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ির রাজদীপের অবস্থাটা ঠিক সে রকম নয়।

চতুর্থ শ্রেণির রাজদীপের পরিবারে অভাব নিত্যদিনের সঙ্গী। এখনও পর্যন্ত একটাও জামা হয়নি রাজদীপ এবং তার দাদার। কিন্তু পুজোয় নতুন জামা পরার ইচ্ছা ক্রমেই চেপে বসেছে তার মনে। মন চাইলেও উপায় নেই। কারণ তার বাবার সামর্থ্য নেই নতুন জামা কিনে দেওয়ার। তাই সে নিজেই নিজের জামা কেনার চেষ্টা চালাচ্ছে। সে জন্য শাক নিয়ে বসে যাচ্ছে রাস্তার ধারে। সেই শাক বিক্রির টাকাতেই নতুন জামা কেনার কথা ভেবেছে সে। এ নিয়ে ছোট্ট রাজদীপ ভাঙা গলায় বলেছে, ‘‘এখনও নতুন জামা কিনে দেয়নি বাবা। স্কুল বন্ধ, তাই স্কুল থেকেও এখনও নতুন কাপড় দেয়নি। তাই শাক বিক্রি করছি। এই টাকা দিয়ে জামা কিনব।’’

ধূপগুড়ির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সঞ্জয় তরফদার। ফুটপাতে চা বিক্রি করেই সংসার চালান তিনি। তাঁর দুই ছেলে। বড় ছেলে সন্দীপ পড়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে এবং ছোট ছেলে রাজদীপ চতুর্থ শ্রেণিতে। কিন্তু অভাবের কারণে দুই ছেলেকে পুজোয় নতুন জামা কিনে দিতে পারেননি তিনি। স্কুল থেকেও এ বছর পাওয়া যায়নি জামা। স্কুল বন্ধ থাকায় পড়াশোনার চাপও অনেকটাই কম। তাই সন্দীপ বাবার সঙ্গে শুরু করেছে চায়ের দোকানের কাজ। বাবার দোকানের সামনে শাক নিয়ে বসছে রাজদীপ ।

সন্দীপ-রাজদীপের ঠাকুমা রেখা তরফদার বলেছেন, ‘‘স্কুল বন্ধ থাকায় পড়াশোনায় আগ্রহ হারাচ্ছে ওরা। বাড়িতে পড়তে বসতে চায় না রাজদীপ। ওর দাদা বাবার সঙ্গে বেরিয়ে যায়। তাই ও একা বাড়িতে থাকতে চায় না। এখন বাজারে শাক বিক্রি করতে বসছে। কী করব, কিছু করার নেই। পুজো এলেও নতুন পোশাক এখনও কিনে দিতে পারিনি আমরা।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE