শুদ্ধকরণ: জঙ্গলে চলছে স্প্রে করার কাজ। জলদাপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র
পরপর গন্ডার মৃত্যুর জেরে এবার জলদাপাড়ার শিসমারা বিট এলাকা জীবাণুমুক্ত করার কাজ শুরু করল বন দফতর। রবিবার থেকে বনকর্মীদের একটি বিশেষ দলের তত্ত্বাবধানে জঙ্গল জুড়ে জীবাণুনাশক স্প্রে দেওয়া শুরু হয়েছে।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আরও অন্তত দু’দিন শিসমারা বিটের বিস্তীর্ণ এলাকায় এই কাজ চলবে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনে স্প্রে করার কাজ আরও কয়েকদিন বাড়ানোও হতে পারে। তার আগে সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবেন বনকর্তারা। জলদাপাড়া বনাঞ্চল যে বনপ্রাণ বিভাগের আওতাধীন, সেই কোচবিহারের ডিএফও কুমার বিমল বলেন, “কোনও সংক্রামক জীবাণু থেকে থাকলে তা যাতে নষ্ট করা যায়, সেই কথা মাথায় রেখেই ওই স্প্রে শুরু করা হয়েছে। শিসমারা বিটের নির্দিষ্ট এলাকা চিহ্নিত করেই প্রাথমিক পর্বের স্প্রে-র কাজ হবে।”
দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, বনাঞ্চলের এলাকা জীবাণুমুক্ত করতে স্প্রে-র কাজ সচরাচর করা হয় না। কোনও সংক্রামক জীবাণুর আশঙ্কা থাকলেই ওই কাজ করা হয়। শিসমারা বিটে গত কয়েকদিনে একাধিক গন্ডারের মৃত্যুর ঘটনার কারণ স্পষ্ট না হলেও নেপথ্যে সংক্রামক কোনও জীবাণু রয়েছে, এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।
বন দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, মৃত গন্ডারের দেহাংশের নমুনা পরীক্ষা করে অ্যানথ্রাক্সের রিপোর্টও ‘নেগেটিভ’ মিলেছে। তবে অন্য কোনও জীবাণুর আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে সতর্কতামূলক পদক্ষেপে কোন খামতি রাখা হচ্ছে না। স্প্রে করা হলে অ্যানথ্রাক্স, ফুট অ্যান্ড মাউথের মতো অন্য নানা ধরনের রোগবাহী জীবাণু নিষ্ক্রিয় হবে।
দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, কুনকি হাতির পিঠে চেপে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা শিসমারা বিটে গিয়ে ওই কাজে নেমেছেন। বিশেষ ভাবে তৈরি জীবাণুনাশক ওই স্প্রে-র তরলে কিছু অংশ ফর্মালিনও থাকছে। তবে রবিবার নতুন করে জলদাপাড়ায় নতুন করে কোনও অসুস্থ বা মৃত গন্ডারের সন্ধান মেলেনি। ডিএফও কুমার বিমল বলেন, “নতুন করে কোনও খারাপ খবর আসেনি। এটা সত্যি ভাল ব্যাপার। তবে সতর্কতায় খামতি রাখছি না।”
দফতরের তরফে জঙ্গল ‘ভাইরাস ফ্রি’ করার ওই উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তার কথা বলছেন পরিবেশপ্রেমীদের অনেকেই। ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, “জঙ্গলে গবাদি পশুর বিচরণের জন্য নানা ধরণের সংক্রামক রোগের আশঙ্কা থাকে। তাই জীবাণুমুক্ত করতে স্প্রে’র ভাবনা ইতিবাচক। তবে জঙ্গল লাগোয়া এলাকার গবাদি পশুর টিকাকরণে উদ্যোগ চাই।”
বন দফতর জানিয়েছে, ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়ার বন্দুকের মুখে ‘প্রতিষেধক’ ভরে গন্ডারদের শরীরে তা দেওয়ার কাজও হচ্ছে। ডিএফও জানান, ইতিমধ্যে ১০টি গন্ডারকে ওই প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে। শিসমারা বিটে বিশেষ নজর রয়েছে। দফতর সূত্রে খবর,কয়েকটি কুনকি হাতিকেও প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy