মোবাইলে চোখ উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটক মানিক তালুকদারের পরিবারের। —নিজস্ব চিত্র।
এক একটা সেকেন্ড যেন একটি করে দিন। অপেক্ষার শেষ নেই। টেলিভিশনের পর্দায় চোখ প্ৰত্যেকের। নজর মোবাইলেও। কখনও আশ্বস্ত হচ্ছেন, আর কিছুক্ষণের মধ্যেই উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধার করা হবে শ্রমিকদের। তার পরেই আবার প্রহর গোনা, খবর এল আরও কয়েক ঘণ্টা সময় লাগবে। কখন আসবে সে মুহূর্ত সেই অপেক্ষায় রয়েছেন কোচবিহারে বলরামপুরের মানিক তালুকদারের স্ত্রী সোমা ও সন্তান মণি। ওঁদের কথায়, ‘‘আর অপেক্ষা করতে ইচ্ছা করছে না।’’
গত ১২ নভেম্বরে উত্তরকাশী সুড়ঙ্গে ধস নেমে আটকে করেন ৪১ জন শ্রমিক। তাঁদের মধ্যেই রয়েছেন তুফানগঞ্জের বলরাপুরের মানিক। তাঁর বাড়িতে ওই খবর পৌঁছতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন মানিকের স্ত্রী সোমা। তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। এ দিন কিছুটা সুস্থ হলে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয় তাঁকে। বাড়িতে পৌঁছে নাগাড়ে স্বামীর জন্য প্রার্থনা করে চলেছেন তিনি। ক্লান্ত গলায় বললেন, ‘‘আর ভাল লাগছে না। এ বার ও বাড়ি ফিরে আসুক।’’
মানিকের ছেলে মণির চোখে-মুখে উদ্বেগের ছাপ স্পষ্ট। তিনি বলেন, ‘‘টিভি আর মোবাইলের দিকে তাকিয়ে আছি বাড়ির সবাই। আমার দাদা বিনয় তালুকদার এবং মেসো গৌতম চন্দ উত্তরকাশীতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন। ওঁদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছি। আজ সকালেই উদ্ধার হবে বলে শুনেছিলাম। আশা করেছিলাম। কিন্তু সময় পিছিয়ে যাচ্ছে। দ্রুত উদ্ধার কাজ শেষ হোক এই প্রার্থনা করি।’’
গত কাল শোনা গিয়েছিল, আজই সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধার করা হবে ৪১ জন শ্রমিকদের। এ দিন সকাল থেকেই তাই মানিকের বাড়িতে ভিড় করেন প্রতিবেশীরা। তাঁরা বলছেন, ‘‘আমরা সবাই মিলে প্রার্থনা করছি, যাতে দ্রুত উদ্ধার কাজ শেষ হয়।’’ উত্তরকাশী জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের কন্ট্রোল রুমের এক কর্তা বলেন, ‘‘সুড়ঙ্গ ছ’মিটার কাটার কাজ বাকি ছিল। কিন্তু মাঝে লোহা ও নেট চলে আসায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। কাজ চলছে। আশা করছি, দ্রুত উদ্ধার কাজ সম্পন্ন হবে। আটক শ্রমিকরা সবাই ভাল আছেন।’’
এ দিন বলরামপুরে মানিকের বাড়িতে যান নাটাবাড়ি বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামী। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বিরোধী দলনেতা ও রাজ্য বিজেপি সভাপতির মাধ্যমে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। আধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্র দিয়ে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে কেন্দ্র। শ্রমিকেরা সুরক্ষিত আছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy