‘দুয়ারে’ আরও একটি পঞ্চায়েত ভোট। বৃহস্পতিবার সে ভোটের ঢাকে কাঠি পড়তেই ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের স্মৃতি ফের টাটকা হল গৌড়বঙ্গের তিন জেলা—মালদহ ও দুই দিনাজপুরে। কারণ, সে বছর পঞ্চায়েত ভোটের দিন কেউ হারিয়েছিলেন ছেলেকে, কেউ আবার হারিয়েছিলেন বাবা কিংবা স্বামীকে। এ বার পঞ্চায়েত ভোটে সে ছবির বদল চায় তিন জেলার ‘স্বজনহারা’ পরিবারগুলি।
২০১৮ সালে ১৪ মে পঞ্চায়েত ভোট হয়েছিল। আর ভোট গনণা হয়েছিল ১৭ মে। এ বার ৮ জুলাই ভোট এবং ১১ জুলাই গণনার দিন ঘোষণা করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এ দিন ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হতেই চোখের জল ফেলছেন উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখরের সেমিলা খাতুন, দেবীতলার রিয়া সাহারা।
গত বার পঞ্চায়েত ভোটের লাইনে সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে, দেড় মাস হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরে, মৃত্যু হয় সেমিলা খাতুনের ছেলে কলিমুদ্দিন শেখের। সেমিলা বলেন, “পঞ্চায়েত ভোটের দিনই আমার কোল খালি হয়ে গিয়েছিল। অন্যদের সংঘর্ষের মাঝে পড়ে আমার ছেলেটা মারা গিয়েছিল। আবার পঞ্চায়েত ভোট হচ্ছে। চাই না, আমার মতো আর কোনও মায়ের কোল খালি হোক।” পঞ্চায়েত ভোটের দিনই রিয়া হারিয়েছিলেন তাঁর বাবা অমৃতলাল সাহাকে। তিনি মাড়াইকুড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের দেবীতলা বুথের তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন। ভোটের দিন আততায়ীদের গুলিতে তাঁর মৃত্যু হয়। এ দিন ভোট ঘোষণা হয়েছে জেনে রিয়া বলেন, ‘‘ভোটকে কেন্দ্র করে বাবার মতো যাতে আর কাউকে খুন হতে না হয়। পুলিশ ও প্রশাসনের সে দিকে নজরদেওয়া উচিত।"
ভোটের দিনই দক্ষিণ দিনাজপুরে তপনের দ্বীপখণ্ডা গ্রামে সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছিল তৃণমূল নেতা জিল্লুর রহমানের। তাঁকে বিরোধীরা পিটিয়ে খুন করে বলে অভিযোগ উঠেছিল। তাঁর ভাই মজিবর রহমানের আক্ষেপ, ‘‘আরও একটি পঞ্চায়েত ভোট চলে এল। অথচ, দাদার খুনিদের এখনও শাস্তি হল না!’’ অভিযোগ, মালদহের রতুয়ায় আগ্নেয়াস্ত্র হাতে ব্যালট বাক্স লুটও করা হয়েছিল।
এ বার ভোটে তিন জেলায় রাজনৈতিক ছবিটা বদলেছে। গত পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের পর্যবেক্ষক ছিলেন এখনকার রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর নেতৃত্বেই মালদহ ও উত্তর দিনাজপুরে পঞ্চায়েত ভোট হয়েছিল। তিন জেলাতেই বিজেপির সাংসদ, বিধায়কের সংখ্যা বেড়েছে। শক্তি বেড়েছে তৃণমূলেরও।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনীর মাধ্যমে পঞ্চায়েত ভোট করাতে হবে। নচেৎ, প্রহসনের ভোট হবে।’’ গত বারের বিজেপি আর এখনকার বিজেপির মধ্যে পার্থক্য আছে বলে দাবি করেন তিনি। তাঁর মন্তব্য, “গত বারে আমাদের সাংসদ, বিধায়ক ছিলেন না। এ বারে মনোনয়ন পত্র দাখিল থেকে শুরু করে ভোটের দিন সামনে থেকে আমাদের সাংসদ, বিধায়কেরা মাঠে থাকবেন। তৃণমূলের গুন্ডামি বরদাস্ত করা হবে না।”
রাজ্যের মন্ত্রী তৃণমূলের সাবিনা ইয়াসমিনের দাবি, “দলের বুথভিত্তিক সংগঠন রয়েছে। পঞ্চায়েত ভোট বুথের নেতা, কর্মীরাই করেন। পর্যবেক্ষক কে ছিলেন, এখন কে নেই—তাতে কিছু যায়-আসে না। এ বারও পঞ্চায়েত ভোটে দল ভাল ফল করবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy