E-Paper

অভয়ারণ্য বাঁচিয়েই উন্নয়নের প্রস্তাব, বৈঠক প্রশাসনের

শিলিগুড়ি শহরের ‘ফুসফুস’ হিসেবে পরিচিত মহানন্দা অভয়ারণ্য। অভিযোগ, অভয়ারণ্যের আশপাশে এবং জঙ্গল-ঘেঁষা এলাকায় কিছু নির্মাণকাজ করা হয়েছে।

নীতেশ বর্মণ

শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:২৫
মহানন্দা অভয়ারণ্য।

মহানন্দা অভয়ারণ্য। —ফাইল চিত্র।

মহানন্দা অভয়ারণ্য ঘিরে ‘ইকো সেনসেটিভ জ়োন’ তৈরিতে তৎপরতা বাড়ল। কেন্দ্রীয় সরকারের খসড়া রিপোর্ট নিয়ে শনিবার শিলিগুড়িতে বৈঠক করে দার্জিলিং জেলা প্রশাসন। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, খসড়া রিপোর্টের ভিত্তিতে মহানন্দা অভয়ারণ্যের চারপাশে কমপক্ষে এক কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকাকে ‘ইকো সেনসেটিভ জ়োন’ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তারই বিস্তারিত আলোচনায় এ দিন পরিবেশ, পর্যটন, চা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সংগঠনের পাশাপাশি প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের
বৈঠক করা হয়।

দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক প্রীতি গোয়েল বলেন, ‘‘খসড়া রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। মহানন্দা অভয়ারণ্যের পাশে এক কিলোমিটারের ভিতরে থাকা কিছু জায়গাকে ইকো সেনসেটিভ জ়োন করার প্রস্তাব রয়েছে। এ নিয়ে অনেকের মতামত
নেওয়া হয়েছে।’’

শিলিগুড়ি শহরের ‘ফুসফুস’ হিসেবে পরিচিত মহানন্দা অভয়ারণ্য। অভিযোগ, অভয়ারণ্যের আশপাশে এবং জঙ্গল-ঘেঁষা এলাকায় কিছু নির্মাণকাজ করা হয়েছে।
কংক্রিটের ভিড়ে ভরেছে অভয়ারণ্যের বিভিন্ন অংশ।

মহানন্দা অভয়ারণ্য ঘিরে পাঁচ কিলোমিটার এলাকা ‘ইকো সেনসেটিভ জ়োনের’ আওতায় নিয়ে আসার নির্দেশ ছিল পরিবেশ আদালতের। সেই দূরত্ব ধরলে শিলিগুড়ি শহরের একাংশও ওই জ়োনের মধ্যে চলে আসত। অনেকের বক্তব্য ছিল, তাতে উন্নয়নের কাজে বাধা পড়বে। ক্ষতির আশঙ্কা ছিল চা শিল্প, চা পর্যটনেও। পরে নয়াদিল্লি থেকে খসড়া বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এখন তা নিয়েই চলছে বিশ্লেষণ।

প্রশাসনিক সূত্রে খবর, এ দিনের বৈঠকে ওই জ়োন তৈরির ফলে চা শিল্প, চা পর্যটনের ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠেছে। পরিবেশ বাঁচিয়েও চা পর্যটন এবং চা শিল্পের উন্নয়নে যাতে বাধা না পড়ে, তা দেখতে বলা হয়েছে। বৈঠকের পরে শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব জানিয়েছেন, ১০ জানুয়ারি এ বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী এবং সংস্থাগুলির সঙ্গে ফের বৈঠক করা হবে।

এ নিয়ে গৌতম বলেন, ‘‘দু’টি প্রস্তাব রয়েছে। মানচিত্র ভাল করে দেখে আলোচনা করা হবে। আইন করে উন্নয়নের গতি থমকে দেওয়ার প্রক্রিয়া অতীতে হত। আমরা তা থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছি।’’

মহানন্দা অভয়ারণ্যের কাছে শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার একাংশ, শালবাড়ি, শালুগাড়া এবং আরও কয়েকটি এলাকা রয়েছে। সে সব জায়গার ইতিমধ্যে বড় হোটেল, রিসর্ট তৈরি করা হয়েছে। চা বাগানের কাছে এবং জঙ্গল-ঘেঁষা কিছু এলাকায় কিছু নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। অভয়ারণ্য থেকে এক কিলোমিটার ধরলেও সেই নির্মাণগুলি ‘ইকো সেনসেটিভ জ়োনের’ মধ্যেই পড়বে। সেগুলির ক্ষেত্রে নিয়মে শিথিলতার বিষয়ে আলোচনা করা হচ্ছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর।

দার্জিলিংয়ের ডিএফও বিশ্বনাথ প্রতাপ বলেন, ‘‘মহানন্দা অভয়ারণ্য ঘিরে কোথাও এক কিলোমিটার, কোথাও তিন-চার কিলোমিটার, কোথাও আরও বেশি দূর পর্যন্ত এলাকা ইকো সেনসেটিভ জ়োনের আওতায় আনতে খসড়া রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তবে এক কিলোমিটারের মধ্যে নতুন করে কোনও নির্মাণকাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না।’’

একটি পর্যটন সংগঠনের কর্তা সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘ইকো সেনসেটিভ জ়োনের মাস্টারপ্ল্যান তৈরির সময় যাতে আমাদের ডাকা হয়, সেই অনুরোধ জানানো হয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mahananda

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy