Advertisement
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
NBMCH

দেখভাল হচ্ছে কি, ফের প্রশ্ন উঠে গেল 

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রতি সপ্তাহেই মেডিক্যালের পূর্ত দফতরের বিদ্যুৎ বিভাগের বাস্তুকারেরা এসএনসিইউ-র মতো পরিকাঠামোয় কোথাও কোনও সমস্যা রয়েছে কি না খতিয়ে দেখে যান।

বিপদ: তখন সবে আগুন লেগেছে এসএনসিইউ-তে। নিজস্ব চিত্র।

বিপদ: তখন সবে আগুন লেগেছে এসএনসিইউ-তে। নিজস্ব চিত্র।

সৌমিত্র কুণ্ডু 
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২০ ০৮:১১
Share: Save:

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের সিসিইউ-তে আগুন লেগে এক জনের মৃত্যুর পরে এক বছরও কাটেনি। এবার আগুন এসএনসিইউ-তে। অল্পের জন্য এ দিন বড় দুর্ঘটনা এড়ানো গেলেও ‘ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট’-এর মতো ওয়ার্ডে বারবার আগুন লাগার ঘটনায় উদ্বিগ্ন চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ। তাঁদের কথায়, প্রসূতি বিভাগেও একবার আগুন ধরেছিল পুরনো বৈদ্যুতিক লাইনে শর্ট সার্কিট হয়ে। তার পরেও কেন ঠিক ভাবে এগুলি দেখভাল করা হচ্ছে না— সেই প্রশ্ন উঠেছে হাসপাতালের অন্দরেই। পুরনো ভবন, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পুরনো বিদ্যুৎ লাইন— সব মিলিয়ে বিপদের আশঙ্কা যে বেড়েছে, তা স্বীকার করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও। ওয়ার্ডে রোগী, স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা, সিসিইউ-এর মতো ওয়ার্ডে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা দেখভালের কাজ কতটা যথাযথ হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

আরও প্রশ্ন, পরিকাঠামো যত জনের, তার চেয়ে কেন অনেক বেশি সদ্যোজাত শিশু রাখা হচ্ছে এসএনসিইউ-তে? হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৯ জনের শয্যা রয়েছে। দু’টি অতিরিক্ত শয্যা রাখা আছে। সেখানে শিশু ছিল দ্বিগুণের বেশি। এভাবে অতিরিক্ত রোগী রাখা ঝুঁকিপূর্ণ, মনে করেন কর্তৃপক্ষের একাংশ। ওয়ার্ডে শয্যা হিসেবে নার্সিং স্টাফ, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী মেলে। তাঁদের পক্ষে বাড়তি রোগী, যন্ত্রপাতি দেখভাল করাও কঠিন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রতি সপ্তাহেই মেডিক্যালের পূর্ত দফতরের বিদ্যুৎ বিভাগের বাস্তুকারেরা এসএনসিইউ-র মতো পরিকাঠামোয় কোথাও কোনও সমস্যা রয়েছে কি না খতিয়ে দেখে যান। তার পরেও কেন এমন ঘটনা, তার সদুত্তর মেলেনি। সমস্ত কিছু পরীক্ষা করে দেখে যাওয়ার পর দায়িত্বে থাকা নার্স, চিকিৎসকরা নোটশিটে সই করে দেন। কিন্তু বাস্তবে তা সঠিক ভাবে পরীক্ষা করা হল কি না, ধন্দ থাকছেই। শর্ট সার্কিট থেকে এদিন ফ্যান এবং এসি’র সুইচে আগুন লেগেছে। কিন্তু কেন, তা স্পষ্ট নয়।

হাসপাতালের সুপার কৌশিক সমাজদার বলেন, ‘‘এসএনসিইউ’র মতো জায়গায় ছোট আগুনও দ্রুত ছড়িয়ে যেতে পারে। আরও যাতে নজরদারি রাখা হয়, সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সমস্ত বৈদ্যুতিক লাইন পরীক্ষা করা হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, গাফিলতি কারও নয়। পুরনো বিল্ডিং ও পুরনো বিদ্যুতের লাইন, শর্ট সার্কিট হতেই পারে। এত বড় ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে রয়েছে অনেক ভবন। সে সব অনেক ক্ষেত্রেই পুরনো বৈদ্যুতিক লাইন দিয়ে কাজ চলছে। বাড়তি রোগী রাখা নিয়ে সুপার বলেন, ‘‘সেটাও একটা সমস্যা। তবে আমরা রোগী ফেরাতে পারি না।’’ এ দিন ঘটনার পর শিশুদের আত্মীয় উকিলচন্দ্র বর্মণ, নুর নবি আলম, কৃষ্ণপদ বর্মণরা বলেন, ‘‘এ ধরনের ঘটনা রুখতে আগে থেকেই সতর্কতামূলক সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। তা হলে ভবিষ্যতে যে কোনও সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটে যাতে। আমরা খুবই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

NBMCH Fire
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE