Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

ভেঙেছে বাঁধ, বাড়ছে জল

শনিবার রাতে টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে যায় কালচিনি ব্লকের বেশ কিছু এলাকা। রবিবার সকালে হাসিমারা, দলসিংপাড়া এলাকায় কয়েকশো বাড়ি জলমগ্ন হয়। হাসিমারায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে এলাকার জনজীবন। এলাকায় জল জমায় হাসিমারা জয়গাঁ সড়ক অবোরধ করে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা।

বিয়োগচিহ্ন: রবিবার ভোরে তিস্তা ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার ফলে ময়নাগুড়ি ব্লকের পদমতিতে সেচ দফতরের মাটির বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে পড়ে। নিজস্ব চিত্র

বিয়োগচিহ্ন: রবিবার ভোরে তিস্তা ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার ফলে ময়নাগুড়ি ব্লকের পদমতিতে সেচ দফতরের মাটির বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে পড়ে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৭ ০৩:৩৭
Share: Save:

পাহাড়-সমতলে নাগাড়ে বৃষ্টিতে ফুলে উঠছে নদী। জলবন্দি জনপদ। গত শনিবার রাত থেকে বৃষ্টি চলছে উত্তরবঙ্গে। জল বাড়ায় তিস্তা নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সর্তকতা জারি করেছে সেচ দফতর। তোর্সা, ডায়না, রায়ডাক, লিজ-ঘিস নদীর জল বিপদসীমার কাছাকাছি চলে এসেছে। রবিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কয়েক দফায় কখনও মুষলধারে, কখনও ঝিরঝিরি বৃষ্টি চলেছে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, কোচবিহারে। ডুয়ার্সের দলসিংপাড়া, হাসিমারায় বন্যা পরিস্থিতি হয়েছে। শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি শহরের কিছু এলাকাও জলমগ্ন হয়ে পড়ে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘টানা বৃষ্টিতে সব নদীর জলই বাড়ছে। সেচ দফতরের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রেখেছি।’’

শনিবার রাতে টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে যায় কালচিনি ব্লকের বেশ কিছু এলাকা। রবিবার সকালে হাসিমারা, দলসিংপাড়া এলাকায় কয়েকশো বাড়ি জলমগ্ন হয়। হাসিমারায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে এলাকার জনজীবন। এলাকায় জল জমায় হাসিমারা জয়গাঁ সড়ক অবোরধ করে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। হ্যামিল্টনগঞ্জ থেকে হাসিমারা যাওয়ার পথে বাসার নদীর উপর অস্থায়ী সেতুর উপর দিয়ে জল যাওয়ায় বেশ কিছু ক্ষণ বন্ধ ছিল যান চলাচল। দলসিংপাড়ার পঞ্চায়েতের উপ প্রধান শম্ভু জায়সবালের দাবি, এশিয়ান হাইওয়ের কাজে বেশ কিছু নিকাশি বন্ধ। তাতেই বিপত্তি হয়।

জল বাড়ছে জয়ন্তী, কালজানি, তোর্সা, রায়ডাক, সংকোশ, বাসরা সহ আলিপুরদুয়ার জেলার সমস্ত নদীরও। এ দিন তিস্তা ব্যারেজ থেকে প্রায় ১ হাজার ৯২৯ কিউমেক জল ছাড়া হয়৷ সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ দোমহনিতে তিস্তা নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সতর্কতা জারি করে সেচ দফতর৷ পদমতিতে তিস্তার মাটির বাঁধের বেশ খানিকটা ভেঙে গিয়েছে৷

ময়নাগুড়ির রামসাই, আমগুড়ি সহ বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে জলঢাকা নদীর ভাঙন৷ গয়ারকাটায় আংড়াভাষা নদীর জলে শান্তি নগর, জ্যোতির্ময় কলোনি সহ বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে৷ গয়ারকাটা-মাদারিহাটের মাঝে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর আংড়াভাষার সেতু দুর্বল হয়ে পড়েছে। বানারহাটে হাতিনালার জল বেড়ে যাওয়ায় বিন্নাগুড়ির নেতাজী কলোনি এলাকার শতাধিক পরিবার জলবন্দি। প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন, তারা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন৷

বৃষ্টি চলছে ভুটান পাহাড়েও। বানারহাট, বিন্নাগুড়ি, গয়েরকাটা, বীরপাড়া, মাদারিহাট, ধূপগুড়ি, ফালাকাটার বেশ কিছু এলাকায় পাহাড়ি নদীর জলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। হাতিনালা ঝোড়ার জল ঢুকে পড়ে বানারহাট হাসপাতাল চত্বরে। মাদারিহাটের সঙ্গে টোটোপাড়ার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল রবিবার। ডিমডিমা নদীর জল বেড়ে যাওয়ায় বীরপাড়ার সঙ্গে বান্দাপানি, ঢেকলাপাড়া ও জয়বীরপাড়া চা বাগানের যোগাযোগ বেলা ১২ টা পযর্ন্ত বন্ধ ছিল। ডুডুয়ার জলে প্লাবিত হয় ধূপগুড়ির বারোহালিয়া, ঘাটপার, মুন্ডাপাড়া গ্রাম। সেখানে দুর্গম এলাকার বানভাসিদের উদ্ধারের নামাও হয় স্পিড বোট।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE