Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

ডাকাতির পরে গুলির শব্দ, আতঙ্কে কাঁটা গ্রাম

ডাকাতির পর থেকেই জাঁকিয়ে বসেছিল আতঙ্ক। সন্ধ্যা হতে না হতেই শোভানগরের ঘরে পড়ছিল তালা। দোরেও পড়ছিল খিল। এই আতঙ্কের মাঝেই সোমবার রাতে ফের গুলির শব্দে আতঙ্কে কাঁটা গ্রাম। তার পরেই মঙ্গলবার সকালেই ডাকাতির ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৮ ০২:৩৯
Share: Save:

ডাকাতির পর থেকেই জাঁকিয়ে বসেছিল আতঙ্ক। সন্ধ্যা হতে না হতেই শোভানগরের ঘরে পড়ছিল তালা। দোরেও পড়ছিল খিল। এই আতঙ্কের মাঝেই সোমবার রাতে ফের গুলির শব্দে আতঙ্কে কাঁটা গ্রাম। তার পরেই মঙ্গলবার সকালেই ডাকাতির ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে মই বেঁধে বাড়ির দোতলায় উঠে রীতিমতো ফিল্মি কায়দায় শোভানগরের ব্রাহ্মণপাড়ার বাসিন্দা মিহির চৌধুরীর বাড়িতে ডাকাতি করে পালায় জনা পঞ্চাশের একটি দল। প্রাক্তন সেনাকর্মী মিহিরবাবুর এখন জমি কেনাবেচা-সহ নানা ব্যবসা রয়েছে। অভিযোগ, ডাকাতদল তাঁকে তো বটেই, তাঁর স্ত্রী-ছেলেমেয়েকেও বেধড়ক মারধর করে। সেই বাড়িরই পিছন দিকে আমবাগানে সোমবার রাতে অন্তত চার রাউন্ড গুলি ছোড়ার শব্দ শোনা যায়। তার পর থেকেই এলাকার শিশু থেকে শুরু করে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা আতঙ্কিত। সোমবার রাতে গুলির পরে বাসিন্দাদের ক্ষোভের জেরেই তৎপর হয় পুলিশ। ডাকাতির ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার করে। ধৃত সন্তোষ চৌধুরী ও রাজু মণ্ডল, দু’জনেরই বাড়ি ঝাড়খণ্ডে। সিজেএম ধৃত দুজনকে ৮ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

আগেরবার ডাকাতদল গোটা গ্রামে আতঙ্ক ছড়াতে মুড়িমুড়কির মতো বোমা ও গুলি ছোড়ে বলেও জানান বাসিন্দারা। মিহিরবাবুর পরিজনেরা জানান, আগেরবার ডাকাতেরা মিহিরবাবুর পায়ে বোমা মেরেছিল। মারাত্মক জখম মিহিরবাবু মালদহের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন তিনি। ওই ডাকাতির পরদিন থেকেই শোভানগরের ব্রাহ্মণপাড়া, ঘোষপাড়া, গোয়ালপাড়া, কর্মকার পাড়া, নাচিনগরের বাসিন্দারা সন্ধ্যা হতেই ঘরবাড়ি তালাবন্ধ করে ঘরবন্দি হয়ে থাকতে শুরু করেন। গ্রামের যুবকরা পালা করে রাতপাহারা দেওয়াও শুরু করেন। পুলিশ শোভানগর গ্রন্থাগারে একটি ক্যাম্পও বসায়।

দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে বাসিন্দারা গণসাক্ষর করে পুলিশ সুপার থেকে শুরু করে জেলাশাসককে স্মারকলিপিও দেন। পুলিশ সূত্রে খবর, ক্ষোভ মেটাতে সোমবার রাতে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ এলাকার কিছু বাসিন্দাদের ডেকে আলোচনাও করে। অভিযোগ, সোমবার রাত আটটা নাগাদ যখন ইংরেজবাজার থানায় সেই আলোচনা চলছিল, তখনই এলাকায় গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে শোভানগরেও ক্যাম্প করে থাকা পুলিশ কর্মীরা ছুটে যান। বাসিন্দারাও সাহস করে এগিয়েছিলেন। কিন্তু কারও হদিস মেলেনি।

ডাকাতির পরে এই গুলিচালনার ঘটনায় আতঙ্ক জাঁকিয়ে বসেছে। এলাকার বাসিন্দা শুকদেব ঝা, দধীচি ঝা, পঙ্কজ ঘোষদের ক্ষোভ, ‘‘এলাকায় আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দিতে এমনটা করা হয়েছে।’’ এমন ঘটনায় ভয়ে কাঁটা এলাকার অন্তত ৫০ জন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। শোভানগর হাইস্কুলের দুই পরীক্ষার্থীর কথায়, ‘‘রাতে গুলির আওয়াজে ভয়ে পড়ায় মন দিতে পারিনি। আলো নিভিয়ে দিয়েছিলাম। জানি না পরীক্ষা কেমন হবে।’’ জেলা পুলিশের এক কর্তার অবশ্য দাবি, গুলি ছোড়া হয়েছে কি না তা নিশ্চিত নয়। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। আতঙ্কের কিছু নেই।

অন্য বিষয়গুলি:

Dacoity gun sound Fear Villagers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE