Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

চিকিৎসকের বাড়ি ভাঙচুর সামসিতে

চিকিত্সার অভাবে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ তুলে প্রতিবেশী চিকিত্সকের বাড়িতে হামলা চালাল জনতা। বৃহস্পতিবার রাতে মালদহের সামসির এই ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। এক ব্যবসায়ী অসুস্থ হয়ে পড়ার পরে ডাকাডাকি করলেও পড়শি ওই চিকিত্সক বাড়ি থেকে বের হননি বলে অভিযোগ।

চিকিৎসকের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

চিকিৎসকের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৬ ০৩:১৩
Share: Save:

চিকিত্সার অভাবে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ তুলে প্রতিবেশী চিকিত্সকের বাড়িতে হামলা চালাল জনতা।

বৃহস্পতিবার রাতে মালদহের সামসির এই ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। এক ব্যবসায়ী অসুস্থ হয়ে পড়ার পরে ডাকাডাকি করলেও পড়শি ওই চিকিত্সক বাড়ি থেকে বের হননি বলে অভিযোগ। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। তারপরেই জনতার ক্ষোভ চরমে ওঠে।

মৃত ব্যবসায়ী নাসির মিয়া-র (৪১) বাড়ি সামসি নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি লাগোয়া চুড়িপট্টি এলাকায়। ওই এলাকাতেই থাকেন চিকিত্সক সৌরেন মিশ্র। বাড়ির একতলাতেই রয়েছে তাঁর চেম্বার। সামসি ও রতুয়া হাসপাতালের প্রাক্তন চিকিত্সক সৌরেনবাবু স্বেচ্ছাবসর নিয়ে এখন প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন। নাসির মিয়ার হাটে হাটে হোটলের ব্যবসা করতেন। বৃহস্পতিবার ছিল সামসি হাট। রাতে হোটেল থেকে ফিরে খাওয়া-দাওয়ার পর বুকে ব্যথা শুরু হয় নাসিরের। সঙ্গে সঙ্গেই ছেলে সেলিম শেখ বাবাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির উল্টোদিকে সৌরেনবাবুর বাড়িতে ছুটে যান। সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন প্রতিবেশীও। ডাকাডাকির পরেও চিকিত্সকের কোনও সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ। দীর্ঘক্ষণ বাদে তার স্ত্রী দোতালা থেকে চিকিত্সক বাড়িতে নেই জানিয়ে তাদের হাসপাতালে যেতে বলেন। কিন্তু সামসি হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই নাসিরের মৃত্যু হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতে চিকিত্সককে সামসিতেই বাজার করতে দেখা গিয়েছে। এরপরেই ক্ষোভ চরমে পৌঁছয় জনতার। তিনি বাড়িতে থাকলেও মিথ্যে বলা হয়েছে এই অভিযোগ তুলে তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই সময় বাসিন্দাদের একাংশ বাড়িতে ভাঙচুরও চালান বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে ১০০ মিটার দূরের সামসি ফাঁড়ি থেকে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। এ দিন সকালেও ফের চিকিত্সকের বাড়িতে চড়াও হন বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁরা বাড়ির মূল ফটক ও চেম্বারে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। ফিরিয়ে দেওয়া হয় রোগীদেরও। ফের পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। চাঁচলের এসডিপিও রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাতের পর সকালেও চিকিত্সকের বাড়িতে গন্ডগোলের খবর পেয়ে পুলিশ গিয়েছিল। পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দু’তরফেই কোথাও ভুল বোঝাবুঝির জেরেই সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। সমস্যা যাতে মিটে যায় তা দেখছি।’’

সৌরেনবাবুর দাবি করেছেন, ‘‘রাতে বেসরকারি নার্সিংহোম আয়োজিত একটি সেমিনারে যোগ দিতে মালদহে গিয়েছিলাম। সেকথা জানিয়ে আমার স্ত্রী ওদের হাসপাতালে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু ভুল বুঝে ওরা অযথা গন্ডগোল পান। বাড়ির ফোন পেয়েই রাতে আর বাড়ি ফিরিনি। বাড়িতে থাকলে কোনও রোগীকে না দেখে ফিরিয়ে দেব, চিকিত্সক হয়ে এমনটা করতে পারি না।’’ যদিও মৃতের ছেলে সেলিম শেখের অভিযোগ, ‘‘হাসপাতাল দূরে বলে আগে চিকিত্সকের বাড়িতে বাবাকে নিয়ে গিয়েছিলাম। উনি দেখলে হয়ত বাবাকে বাঁচানো যেত। কিন্তু বাড়িতে থাকলেও উনি বাবাকে দেখেননি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Doctor vandalized
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE