বেলা ১২টা। মালদহের জেলাশাসক শরদ দ্বিবেদী দাঁড়িয়ে গঙ্গাপাড়ের উত্তর ঢেলফোঁড়া গ্রামে। স্থানীয় বাসিন্দা শিবচরণ মণ্ডলের বাড়ির দাওয়ায় তখন জেলাশাসকের সামনে একশোর বেশি মহিলা। আচমকা জেলাশাসক মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে বললেন, যাঁদের বাড়িতে শৌচাগার রয়েছে তাঁরা ডান দিকে দাঁড়িয়ে যান, আর যাঁদের নেই বা বাঁ দিকে। উপস্থিত মহিলারা তখন চাইছেন ইতিউতি। অবশেষে জেলাশাসকের নির্দেশ মতো আলাদা আলাদা দাঁড়ালেন। দেখা গেল ডান দিকে দাঁড়ালেন জনা পঁচিশেক, আর বাঁদিকে ৭৫ জনেরও বেশি। তখন জেলাশাসক বললেন, ‘‘আমরা জানি এই এলাকার বেশিরভাগ বাড়িতেই শৌচাগার নেই। কিন্তু এটা চলতে পারে না।’’ গ্রামবাসীদের জানালেন, তাঁরা স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার তৈরি করতে এসেছেন। বলেই শিবচরণবাবুর বাড়িই পিছনে গিয়ে পাকা শৌচাগার তৈরির কাজের সূচনাও করলেন খোদ জেলাশাসক।
এ দিন জেলার গঙ্গা তীরবর্তী ১৯টি পঞ্চায়েত এলাকায় স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার তৈরির কাজের সূচনার তদারকি করলেন তিন অতিরিক্ত জেলাশাসক-সহ জেলার ১৯ জন আধিকারিক। ছিলেন সংশ্লিষ্ট ব্লকের বিডিও থেকে শুরু করে গ্রাম প্রধানরাও। নির্মল গ্রামের লক্ষ্যে গ্রামে গ্রামে হল মিছিল, সভা। জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত, নির্মল গ্রামের লক্ষ্যে আগামী ১৫ অগস্টের মধ্যে ওই ১৯টি পঞ্চায়েতে ৩২ হাজারেরও বেশি বাড়িতে শৌচাগার তৈরি করা হবে। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প ও নির্মল বাংলা মিশনের যৌথ অর্থানুকূল্যে সেগুলি তৈরি হবে। জানা গিয়েছে, ওই লক্ষ্যপূরণ ও সচেতনতায় সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতগুলিতে এক দিনের ফুটবল প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হচ্ছে। খোলা মাঠে মলত্যাগ বন্ধ করতে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সকাল-সন্ধ্যা অভিযান শুরু হচ্ছে ১৮ তারিখ থেকে। মালদহের ৪টি ব্লকে গঙ্গা তীরবর্তী পঞ্চায়েতের সংখ্যা ২২টি। এর মধ্যে বীরনগর ২, নাজিরপুর ও রাজনগর এই তিনটি নির্মল গ্রাম তথা প্রকাশ্যে মলত্যাগ বর্জিত এলাকা হিসেবে ঘোষিত হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy