অঙ্কিতাকে ঠান্ডামাথায় খুন? গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
স্কুলে যাওয়ার জন্য স্নান-খাওয়া সেরে তৈরি দিদি। তৈরি হচ্ছে বোনও। আচমকা দিদির উপর আততায়ীর হানা। ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলায় একের পর এক কোপ হত্যাকারীর। বুধবার সকালে ফালাকাটার খলিসামারি এলাকায় দশম শ্রেণির ছাত্রী অঙ্কিতা শীলকে এমন ভাবে খুন হতে দেখে ফেলে তার ছোট বোন নিতু। সেই বীভৎস দৃশ্যের ঘোর এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি সে। পড়াশোনায় মেধাবী হিসাবে সুনাম ছিল অঙ্কিতার। তার এমন পরিণতি ভেবে উঠতে পারছেন না শীল পরিবারের সদস্য বা স্থানীয় বাসিন্দারা।
বুধবারটা কখনও ভুলতে পারবে না খলিসামারি। ঘড়ির কাঁটা তখন সকাল ১০ টার দিকে এগোচ্ছে। অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী নীতু বলছে, ‘‘এ দিন সকালে টিউশন থেকে বাড়ি ফিরেছিল দিদি। আমাকে জিজ্ঞাসা করে, স্কুল যাবি? এর পর সে নিজে স্নান করে তৈরি হয়ে যায় স্কুল যাওয়ার জন্য। আচমকা ওর চিৎকার শুনতে পাই। দৌড়ে গিয়ে দেখতে পাই, মাটিতে পড়ে রয়েছে অঙ্কিতা। তার মুখ গামছা গিয়ে বাঁধা। আর সামনে স্বপন বিশ্বাস নামে ওই ছেলেটা দাঁড়িয়ে ধারালো দা নিয়ে। আমার সামনেই ও দিদির ঘাড়ে পাঁচ-ছ’টা কোপ দেয়। আমাকেও খুন করে ফেলবে বলে। আমার দিকে ওই দা’টা ছুড়েছিল। কিন্তু আমার গায়ে লাগেনি। এর পর ওখান থেকে আমি ভয়ে পালিয়ে যাই। তার পর পিছন থেকে দেখতে পাই ও সাবান মেখে স্নান করল। দা-টা ধুয়ে ফেলল।’’
অঙ্কিতার বাবা-মা দু’জনেই দিনমজুর। দুই বোন এবং এক ভাই নিয়ে মোট পাঁচ জনের সংসার। কোনওক্রমে দিন চলে পরিবারের। নিহত ছাত্রীর বাবা গোপাল শীল বলছেন, ‘‘স্বপন আমার মেয়েকে সব সময় উত্ত্যক্ত করত। ওকে অশ্লীল ইঙ্গিতও করেছে কয়েক বার। ও এ সব এড়িয়ে যেত। আমাকে কয়েক বার বলেছিল। আমি স্বপনের বাবা-মাকে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। তাতে মাসখানেক ও কিছুটা শান্ত ছিল। আজ আমার প্রতিবেশীরা খবর দেয় যে ও অঙ্কিতাকে খুন করেছে। আমি বাড়িতে এসে দেখি ও রক্তাক্ত অবস্থায় উঠোনে পড়ে রয়েছে। কোথা থেকে কী হয়ে গেল বুঝতে পারছি না।’’
অঙ্কিতা বরাবরই পড়াশোনায় ভাল ছিল বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা। অঙ্কিতা যে স্কুলের ছাত্রী সেই পারেঙ্গার পাড় শিশুশিক্ষা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রবীর রায়চৌধুরী বলছেন, ‘‘স্কুল স্বাভাবিক থাকাকালীন অঙ্কিতা নিয়মিত স্কুলে যেত। এমনকি করোনাকালেও নিয়মিত অনলাইন ক্লাস করত। ফাঁকি দেওয়া ওর অভ্যাস ছিল না।’’ এ হেন অঙ্কিতার হত্যাকাণ্ডে ফুঁসে উঠেছে খলিসামারি। অভিযুক্ত স্বপনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায় গোটা গ্রাম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy